ভারতীয় বোর্ডের ওপর নাখোশ শচীন!
২০১৫ সালে ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড (বিসিসিআই) বিশেষ একটি উপদেষ্টা কমিটি গঠন করে। বিশেষ এই কমিটির সদস্যপদে রাখা হয় কিংবদন্তি ব্যাটিং তারকা শচীন টেন্ডুলকারকে। উপদেষ্টা কমিটিতে শচীনের সঙ্গে সদস্য হিসেবে আরো রাখা হয় দেশটির সাবেক অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলী ও ভিভিএস লক্ষ্মণকেও। দেশটির সাবেক এই তিন ক্রিকেটারই ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) আলাদা তিনটি ফ্র্যাঞ্চাইজি দলের সঙ্গে যুক্ত। আর ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর সঙ্গে যুক্ত থাকা নিয়ে তিন ‘হাই প্রোফাইল’ উপদেষ্টার বিরুদ্ধে স্বার্থের সংঘাতের অভিযোগ তোলে ক্রিকেট বোর্ড। বোর্ডের তোলা এমন অভিযোগে বেজায় নাখোশ হয়েছেন টেন্ডুলকার।
স্বার্থের সংঘাতের এই অভিযোগ শুধু শচীনের বিরুদ্ধেই ওঠেনি, একই অভিযোগ উঠেছে ভিভিএস লক্ষ্মণ আর সৌরভ গাঙ্গুলীর বিপক্ষেও। বোর্ডের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকা সত্ত্বেও তিন কিংবদন্তি কেন আইপিএলের ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর সঙ্গে জড়িত, এ নিয়েই যত অভিযোগ বোর্ডের তরফ থেকে। তবে অভিযোগের জবাবে বিসিসিআইর কর্মকর্তাকে ১৩টি পয়েন্টে চাঁছাছোলা জবাব দিয়েছেন সর্বকালের অন্যতম সেরা ক্রিকেট তারকা শচীন। জবাব দিয়েছেন লক্ষ্মণ ও গাঙ্গুলীও।
ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের নৈতিকতা বিষয়ক এক কর্মকর্তাকে লেখা জবাবে টেন্ডুলকার জানান, ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডে সৌরভ ও লক্ষ্মণসহ বিশেষ একটি উপদেষ্টা কমিটির সদস্য তিনি। কিন্তু এই উপদেষ্টা কমিটিতে তাঁর ভূমিকা কী, সেটাই আজ পর্যন্ত জানেন না। ক্ষুব্ধ টেন্ডুলকার বলেন, ২০১২ সালে তিনি যখন ক্রিকেট থেকে অবসর নেন তার পর থেকেই আইপিএলের ফ্র্যাঞ্চাইজি মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের আইকন হিসেবে কাজ করছেন তিনি। উপদেষ্টা কমিটিতে দায়িত্ব সময় বোর্ডের এই ব্যাপারটা অজানা ছিল না। আর দায়িত্ব দেওয়ার সময় বিসিসিআইর তরফ থেকে এ বিষয়ে নেতিবাচক কিছু বলাও হয়নি। অর্থাৎ, আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজির সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়ে বোর্ডের পক্ষ থেকে তখন নিষেধ করা হয়নি।
বোর্ডকে লেখা চিঠিতে সাম্প্রতিক অভিযোগ নিয়ে আক্ষেপ করেন টেন্ডুলকার। তিনি জানান, খেলোয়াড়ি জীবনে প্রায় দুই যুগের অভিজ্ঞতা থেকে ভারতীয় ক্রিকেট এবং বোর্ডকে সাহায্য করার অভিপ্রায় নিয়েই বিশেষ এই উপদেষ্টা কমিটিতে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু এতদিন পর বোর্ডের পক্ষ থেকে স্বার্থের সংঘাত নিয়ে অভিযোগ উত্থাপিত হওয়ায় ক্ষুব্ধ এবং অসন্তুষ্ট তিনি।
উল্লেখ্য, জগমোহন ডালমিয়া বিসিসিআইর সভাপতি হিসেবে পুনরায় দায়িত্বে আসার পর বিশেষ এই কমিটি করার কথা প্রথম চিন্তা করেন। ২০১৫ সালের জুনে অনুরাগ ঠাকুরকে সেক্রেটারি করে এই কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি গঠনের উদ্দেশ্য ছিল বিদেশের মাটিতে ভারতীয় দলের পারফরম্যান্স উন্নত করার পরামর্শ প্রদান, অনূর্ধ্ব-১৯ এবং ভারতীয় ‘এ’ দলকে ঠিকঠাক পরিচালনা করে মূল দলে খেলোয়াড় জোগানের পথ চলমান রাখা। এ ছাড়া স্পিন বোলারদের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং ক্রিকেটের আলাদা তিনটি ফরম্যাটের দলে ভারসাম্য আনার কাজটা তদারকি করার পরিকল্পনাও ছিল উপদেষ্টা কমিটি গঠনের অন্যতম উদ্দেশ্য।