স্কয়ার ড্রাইভ
আইরিশদের জয় একটা সতর্কবার্তা
আগেই বলেছিলাম, আয়ারল্যান্ডের মতো ‘ছোট’ দলগুলো অঘটন ঘটিয়ে থাকে। আমার ধারণা যে অমূলক নয় তা প্রমাণিত। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ছুড়ে দেয়া বিশাল টার্গেট তাড়া করে জিতে অন্য দলগুলোকেও একটা সতর্কবার্তা দিয়েছে তারা। এই বিশ্বকাপে যে বড় দলগুলোকে ভোগাতে পারে, তারই প্রমাণ দিয়েছে আইরিশরা।
বিশ্বকাপে ৩০৫ রান অনেক বড় টার্গেট। কিন্তু অবাক হওয়ার মতো বিষয়, এত বড় টার্গেট তাড়া করতে নেমে কখনোই বিন্দুমাত্র চাপ অনুভব করেনি আয়ারল্যান্ডের ব্যাটসম্যানরা। শেষদিকে ক্যারিবীয় বোলাররা কিছুটা ধাক্কা দিয়েছেন ঠিকই, কিন্তু আইরিশদের ভিত টলাতে পারেননি।
বিশ্বকাপে তৃতীয়বারের মতো খেলতে আসা দলটির ব্যাটিং পরিপক্বতা দেখে আমি রীতিমতো অভিভূত। কখনোই তাদের ওভার প্রতি রান তোলার হার ছয়ের নিচে নামেনি। অথচ ব্যাটসম্যানদের মধ্যে তাড়াহুড়া একেবারেই ছিল না। যে কারণে সম্ভব হয়েছে এই টার্গেটে পৌঁছানো।
এমনিতেই অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের উইকেটে রান ‘চেজ’ করে জেতা খুব কঠিন। তার ওপরে ৩০০-এর ওপরে লক্ষ্য খুবই দুরূহ। তবে প্রত্যেক বিভাগে ‘ক্যালকুলেটিভ’ ক্রিকেট খেলে কঠিন কাজটি সম্ভব করে তুলেছে আয়ারল্যান্ড।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ অবশ্য আরো বেশি রান করতে পারতো। তাদের সামনে সেই সুযোগও ছিল। বিশেষ করে গেইল উইকেটে আরেকটু টিকে থাকতে পারলে হয়তো সাড়ে ৩০০ রান করতে পারত তারা।
ক্যারিবীয় বোলাররা কখনোই প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের চাপে ফেলতে পারেননি। উইকেট নেওয়ার জন্য যে নিয়ন্ত্রিত বোলিং করা প্রয়োজন, তাও করতে পারেননি তাঁরা। আর তাই অঘটনের শিকার হতে হয়েছে তাদের।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলটিকে আমার অগোছালো বলেও মনে হয়েছে। জয় ছিনিয়ে নেওয়ার জন্য প্রতিপক্ষের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ার যে মানসিকতা থাকা দরকার, তাদের খেলায় তা দেখা যায়নি।
আয়ারল্যান্ডকে নিয়ে একটু সতর্ক থাকা উচিত ছিল গেইলদের। গত বিশ্বকাপে তারা ইংল্যান্ডের মতো দলকে হারিয়েছিল। বিশ্বকাপের আগে প্রস্তুতি ম্যাচে বাংলাদেশকে হারিয়ে ফুরফুরে মেজাজেও মাঠে নেমেছিল।
এসব মাথায় রেখে ভালোভাবে খেলতে পারলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পরিণতি হয়তো এমন করুণ হতো না। আয়ারল্যান্ডকে নিয়ে একটা কথা অবশ্য বলাই যায়। এই বিশ্বকাপে তারা অনেক দূর যেতে পারে।
মিনহাজুল আবেদীন নান্নু : জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক এবং বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের নির্বাচক। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রথম ম্যান অব দ্য ম্যাচ।