বাংলাদেশের দুর্বলতা পেসে, ভারতের স্পিনে
মেলবোর্নে ২০১৫ সালের বিশ্বকাপের দ্বিতীয় কোয়ার্টার ফাইনাল, ২০১৬ সালের এশিয়া কাপের ফাইনাল, ২০১৭ সালে বার্মিংহামে আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির দ্বিতীয় সেমিফাইনাল কিংবা এ বছরের নিদাহাস ট্রফির ফাইনাল—সব ম্যাচেই একটি মিল আছে। সেটি হলো, সব ম্যাচই উল্লেখযোগ্য শিরোপার লড়াই এবং হাইভোল্টেজ ম্যাচ। আর এদের সবকটিতেই ভারতের বিপক্ষে হেরেছে বাংলাদেশ। উল্লেখিত চাপের ম্যাচগুলোতে মোট ১৬ উইকেট পেয়েছেন শুধু ভারতীয় পেসাররা, যা ধস নামিয়েছে বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপে। আজ শুক্রবার দুবাইয়ে তৃতীয়বারের মতো এশিয়া কাপের ফাইনালে নামবে বাংলাদেশ। সম্প্রতি ইংল্যান্ড সফর শেষে হতাশ ভারত এশিয়া কাপ টুর্নামেন্টে ফেরাতে চাইবে নিজেদের। অন্যদিকে শিরোপার কাছাকাছি গিয়েও এক রান বা দুই রানের জন্য ট্রফি হাতছাড়া করেছে বাংলাদেশ। এমন চাপে আবারও ভারতীয় পেসারদের সামনে ভেঙে পড়বেন না তো ব্যাটসম্যানরা?
গ্রুপ পর্ব থেকেই বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের পেস দুর্বলতা প্রকাশিত হয়েছে। দুবাইয়ে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে লাসিথ মালিঙ্গা চার উইকেট নেন একাই। সেই ম্যাচে পেসাররাই নেন ছয় উইকেট। হয়তো মালিঙ্গার অভিজ্ঞতা ছাপিয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের। পরের ম্যাচে পিচের সুবিধা নিয়ে শক্তিশালী আফগানিস্তানের স্পিনাররা বাংলাদেশের ব্যাটিং ধস নামিয়েছেন। তবে দুবাইয়ের পিচ যেন সব সময় পেসারদের জন্যই স্বর্গ। অন্তত বাংলাদেশের ব্যাটিং ইনিংসের স্কোরকার্ড তাই বলে। সুপার ফোরের প্রথম ম্যাচে ভারতের বুমরাহ ও ভুবনেশ্বর কুমার তিনটি করে উইকেট নেন এবং রবীন্দ্র জাদেজা একাই নেন চার উইকেট। আবুধাবিতে সুপার ফোর রাউন্ডের পরের ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ব্যাট করতে নেমেও বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানরা চার উইকেট খুইয়ে বসেন। একই মাঠে শেষ সুপার ফোরের ম্যাচে পাকিস্তানের হাসান আলি, শাহিন আফ্রিদি ও জুনায়েদ খান মোট আট উইকেট নেন, যেখানে জুনায়েদ একাই নেন চার উইকেট।
অর্থাৎ, মাঠের অবস্থা বা পিচের ভূমিকা উইকেট পড়ার ক্ষেত্রে নগণ্য ভূমিকা রেখেছে। বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানরা পেস বোলিংয়ের কাছেই পরাজিত হয়েছেন বেশিরভাগ সময়। ভারতের বুমরাহ ও ভুবনেশ্বর কুমার খেলবেন এই ম্যাচেও। তবে তাঁদের বোলিং সামলে কত রান করতে পারবেন ব্যাটসম্যানরা, সেটিই গড়ে দেবে পার্থক্য।
অন্যদিকে ভারতের বিপক্ষে যারাই মাঠে নেমেছে, একরকম একপেশেভাবে তাঁদের হারিয়েছে ভারত। এশিয়া কাপে মধুর সময় কাটাচ্ছে রোহিত শর্মারা। তবে মাশরাফিদের জন্য সুসংবাদ হতে পারে ভারতের স্পিন দুর্বলতা। কারণ, যতগুলো উইকেট ভারত খুইয়েছে চলমান এশিয়া কাপের আসরে, তার অধিকাংশই স্পিনারদের ঘূর্ণিজালে পড়ে।
ফাইনালে নিশ্চিতভাবে ফেভারিট ভারত। তবে বাংলাদেশ নিজেদের সেরাটুকু দিয়ে খেলবে, সেটিই চাইবেন ভক্তরা।