তামিম পারলেন, অন্যরা ব্যর্থ কেন?
হ্যামিল্টনে সিরিজের প্রথম টেস্টে আজ টস জিতে নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন যখন ফিল্ডিং নিলেন, অনেকের চোখই কপালে উঠেছিল। ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে চোখ বুঁজে ব্যাটিং বেছে নিতেন যেকোনো অধিনায়ক। বাংলাদেশের স্কোরকার্ডের দিকে তাকালেও দেখা যায়, সবার ওপরে থাকা তামিম ইকবালের নামের পাশে জ্বলজ্বল করছে ১২৬ রান। অথচ পুরো দল ২৩৪ রানে অলআউট! উদ্বোধনী জুটিতে ৫৭ রান তোলা সত্ত্বেও টেস্ট ম্যাচের প্রথম ইনিংসে মাত্র ৫৯.২ ওভারে গুটিয়ে যাওয়া পীড়াদায়ক। দলের মিডলঅর্ডার ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় প্রথম দিনশেষে কিউই অধিনায়কই হেসেছেন শেষ হাসিটা।
অথচ কিউই পেসারদের চমৎকারভাবে খেলে একের পর এক স্ট্রোকের ফুলঝুরি ছোটালেন তামিম ইকবাল। ৩৭ বলে ফিফটি ছোঁয়া বাঁহাতি ব্যাটসম্যান লাঞ্চের আগেই ৮৬ বলে করে ফেলেন ৮৫ রান। লাঞ্চ বিরতির কিছুক্ষণ পর টিম সাউদিকে পুল করে মারা বাউন্ডারিতে কাঁটায় কাঁটায় ১০০ বলে ছুঁয়েছেন শতরান। নিউজিল্যান্ডের পেসার টিম সাউদি, ট্রেন্ট বোল্ট আর নিল ওয়াগনারদের সামলেছেন দারুণ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে। কলিন ডি গ্র্যান্ডহোমের বলে আউট হওয়ার আগে ১২৮ বলের ইনিংসে ২১টি চার ও এক ছক্কায় ১২৬ রান করেছেন তামিম। টেস্ট ক্যারিয়ারে দেশের বাইরে চতুর্থ সেঞ্চুরি করা তামিম এদিন ব্যক্তিগত নবম টেস্ট সেঞ্চুরি করেন।
কিন্তু বাদবাকি ব্যাটসম্যানরা যেন অনেকটা আত্মসমর্পণ করেন কিউই পেসারদের সামনে। পরিকল্পনা মাফিক ব্যাটসম্যানদের বুক বরাবর ক্রমাগত বাউন্সার ছুড়ে যান নিল ওয়াগনার, টিম সাউদিরা। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা বলের লাইন থেকে সরে যাওয়া ও বল ছাড়তে পারার ব্যর্থতায় উইকেট বিলিয়ে দিয়ে এসেছেন। ক্রিজে ব্যাটসম্যানদের মুভমেন্টের দিক থেকে আড়ষ্ট ভঙ্গি ও আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি বেশ চোখে পড়েছে। তাই শর্ট বলেই আউট হয়েছেন মুমিনুল, সৌম্য, মোহাম্মদ মিঠুন, অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও মেহেদী হাসান মিরাজ।
শুরুতে ট্রেন্ট বোল্টের দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে লেট সুইংয়ে পরাস্ত হয়ে বোল্ড হয়ে যান ওপেনার সাদমান ইসলাম। পেসার খালেদ আহমেদ সাউদির ইয়র্কারে বোল্ড হন। আর আবু জায়েদ রাহি ও শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হওয়া লিটন দাসের আউটের কারণ সেই বাউন্সার।
কিউইদের হয়ে স্পিনার টড অ্যাস্টল মাত্র পাঁচটি ওভার করেছেন। নিল ওয়াগনার পাঁচটি ও টিম সাউদি তিনটি উইকেট নিয়েছেন। বোল্ট ও গ্র্যান্ডহোম নেন বাকি দুটি উইকেট। টেস্ট শুরুর আগে বলা হয়েছিল, কিউই পেসারদের সামলানোই বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে আসবে। কিউই পেসারদের পরিকল্পনা অনুযায়ী বোলিং ও বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের দায়িত্বজ্ঞানহীন ব্যাটিংয়ে কিছুটা প্রমাণ হয়েছে সেই আশঙ্কা।