অস্ট্রেলিয়ার বাংলাদেশ সফর স্থগিত
সংশয়-উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা চলছিল সিরিজটা নিয়ে। শেষ পর্যন্ত সব সংশয়ের অবসান হলো ঠিকই, কিন্তু তা দুঃসংবাদ বয়ে আনল বাংলাদেশের ক্রিকেটে। দুই টেস্টের সিরিজ খেলতে আপাতত বাংলাদেশে আসছে না অস্ট্রেলিয়া।
বৃহস্পতিবার ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার (সিএ) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জেমস সাদারল্যান্ড জানিয়েছেন, ‘ছয় দিন ধরে অনেক কথাবার্তা আর আলোচনার পর আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, বাংলাদেশ সফর স্থগিত ঘোষণা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। আমাদের দৃষ্টিকোণ থেকে এটা খুবই হতাশাজনক সিদ্ধান্ত।’
গত সোমবার ঢাকায় আসার কথা ছিল অস্ট্রেলিয়া দলের। কিন্তু ঢাকার মাটিতে পা রাখার মাত্র দুদিন আগে সিএর ওয়েবসাইটে বলা হয়, ‘সম্ভাব্য নিরাপত্তা ঝুঁকি’র কারণে অস্ট্রেলীয় সরকার স্টিভেন স্মিথের নেতৃত্বাধীন টেস্ট দলকে বাংলাদেশে পাঠানোর ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্র ও বাণিজ্যবিষয়ক বিভাগ (ডিফ্যাট) এক বিবৃতিতে জানিয়ে দেয়, ‘বাংলাদেশে অবস্থানরত অস্ট্রেলীয়দের ওপর হামলার পরিকল্পনা করছে জঙ্গিরা।’
স্মিথের দলের বদলে রোববার ঢাকায় এসেছিলেন সিএর প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা শন ক্যারল। তাঁর সঙ্গে ছিলেন আরো দুই কর্মকর্তা। পরদিন এক জরুরি বৈঠকে তাঁদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান। কিন্তু তাতে কোনো লাভ হয়নি।
পুরো ঘটনার চিত্র তুলে ধরে সাদারল্যান্ড বলেন, ‘ছয়দিন আগে অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আমাদের জানিয়েছিল, বাংলাদেশে অস্ট্রেলীয়রা ঝুঁকির মধ্যে আছে। এরপরই আমরা ব্যাপারটা ভালোভাবে বোঝার চেষ্টা শুরু করি। আমাদের তিনজন সদস্য বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড, বাংলাদেশ সরকার এবং বাংলাদেশে আমাদের পররাষ্ট্রবিষয়ক বিভাগের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সব কিছু বিবেচনা করে শেষ পর্যন্ত আমরা আপাতত সফর স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
তবে সিরিজটা যে বাতিল হয়নি, তা জোরের সঙ্গেই জানিয়েছেন সিএর প্রধান নির্বাহী, ‘ভবিষ্যতে কবে সিরিজটা খেলতে পারব, তা নিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে পরে আলোচনা করব আমরা। এ ব্যাপারে নির্দিষ্ট করে কিছু বলা হয়তো আমার পক্ষে ঠিক হবে না। আমি শুধু এটাই বলতে পারি যে হুমকিটা যথেষ্ট বিশ্বাসযোগ্য আর খাঁটি। শুধু পশ্চিমারা নয়, অস্ট্রেলীয়রাও হুমকির মুখে।’
বিসিবি আর বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগের প্রশংসার পাশাপাশি সফর স্থগিত হওয়ায় বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন সাদারল্যান্ড।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ৯ অক্টোবর থেকে প্রথম এবং মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ১৭ অক্টোবর থেকে দ্বিতীয় টেস্ট শুরু হওয়ার কথা ছিল।