রুবেলের অন্যরকম সেঞ্চুরি!
গতকালই ছিল রুবেল হোসেনের ওয়ানডে ক্যারিয়ারের নয় বছর পূর্তির দিন। ঠিক একদিন পরেই ডানহাতি এই পেসার ছুঁয়ে ফেললেন দারুন এক মাইলফলক। বাংলাদেশের পঞ্চম বোলার হিসেবে করলেন ওয়ানডেতে উইকেটের সেঞ্চুরি।
পেস বোলার হিসেবে রুবেল হোসেনের উপরে আছেন শুধুই ওয়ানডে দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। ব্যবধানটা যদিও একটু বেশিই, তারপরেও বাংলাদেশের দ্বিতীয় পেসার হিসেবে রুবেল ছুঁয়েছেন এমন মাইলফলক।
উইকেটের শতক গড়তে রুবেলের প্রয়োজন ছিল মাত্র দুই উইকেটের। পুরো ম্যাচ জুড়ে সাকিব-মুস্তাফিজদের ভিড়ে রুবেল সুযোগ পাচ্ছিলেন না জিম্বাবুইয়ানদের ঘাড়ে চেপে বসতে।
অবশেষে ৪৭তম ওভারে ডানহাতি এই পেসার দেখা পেলেন বহুদিনের আরাধ্য মাইলফলকটির। সে ওভারে টানা দুই বলে দুই উইকেট নিয়ে রুবেল স্পর্শ করেন ১০০ উইকেটের মাইলফলক।
ওভারের তৃতীয় এবং চতুর্থ বলে যথাক্রমে পিটার মুর এবং তেন্দাই চাতারাকে ফিরিয়ে ৮১তম ম্যাচেই রুবেল তুলে নেন ক্যারিয়ারের ১০০ উইকেট। এক্ষেত্রেও এগিয়ে মাশরাফি। টাইগার কাপ্তানের লেগেছিল ৭৮ ম্যাচ।
এবারের মত ২০০৯ সালেও বাংলাদেশে বসেছিল ত্রিদেশীয় সিরিজের মেলা। সেবারও প্রতিপক্ষ দুই দল ছিল জিম্বাবুয়ে এবং শ্রীলঙ্কাই। সেই সিরিজে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেই প্রথম বাংলাদেশের জার্সিতে মাঠে নামেন রুবেল।
শুরুর ম্যাচেই তুলে নিয়েছেন ৪ উইকেট। কিন্তু বিধি বাম, সেই সিরিজের ফাইনালে মুত্তিয়া মুরালিধরনের কাছে বেড়ধক পিটুনি খেয়ে এক ওভারেই রুবেল দিয়েছিলেন ২০ রান। অনেক সম্ভাবনাময় এক ম্যাচে ঐ এক ওভারের জন্যই পরাজিত হয় বাংলাদেশ।
রুবেলও দুঃখ পেয়েছিলেন সেই পরাজয়ে। তবে থেমে থাকেননি। সেই ভুল থেকে শিখেছিলেন। ২০১০ সালে কাইল মিলসের স্টাম্প উড়িয়ে দিয়ে বাংলাদেশকে ভাসিয়েছিলেন প্রথমবারের মত বড় কোন দলের বিপক্ষে হোয়াইট ওয়াশের আনন্দে।
সেই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেই ২০১৩ সালে ৬ উইকেট নিয়েছিলেন মাত্র ২৬ রানে। কিউইদের গুঁড়িয়ে দেয়ার পাশাপাশি পরপর তিন বলে তিন উইকেট তুলে নিয়ে দ্বিতীয় পেসার হিসেবে দেশের হয়ে গড়েছিলেন হ্যাটট্রিকের রেকর্ড।
২০১৫ বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনালে রুবেল পেয়েছিলেন ৪ উইকেট। আর দুই বলের ব্যবধানে স্টুয়ার্ট ব্রড ও জেমস অ্যান্ডারসনকে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে উঠিয়েছিলেন প্রথমবারের মত বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে।
সেই ২০১৫ বিশ্বকাপের আগে রুবেলের পরিস্থিতি কেমন ছিল সেটা সবারই জানা। সেবারই প্রথম নয় আরও অনেকবারই একদম তলানি থেকে মনের জোর আর অধ্যবসায়ে রুবেল দেশকে দিয়েছেন নিজের সেরাটাই। দিনশেষে তাই প্রাপ্তিটা রুবেলের পাশে মানিয়ে গেছে দারুনভাবে।