বিশ্বকাপ জিতিয়ে মরগানের ঋণশোধ করতে চান রশিদ
২৭ বছর পর বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলতে চলেছে ইংল্যান্ড। এই সাফল্যের বীজ প্রথম পোঁতা হয়েছিল চার বছর আগে বিশ্বকাপে লজ্জাজনক পারফম্যান্সের পর। সেটা হয়তো সত্যি, কিন্তু সেই যাত্রাপথে তারা প্রথম ধাপ ফেলেছিল বিশ্বকাপের কয়েক মাস পর, এজবাস্টনে। সেইবারও প্রতিপক্ষ ছিল এই নিউজিল্যান্ড।
জস বাটলার সেদিন ১২৯ করেছিলেন আর জো রুট ১০৪। ওয়ান-ডে ক্রিকেটে ইংল্যান্ডের রান সেই প্রথম ৪০০ ছাড়ায়। ব্যাট হাতে ৬৯ করার পর চারটি উইকেটও তুলে নেন রশিদ। একটা চমৎকার গুগলিতে আউট করেন কেন উইলিয়মসনকে। আগামীকাল রোববার তেমনই কিছু করতে মুখিয়ে থাকবেন রশিদ।
২০০৯ সালে প্রথম ওয়ানডে খেললেও তেমন সুবিধা করে উঠতে পারেননি রশিদ। ২০১১ বিশ্বকাপ দলে থাকা সত্ত্বেও একটাও ম্যাচ খেলেননি তিনি। আর ২০১৫ বিশ্বকাপে তো দলেই ছিলেন না তিনি। কিন্তু তারপর থেকেই অধিনায়ক মরগান বাড়তি আস্থা দেখাতে শুরু করেন তাঁর ওপর। গত চার বছরে ৯৮টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছে ইংল্যান্ড। এর মধ্যে ৯৩ ম্যাচে দলে ছিলেন। এত ম্যাচ কেউই খেলেননি – মরগানও না!
চলতি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালের আগে অবধি মাত্র আট উইকেট পেয়েছিলেন রশিদ। তাঁর গড় ছিল ৫৪। কিন্তু মরগান ভরসা হারাননি। শেষ অবধি সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে তিন উইকেট নিয়ে ইংল্যান্ডকে জিততে সাহায্য করেন তিনি।
আর এ সম্পর্কে রশিদ বলেন, ‘প্রথমদিন থেকে দেখেছি আমার ওপর ভরসা রাখছে মরগান। ভালো না খেললেও দেখি ও বিশ্বাস করে আমি ভালো খেলব। এত ভালো অধিনায়ক আমি কোনোদিন পাইনি। আমার খেলার ধরন ওর মুখস্ত। চার বছর তো খেলছি একসঙ্গে, উত্থানপতন সবই হয়েছে এর মধ্যে। আমি কী কী করতে পারি ও খুব ভালো বোঝে। তাই ও যদি কিছু করতে বলে, আমি সেটা করি। ওর সিদ্ধান্তে আমার পূর্ণ আস্থা আছে।’
ইংল্যান্ডের হয়ে রশিদের আগে মাত্র তিনজন লেগস্পিনার ওয়ানডে খেলেছেন, স্কট বর্থউইক, জো ডেনলি, আর ইয়ান সল্স্বেরি । এঁদের প্রত্যেকের থেকেই বেশি উইকেট নিয়েছেন রশিদ।
এ সম্পর্কে রশিদ বলেন, ‘কাঁধের ব্যথার জন্য আজকাল গুগলিটা তেমন দেওয়া হয়ে ওঠে না। আগে অসুবিধে হতো না, কিন্তু এখন গুগলির সময় হাতটা খুব একটা ওপরে ওঠে না, তাই তেমন ভালো হয়ও না। তবে কখনো কখনো ব্যথা সত্ত্বেও দলের জন্য ওই বাড়তি ঝুঁকিটা নিতেই হয়।’
এজবাস্টনের সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডের স্পিনার রশিদ ও পেসার জফরা আর্চারের ছবিটা অনেকের মনেই গাঁথা হয়ে থাকবে। দুজনে মিলে পাঁচ উইকেট ভাগ করে নিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে উড়িয়ে দিয়ে হাসতে হাসতে একসঙ্গে মাঠ ছাড়েন দুজন।
নিজের সাফল্য নিয়ে রশিদ বলেন, ‘উইকেট নিয়ে দলকে জেতাতে পারলে মনটা অন্যরকম হয়ে যায়। এমনও দিন গেছে যে এর থেকে অনেক ভালো বল করেও আমি উইকেট পাইনি। তাই উইকেট যেদিন জোটে সেদিন সত্যিই খুব ভালো লাগে। আমার উদ্দেশ্য হলো প্রাণপণ চেষ্টা করতে থাকা, যতটা সম্ভব কঠিন পরিশ্রম করা, আত্মবিশ্বাস ধরে রাখা।’