অনবদ্য স্বীকৃতি পেলেন ইনজামাম
শারীরিকভাবে কিছুটা দশাসই ছিলেন। উইকেটে ব্যাট চালাতে আর রানের জন্য দৌঁড়াতে যেন রাজ্যের আলসেমি ভর করত তাঁর। তবে ইনজামাম উল হককে ক্রিকেট ইতিহাস মনে রাখবে ১৯৯২ বিশ্বকাপের অসাধারণ পারফরম্যান্স এবং পরবর্তী কীর্তিময় ক্যারিয়ারের জন্য। পাকিস্তানের ক্রিকেট ইতিহাসের সর্বকালের অন্যতম সেরা এই ব্যাটসম্যানকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অসামান্য অবদানের জন্য বিরল সম্মানে ভূষিত করেছে মেরিলিবোন ক্রিকেট ক্লাব (এমসসিসি)। শুক্রবার এমসিসি তাঁদের আজীবন সদস্য ঘোষণা করেছে কিংবদন্তি এই ব্যাটসম্যানকে। ইনজামামের পাশাপাশি দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান মার্ক বাউচারকেও আজীবন সদস্যপদ দিয়েছে এমসিসি।
১৯৯২ বিশ্বকাপজয়ী দলের অধিনায়ক ইমরান খান, সর্বকালের অন্যতম সেরা বোলার ওয়াসিম আকরাম, কিংবদন্তি ফাস্ট বোলার ওয়াকার ইউনুস এবং ‘বুম বুম’ খ্যাত শহীদ আফ্রিদির পর ইনজামাম উল হকই পাকিস্তানের হয়ে এমসিসির আজীবন সদস্য হওয়ার গৌরব অর্জন করলেন। ১৯৯১ সালে মাত্র ২১ বছর বয়সে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় ডানহাতি এই ব্যাটসম্যানের। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে অভিষেকের পর ১৯৯২ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচেও অভিষিক্ত হন ‘মুলতানের সুলতান’ খ্যাত এই টপঅর্ডার ব্যাটসম্যান।
বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে ১২০টি টেস্ট, ৩৭৮ ওয়ানডে ও একটি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন ইনজামাম। টেস্ট ক্যারিয়ারে প্রায় ৫০ গড়ে আট হাজার ৮৩০ রান করেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। ২৫টি টেস্ট সেঞ্চুরির মধ্যে সবচেয়ে স্মরণীয় হচ্ছে ২০০২ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৩২৯ রানের ট্রিপল সেঞ্চুরি ইনিংসটা। আর ৩৭৮ ওয়ানডেতে ৩৯.৫০ গড়ে ১১ হাজার ৭৩৯ রান করেছেন তিনি। অবশ্য ১০টি সেঞ্চুরি আর ৮৩টি অর্ধশতকের পরিসংখ্যান দিয়ে পাকিস্তানকে অসংখ্য ম্যাচ জেতানো ইনজামামের কৃতিত্বটা পুরোপুরি বোঝা যাবে না।
মাঠের ক্যারিয়ার শেষ হয়ে গেলেও ক্রিকেটের সাথেই নিজেকে সম্পৃক্ত রেখেছেন ইনজামাম। অবসরের পর বেশ কিছুদিন আফগানিস্তান ক্রিকেট দলের কোচের দায়িত্বও পালন করেন তিনি। ২০১৬ সাল থেকে পাকিস্তান ক্রিকেট দলের প্রধান নির্বাচকের দায়িত্ব পালন করছেন এই কিংবদন্তি ব্যাটসম্যান।
অন্যদিকে, অ্যালান ডোনাল্ড, জন্টি রোডস, শন পোলক এবং ডারিল কালিনানের পর প্রথম প্রোটিয়া ক্রিকেটার হিসেবে এমসিসির আজীবন সদস্য সম্মাননা পেলেন মার্ক বাউচার। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে ১৪৭ টেস্ট খেলা বাউচার ব্যাট হাতে করেছেন পাঁচ হাজার ৫১৫ রান করেন। এ ছাড়া, ২৯৫ টি ওয়ানডে চার হাজার ৬৮৬ রান করেন তিনি। ক্যারিয়ারে ৯৯৮টি ডিসমিসাল নিয়ে এখনো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে উইকেটরক্ষকদের তালিকায় সবার উপরে আছেন বাউচার।