সাকিব আছেন বলেই আস্থা পাওয়া যায়
সাকিব আল হাসান। শুধু বাংলাদেশের বললে ভুল হবে, পুরো ক্রিকেট বিশ্বের অন্যতম সেরা তারকা তিনি। দলের প্রয়োজনে কখনো ব্যাট হাতে, আবার কখনো বল হাতে বুক চিতিয়ে লড়াই করে যান তিনি। তাঁর মতো একজন ক্রিকেটার যে কোনো দলে থাকা মানে সতীর্থরা পান প্রেরণা।
এবারের বিশ্বকাপের কথাই ধরা যাক। বিশ্বকাপের আগে ব্যাপক সামালোচিত হয়েছিলেন তিনি। বাংলাদেশের বিশ্বকাপ দলের ফটোসেশনে অনুপস্থিত থাকার কারণে। নাখোশ হয়েছিলেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসানও। বিসিবি সভাপতি তখন বলেছিলেন, ‘এটা দুঃখজনক, আর কী বলব। যেহেতু টিম ফটোসেশন ছিল। আমি এসে জিজ্ঞেস করেছিলাম সাকিবের কথা, পরে ফোন করেছিলাম ওকে। জিজ্ঞেস করেছিলাম, সে কোথায়। ও দেশে যে এসেছে, আমি সেটা জানিও না। পেপারে পড়ে দেখেছি।’
বিসিবি সভাপতির কথায় বোঝা যাচ্ছে, তিনি কতটা ক্ষুব্দ হয়েছিলেন। অন্যরাও হয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা হয়ছিল তাঁকে নিয়ে।
বিশ্বপের মঞ্চে এসে সেই সাকিব এখন সবার প্রশংসা কুড়াচ্ছেন। চলমান বিশ্বকাপে দারুণ ফর্মে রয়েছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। এখন পর্যন্ত খেলা তিন ম্যাচের দুটিতে ফিফটি এবং একটিতে সেঞ্চুরি করেছেন তিনি।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে খেলেছেন ৭৫ রানের চমৎকার একটি ইনিংস। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচে করেন ৬৪ রান। আর তৃতীয় ম্যাচে আরো উজ্জ্বলতা ছড়ান। খেলেন ১১৯ বলে ১২১ রানের দারুণ একটি ইনিংস।
বিশ্বকাপে এটি সাকিবের প্রথম সেঞ্চুরি। অবশ্য বাংলাদেশের পক্ষে তৃতীয় বিশ্বকাপ শতক। গত বিশ্বকাপে বাংলাদেশের পক্ষে দুটি সেঞ্চুরি করেছিলেন মাহমুদউল্লাহ, ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। এর আগে চারটি বিশ্বকাপে শতকের দেখা পায়নি কোনো বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান।
চলমান বিশ্বকাপে এসে বাংলাদেশের পক্ষে তৃতীয় সেঞ্চুরি করলেন সাকিব। কার্ডিফে স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডাউনে খেলতে নেমে ৯৫ বলে সেঞ্চুরি পূর্ণ করলেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। বিশ্বকাপে এটি বাংলাদেশের দ্রুততম সেঞ্চুরি।
সেমিফাইনালের আগে বাংলাদেশ আরো ছয়টি ম্যাচ খেলবে। সবকিছু ঠিকভাবে হলে এবারের বিশ্বকাপে সাকিব যে আরো সাফল্য পাবেন সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না।
এদিকে চলমান বিশ্বকাপে সাকিবের ঝুলিতে জমা পড়েছে বেশ কয়েকটি রেকর্ড। গত রোববার বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচে গড়েছিলেন দারুণ রেকর্ডও, ওয়ানডেতে দ্রুত পাঁচ হাজার রান ও ২৫০ উইকেট। ১৯৯ ম্যাচে তিনি এই কীর্তি গড়েছিলেন।
দুদিন বাদে গত বুধবার নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে আরেকটি কীর্তি গড়েন সাকিব। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ২০০তম ম্যাচ খেলেন তিনি।
এর আগে বাংলাদেশের পক্ষে দুজন ২০০ বা তার চেয়ে বেশি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছেন। মাশরাফি বিন মুর্তজা ও মুশফিকুর রহিম। মাশরাফি ২১২ এবং মুশফিকুর রহিম ২০৮তম ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছেন আজ।
এ ছাড়া তামিম ইকবাল ১৯৬ ও মাহমুদউল্লাহ ১৭৮টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলন বাংলাদেশ দলের হয়ে। আর সাকিব খেলছেন ২০১তম ম্যাচ।