রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না : সাব্বির

Looks like you've blocked notifications!

বাংলাদেশ ক্রিকেটের অন্যতম সম্ভাবনাময় তরুণ ক্রিকেটার সাব্বির রহমান। কিন্তু ক্যারিয়ারের শুরুতেই নারী কেলেঙ্কারি, দর্শকদের প্রতি ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ এবং সতীর্থদের সঙ্গে বাজে আচরণের জন্য পেয়েছেন ব্যাড বয়ের খেতাব। কিছুদিন আগেই বিসিবি থেকে ছয় মাসের নিষেধাজ্ঞা পেয়েছেন এই মারকুটে ব্যাটসম্যান। তাই, সামনে শুরু হতে যাওয়া ঘরোয়া প্রতিযোগিতায় ভালো খেলেই দলে ফিরতে হবে সাব্বিরকে। এই ২৬ বছর বয়সী তারকার ক্রিকবাজকে দেওয়া সাক্ষাৎকার তুলে ধরার হলো এনটিভি অনলাইনের পাঠকদের জন্য। 

প্রশ্ন : এই ছয় মাসের নিষেধাজ্ঞায় কী করবেন আপনি?

সাব্বির : আগের মতোই সাধারণ জীবনযাপন করছি। নিয়মিত অনুশীলনে যাচ্ছি এবং বিভিন্ন দিক নিয়ে কাজ করছি। বিসিবির আওতাধীন কোনো কিছু আমি ব্যবহার করতে পারব না, তাই মিরপুরে অনুশীলন করতে পারছি না। তাই মোহাম্মদপুরের একটি মাঠে ব্যাটিং এবং বোলিং প্র্যাকটিস করছি।

প্রশ্ন : কিন্তু আপনি তো ঘরোয়া প্রতিযোগিতাগুলোতে অংশ নিতে পারবেন এই ব্যাপারে নিজের কোনো লক্ষ্য নির্ধারণ করেছেন কি?

সাব্বির : সম্ভবত আগামী মাসের ৪ তারিখ থেকে আমাদের প্রথম শ্রেণির টুর্নামেন্ট, জাতীয় ক্রিকেট লিগ শুরু হবে। আমি সেটিরই প্রস্তুতি নিচ্ছি। কত রান করা সম্ভব সেটি ভাগ্যের ওপর নির্ভরশীল। আমি যতটুকু পরিশ্রম করব, সেই পরিমাণই ফল আসবে। আমি নিশ্চিত করে বলতে পারছি না কত রান করব। তবে আমি ব্যাটিং ও বোলিংয়ের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত। আগে ব্যর্থ হলেও এবার লিগে নিজেকে প্রমাণ করব।

প্রশ্ন : কিন্তু কোনো নির্দিষ্ট রান অর্জনের লক্ষ্যও কি নেই?

সাব্বির : এভাবে লক্ষ্য নির্ধারণ করায় আমি অভ্যস্ত  না। এটা শুরুতে করতাম। যেমন, ‘প্রিমিয়ার লিগে বা ন্যাশনাল লিগে বা কোনো সিরিজে আমি এত রান করব’ চিন্তা করলেও মাঠে ব্যর্থ হয়েছি। এতে মনে হয়েছে, আমি চাপ নিয়ে খেলছি। সাধারণভাবে আমি একটি একটি করে ম্যাচ ধরে খেলি। বাংলাদেশ ‘এ’ দলের হয়ে (শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে) শেষ চারদিনের ম্যাচে রান পেয়েছিলাম। সেটি আমাকে আত্মবিশ্বাস জোগাবে।

প্রশ্ন : আপনি কি মনে করেন, আপনার মেজাজ নিয়ন্ত্রণে রাখা উচিত? কারণ, এটি আপনাকে এত সমস্যায় ফেলেছে

