২০১১ সালের জানুয়ারিতে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন ওয়েইন পার্নেল। দক্ষিণ আফ্রিকার এই বাঁ-হাতি পেসার এখন ধর্মপ্রাণ মুসলমান। নিয়মিত রোজা রাখেন। বাংলাদেশ সফরে এসে হোটেল সোনারগাঁওয়ের রেস্তরাঁয় সেহরি আর ইফতারও করছেন প্রতিদিন। তবে ধর্ম পালন করতে গিয়ে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে পার্নেলকে। এক অজ্ঞাত ব্যক্তি হোটেল রুমে ফোন করে তাঁকে ‘জঙ্গি’ বলে হুমকি দিয়েছেন।

ঘটনাটা গত ৫ জুলাইয়ের। সেদিন প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকা। অতিথি দল হোটেল সোনারগাঁও থেকে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের উদ্দেশে রওনা হওয়ার কিছুক্ষণ আগে, সকাল ১১টার দিকে পার্নেলের রুমে একটা ফোন আসে। ফোনে তাঁকে ‘জঙ্গি’ বলে হুমকি দেওয়া হয়। ফোনটা পেয়ে আতঙ্কিত পার্নেল সঙ্গে-সঙ্গে হোটেলের লবিতে নেমে এসে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নিরাপত্তা বিষয়ক কর্মকর্তাদের এ বিষয়ে জানান।

বিসিবির নিরাপত্তা বিষয়ক পরামর্শক মেজর (অব.) হোসেন ইমাম বিষয়টার সত্যতা স্বীকার করেছেন। মঙ্গলবার দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি চলার সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘ঘটনাটা জানার পরই আমরা গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে বিষয়টা অবহিত করেছি। কে বা কারা পার্নেলকে ফোন করে হুমকি দিয়েছে তা খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে। এ কারণে খেলোয়াড়দের মধ্যে যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে তা দূর করার জন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরো জোরদার করা হয়েছে।’

সেই অজ্ঞাত ব্যক্তি পার্নেলকে ফোনে কী বলেছিলেন সে সম্পর্কে জানতে চাইলে বিসিবির নিরাপত্তা বিষয়ক পরামর্শক বলেন, “দক্ষিণ আফ্রিকা দলের ম্যানেজার মোহাম্মদ মুসাজি, কয়েকজন খেলোয়াড় ও কর্মকর্তা মুসলিম। সেই ব্যক্তি পার্নেলকে ফোন করে বলেছিলেন ‘আপনারা মুসলমানের ছদ্মবেশে আসলে একেকজন জঙ্গি। বাংলাদেশে এসেছেন জঙ্গি তৎপরতা চালাতে। দাঁড়ান, আপনাদের দেখে নেব।’” 

এই ঘটনার কারণে মেজর (অব.) হোসেন ইমাম খেলোয়াড়দের হোটেল রুমে সরাসরি ফোন দেওয়ার বিরুদ্ধে, ‘আমাদের পক্ষ থেকে পরিষ্কার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, কোনো ক্রিকেটারের রুমে সরাসরি যেন ফোন কল ট্রান্সফার করা না হয়। আগে অনুমতি নিয়ে যেন কল ট্রান্সফার করা হয়। কিন্তু পার্নেলের ক্ষেত্রে এই নিয়ম মানা হয়নি। এটা খুবই অপ্রত্যাশিত এবং দুঃখজনক ঘটনা।’

হুমকি পেলেও প্রথম টি-টোয়েন্টিতে দক্ষিণ আফ্রিকার জয়ে ভালোই অবদান রেখেছিলেন পার্নেল। ২ ওভার ৫ বল করে ১২ রান দিয়ে এক উইকেট নিয়েছিলেন তিনি।