শ্রীলঙ্কা-পাকিস্তান ম্যাচে দর্শকের হট্টগোল
২০০৯ সালে পাকিস্তান সফরে সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণ হারাতে বসেছিলেন শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটাররা। এবার শ্রীলঙ্কা সফরে হেনস্তা হতে হলো পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের। ওয়ানডে সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে বোমা-গুলির সামনে না পড়লেও দর্শকের হাঙ্গামা, ইট-পাথর মোকাবিলা করতে হয়েছে আজহার-হাফিজ-সরফরাজদের। দর্শকের বিশৃঙ্খলার কারণে বেশ কিছুক্ষণ খেলা বন্ধও রাখতে হয়েছে। হট্টগোলে ভরা ম্যাচটিতে ১৩৫ রানের বিশাল জয় পেয়ে পাঁচ ম্যাচের সিরিজ ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে গেছে পাকিস্তান।
রোববার কলম্বোর আর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে সরফরাজ আহমেদ (৭৭), মোহাম্মদ হাফিজ (৫৪), অধিনায়ক আজহার আলী (৪৯), আহমেদ শেহজাদ (৪৪) আর শোয়েব মালিকের (অপরাজিত ৪২) দৃঢ়তাপূর্ণ ব্যাটিং ৪ উইকেটে ৩১৬ রানের বড় সংগ্রহ এনে দেয় পাকিস্তানকে। জবাবে লাহিরু থিরিমান্নে ৫৬ রান করলেও ৩৪ ওভারে ১৫৮ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে নিশ্চিত হারের সামনে দাঁড়িয়ে যায় শ্রীলঙ্কা। তার পরই শুরু হয় গণ্ডগোল।
প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামের বাইরে থেকে দর্শক ছুড়ে মারতে থাকে ইট-পাথর। কয়েকটি পাথর এসে পড়ে ক্রিকেটারদের খুব কাছে। ফলে খেলা বন্ধ করে তাঁদের মাঠের বাইরে সরিয়ে দিতে বাধ্য হন আম্পায়াররা। স্টেডিয়ামের বাইরে দাঙ্গা পুলিশ মোতায়েন করে আবার শুরু করতে হয় খেলা। খেলা শুরু হওয়ার পর পাকিস্তানকে অবশ্য জয়ের জন্য বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি। ৪১.১ ওভারে ১৮১ রানে গুটিয়ে যায় স্বাগতিক দল। ২৯ রানে ৪ উইকেট নিয়ে পাকিস্তানের সেরা বোলার লেগস্পিনার ইয়াসির শাহ। ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় অবশ্য সরফরাজ।
পাকিস্তানের ক্রিকেটাররা এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্য ঢালাওভাবে দর্শককে দায়ী করেননি। অল্প কিছু উগ্র দর্শক এমনটা ঘটিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন পাকিস্তানের টেস্ট অধিনায়ক মিসবাহ-উল-হক। টুইটারে তিনি লিখেছেন, ‘অল্প কিছু মানুষের জন্য আমরা সবাইকে দোষী করতে পারি না। শ্রীলঙ্কা ও তাদের দর্শকের জন্য আমাদের সমর্থন এখনো আছে।’ পাকিস্তানের সাবেক গতি-তারকা ও বর্তমানে ধারাভাষ্যকার শোয়েব আখতারও সমর্থন জানিয়েছেন মিসবাহকে।
শ্রীলঙ্কার সদ্য বিদায়ী তারকা ব্যাটসম্যান মাহেলা জয়াবর্ধনে অবশ্য দর্শকের এমন ন্যক্কারজনক আচরণ মেনে নিতে পারেননি। টুইটারে তাঁর মন্তব্য, ‘যেকোনো ফলাফলই আমাদের মেনে নিতে হবে আর খেলাটা উপভোগ করতে হবে। দর্শক খুব খারাপ আচরণ করেছে। আশা করি, এটা শ্রীলঙ্কার অন্য দর্শকের ওপর কোনো প্রভাব ফেলবে না।’