সাব্বির : রেগে যাওয়া কোনো বিষয়ই না এখানে। সবারই রাগ আছে। হয়তো আমিই কথা ভেতরে না রেখে প্রকাশ করে ফেলি। অনেকেই এটা অপছন্দ করেন। অনেকে আমাকে অহংকারী বা জেদী ভাবতে পারেন। কিন্তু আমাকে যেমনভাবে বদরাগী হিসেবে দেখানো হয়, আমি তেমন মানুষ না। রাগ অবশ্যই ভালো কিছু নয়। কিন্তু অনেক সময় আমি রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না। আমি নিজের উন্নতির চেষ্টা করছি এবং রাগ নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে কাজ করছি যেন কেউ অসংলগ্ন কিছু বললেও আমি ভদ্রভাবে জবাব দিতে পারি।

প্রশ্ন : আপনি যতটা প্রতিভাবান, সেই তুলনায় প্রত্যাশা পূরণ করতে পেরেছেন কি?

সাব্বির : গত চার বছরে আমি প্রায় ৫০টি ম্যাচ খেলেছি। আমার কোনো নির্ধারিত ব্যাটিং পজিশন ছিল না। আমি তিন নম্বরে সবচেয়ে বেশি রান করেছি। শুরুতে নেমে কোনো ব্যাটসম্যান মাঠে থাকলে সে অবশ্যই বেশি রান করবে। আমি সবসময় দলের জন্য খেলি, তাই কিছু অর্ধশতক বা শতক ছেড়ে দিয়েছি। সবাই দলের জন্যই খেলে। গত দুই সিরিজে আমি শেষের কিছু বল খেলেছি। আপনি নিশ্চয় শেষের ২০ বল খেলে ৫০ রান আশা করতে পারেন না। কিছু ইনিংসে আমার উইকেটের জন্য আমিই দায়ী। সেগুলো মাথায় রেখে আমি কাজ করছি, যেন আরেকবার সুযোগ পেলে আমি দলের হয়ে ভালো খেলতে পারি। আমার বিশ্বাস আমি সুযোগ পাব। 

প্রশ্ন : আপনি উপরের দিকে ব্যাট করতে পছন্দ করেন, এটা পরিষ্কারভাবে বোঝা যাচ্ছে কিন্তু নির্বাচকরা আপনাকে সাতে খেলাতে আগ্রহী এই  দায়িত্ব কীভাবে পালন করবেন?

সাব্বির : ফিনিশারের কাজ আমার জন্য খুব চাপের কিছু নয়। কারণ আমি বল মেরে খেলতে পছন্দ করি। এতেই আমি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। যেকোনো ধরনেই মারকুটে ক্রিকেট খেলা আমার জন্য সুবিধাজনক। যখনই দল আমাকে ব্যাটিংয়ের সুযোগ দিয়েছে, আমি আমার শতভাগ দেওয়ার চেষ্টা করেছি।

প্রশ্ন : ভালো ব্যাটসম্যান হতে গিয়ে অল-রাউন্ডার হিসেবে দক্ষতা কমে আসছে বলে মনে হয়েছে কি?

সাব্বির : আমি বোলার হিসেবে খেলা শুরু করেছি। ব্যাটিং আমার দ্বিতীয় পছন্দ হলেও পরে আমি ব্যাটসম্যান হয়েছি। আমাদের দলে অনেক বোলার থাকায় আমার বোলিং করার প্রয়োজনই হয় না। যদিও আমি সবসময় বোলিং করার প্রস্তুতিও নিয়ে থাকি। নেটে অনুশীলনেও বোলিংয়ে উন্নতির চেষ্টা করছি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষের প্রীতি ম্যাচে আমি ১০ ওভার বল করেছিলাম।

প্রশ্ন : এমন কঠিন সময়ে আপনি অনুপ্রেরণা পান কীভাবে?

সাব্বির : আমার বাবা মা এবং পরিবার এমন অবস্থায় আমার পাশে থাকেন। তাঁরাই আমাকে অনুপ্রেরণা দেন।