রিয়াল মাদ্রিদ-পিএসজির ম্যাচে উগ্র সমর্থকদের নিয়ে দুশ্চিন্তা!
অল্প কিছুদিন আগেই উগ্র সমর্থকদের ভয়াবহ উন্মত্ততা দেখেছে ইউরোপিয়ান ফুটবল। অ্যাথলেটিক বিলবাও ও স্পার্তাক মস্কোর বিপক্ষে ম্যাচে দুই দলের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছেন এক পুলিশ সদস্য। আহত হয়েছিলেন অনেকে। ঠিক একই রকম পরিস্থিতির আশঙ্কায় এখন দিন গুনছেন প্যারিসের নিরাপত্তারক্ষীরা। আগামী মার্চ মাসের শুরুর সপ্তাহেই যে এখানে মুখোমুখি হতে যাচ্ছে প্যারিস সেইন্ট জার্মেই ও রিয়াল মাদ্রিদ।
দুদলের মধ্যে সেরা কোন দল? রিয়াল মাদ্রিদ নাকি প্যারিস সেইন্ট জার্মেই (পিএসজি)? অবশ্য বর্তমানে দুদলের পারফরম্যান্স দেখে সেটা বোঝার উপায় নেই। এই মৌসুমে রিয়াল মাদ্রিদ সাময়িকভাবে কিছুটা খারাপ সময় কাটালেও সম্প্রতি তারা ফিরে এসেছে স্বরূপে। নিজেদের সেরাটা দিয়ে একের পর এক জয়ও তুলে নিচ্ছে জিনেদিন জিদানের শিষ্যরা।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি এই মৌসুমের হাই ভোল্টেজ ম্যাচে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলোতে ওঠার লড়াইয়ের প্রথম লেগে মুখোমুখি হয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদ-পিএসজি। ওই ম্যাচে পিএসজির বিপক্ষে ৩-১ ব্যবধানে জিতেই মূলত রিয়াল মাদ্রিদ আত্মবিশ্বাস ফিরে পেয়েছে। বার্নাব্যুতে নিজেদের মাঠে আধিপত্য বিস্তার করে খেললেও পিএসজি যথেষ্ট আক্রমণে ছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে হেরে যায় উনাই এমেরির দল।
এরপর সপ্তাহ না ঘুরতেই ফ্রেঞ্চ লিগে স্ট্রাসবার্গকে ৫-২ ব্যবধানে ও গতকাল রাতে মার্শেইকে ৩-০ ব্যবধানে হারিয়ে দিয়েছে পিএসজি। রিয়াল মাদ্রিদও টানা তৃতীয় ম্যাচে জয় তুলে নিয়েছে। দুদলের ফর্মই যখন তুঙ্গে, এমন অবস্থায় মার্চের ৬ তারিখ চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলোর দ্বিতীয় লেগের ম্যাচে প্যারিসে নিজেদের মাঠে মুখোমুখি হবে পিএসজি, রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে।
ম্যাচকে ঘিরে দুদলের খেলোয়াড়, কোচের মধ্যে চাপা উত্তেজনা তো চলছেই। তবে এবার উত্তেজনার মাত্রা ছাড়িয়ে ৬ তারিখের ম্যাচটি ঘিরে ভীতির সঞ্চার হয়েছে। গতকাল রাতে লিগ ওয়ানে মার্শেইয়ের বিপক্ষে ম্যাচে পিএসজির সমর্থকরা প্যারিসের রাস্তায় মশাল জ্বালায় ও ব্যানার নিয়ে হৈচৈ করে। যদিও পিএসজি গতকালের ম্যাচে মার্শেইকে পরাস্ত করার কারণে কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, পিএসজি-রিয়াল মাদ্রিদের ম্যাচটি ঘিরে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটাতে পারে উগ্র সমর্থকরা।
পিএসজির এই উগ্র সমর্থকগোষ্ঠী সবাইকে খেলার আগেই নিজেদের শার্ট ও স্কার্ফ নিয়ে স্টেডিয়ামে আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছে। মাঠে ঢোকার সময় তারা এমন এক আবহ তৈরি করতে চায় যেন প্রতিপক্ষের ফুটবলার ও সমর্থকরা বাড়তি চাপের মুখে পড়ে। একই সঙ্গে এই ভীতিকর পরিস্থিতি দিয়ে তারা নিজেদের দলের খেলোয়াড়দেরও উজ্জীবিত করতে চান।
প্রথম লেগে পিএসজি ৩-১ গোলে রিয়াল মাদ্রিদের কাছে হেরে গেলেও অ্যাওয়ে গোলের সুবিধা নিয়ে পরের ম্যাচে তাদের জিততে হবে ২-০ ব্যবধানে। অন্যদিকে পিএসজি ফরোয়ার্ড নেইমারের ইনজুরিতে পড়ার কারণে তিনি রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে মাঠে নামতে পারবেন কি না, সংশয় দেখা দিয়েছে।
যেহেতু পিএসজির ঘরের মাঠে খেলা, তাই ধারণা করা হচ্ছে ম্যাচে হেরে গেলে উত্তেজিত সমর্থকরা যেকোনো ধরনের ঝামেলায় জড়িয়ে পড়ে নাশকতা সৃষ্টি করতে পারে।