তামিম, শুনছেন? এটা কিন্তু লর্ডস!
দরকার ছিল ৩ রান। পেসার ব্রেসনানের বলে সিঙ্গেল নিয়েই খেলতে পারতেন। তা করলেন না। মিডঅনের ওপর দিয়ে তুলে মারলেন। ছয় হলো না, হলো চার। এতেই এলো সেঞ্চুরি। প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে লর্ডসে সেঞ্চুরি করলেন তামিম ইকবাল খান। উদযাপনটাও ছিল দেখার মতো।
সেই ২০১০ সাল। লর্ডসের ওই টেস্টে বাংলাদেশ অ্যান্ড্রু স্ট্রসের ইংল্যান্ডের কাছে ৮ উইকেটে হেরেছে বটে, অপ্রাপ্তি যে ছিল না তা নয়। তামিম শতক পেয়েছিলেন। ইমরুল কায়েস ৭৫ ও জুনায়েদ সিদ্দিকী ৭৪ রান করেছিলেন। ওই শতক দিয়েই তামিমের নামটি উঠে যায় লর্ডসের অনার্স বোর্ডে।
সেঞ্চুরির পর দৌড়ের মধ্যেই হেলমেট খোলেন তামিম। ব্যাট ও হেলমেট মাঠে রাখেন। তারপর পিঠের দিকে ইঙ্গিত করে দেখান যে নামটা অনার্স বোর্ডে তুলতে হবে।
১০০ বলে ১০৩ করে আউট হন তিনি। ১৫টি ছিল চারের মার আর দুটি ছিল ছয়।
২০১৯ সালে বিশ্বকাপে নিজেদের শেষ ম্যাচে আজ মাঠে নামছে বাংলাদেশ। প্রতিপক্ষ পাকিস্তান। আর সেই লর্ডসের মাঠ। লর্ডস বললেই বাংলাদেশের অন্তত একটা প্রজন্ম বোঝে তামিমের সেঞ্চুরি।
যে তামিমকে নিয়ে এত কথা, সেই তামিম বিশ্বকাপে নিজেকে রাঙাতে পারলেন কোথায়। এখন পর্যন্ত ব্যর্থতার মিছিলে এগিয়ে যাচ্ছেন তামিম। খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না ওপেনার তামিমকে, আগ্রাসী তামিমকে, পরিণত তামিমকে।
চলতি বিশ্বকাপে শেষ ম্যাচের আগে সাতটি ওয়ানডে খেলেছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে তামিম মাত্র একটিতে অর্ধশতক করেছেন। ভাবা যায়? শতক নেই। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ১৬, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ২৪, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১৯, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৬২, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৪৮, আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৩৬ এবং ভারতের বিপক্ষে করেছেন ২২ রান। অথচ এসব ম্যাচেই সাকিব, মুশফিক, লিটন দাস নিজেদের প্রমাণ করেছেন।
ভারতের বিপক্ষে বাঁচামরার লড়াইয়ে তামিম হয়ে গেছেন ভিলেন। রোহিত শর্মা মাত্র ৯ রানে ক্যাচ দেন, যা ধরতে পারেননি তামিম। আর এতেই সর্বনাশ হলো বাংলাদেশের। সেই রোহিত শর্মা ৯২ বলে ১০৪ রান করেন। ভারত থামে ৩১৪ রানে। লড়াইয়ে সেখানেই পেছনে পড়ে যান সাকিবরা। আর ফেরা হয়নি। সেমিফাইনালে খেলার স্বপ্নটাও সেখানেই শেষ।
তবে শেষ ম্যাচটা আছে। হোক না সেটা আনুষ্ঠানিকতা। দলটা তো পাকিস্তান। ওদের কাছে হারা কেন? যে যাই বলুক, বিশ্বকাপে যাওয়া বাংলাদেশের দলগুলোর মধ্যে এটাই সেরা দল, এতে কোনো সন্দেহ নেই। আর এ দলটাই সবচেয়ে সেরা খেলাটা খেলেছে, এটাও ঠিক। প্রত্যাশা বেড়েছে ওই ভালো খেলার কারণেই। তামিম ওভাবে নিভে থাকবেন, এটা কে জানত? এটা তো লর্ডস। তামিম তো জানেন। হোক না এটা ওয়ানডে। গর্জ উঠুক না তামিমের ব্যাট।