টেস্ট ক্রিকেটে সময়টা ভালো যাচ্ছিল না মুমিনুল হকের। একদিক দিয়ে দেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার দায়িত্ব, অন্যদিকে ফর্মহীনতা। সব মিলিয়ে হতাশায় ছিলেন তিনি। তবে নিজের ওপর আস্থা হারাননি মুমিনুল। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্টের আগে জানিয়েছিলেন, এই ম্যাচে বড় ইনিংস খেলবেন। সেই কথা রেখেছেন মুমিনুল। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসেই সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন বাংলাদেশ দলের টেস্ট অধিনায়ক।

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে আজ সোমবার প্রথম ইনিংসেই সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন মুমিনুল হক। দিনের শুরুতেই ডোনাল্ড ট্রিপিয়ানোকে কাভার ড্রাইভে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে সেঞ্চুরিতে পৌঁছান তিনি। টেস্টে বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যানের নবম সেঞ্চুরি এটি। আর অধিনায়ক হিসেবে এটি তাঁর প্রথম সেঞ্চুরি। ২০৮ মিনিটে ১৫৬ বলে তিন অঙ্ক স্পর্শ করেন মুমিনুল, যাতে ছিল ১২টি বাউন্ডারি।

১৪ ইনিংস খেলার পর সেঞ্চুরি পেয়েছেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। শেষ সেঞ্চুরি করেছেন ২০১৮ সালের নভেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে।

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ২৪০ রানে গতকাল রোববার দ্বিতীয় দিন শেষ করে বাংলাদেশ। একমাত্র টেস্টে প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ২৬৫ রান সংগ্রহ করে জিম্বাবুয়ে। ৮ উইকেট হাতে নিয়ে আজ সোমবার তৃতীয় দিন শুরু করে মুমিনুল হকের দল। এরই মধ্যে লিড নিয়েছে স্বাগতিকরা।

এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বাংলাদেশের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ৩৪০ রান। উইকেটে আছেন মুশফিক ও মুমিনুল।

গতকাল প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। ইনিংসের চতুর্থ ওভারে হারায় ওপেনার সাইফ হাসানের উইকেট। অফস্টাম্পের বাইরের বলে সাইফের ব্যাটের কানা ছুঁয়ে বল চলে যায় চাকাভার গ্লাভসে। সাইফ ফেরেন ৮ রানে।

সাইফকে হারানোর ধাক্কা কাটিয়ে প্রতিরোধ গড়েন তামিম ইকবাল ও নাজমুল হোসেন শান্ত। এই জুটিতে দ্বিতীয় সেশনের অনেকটা সময় পার করে স্বাগতিকরা। কিন্তু আশা দেখিয়েও দলকে বেশি দূর নিতে পারেননি তামিম ইকবাল, ফিরে যান ৪১ রানে। এর মধ্যে ব্যক্তিগত ২৭ রানের মাথায় অনন্য রেকর্ড গড়েন তামিম। প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে প্রবেশ করেন ১৩ হাজার রানের ঘরে। তবে ইতিহাস গড়ার দিন বেশি দূর যেতে পারলেন না বাঁহাতি ওপেনার।

তামিম ফিরলেও উইকেটে থিতু হয়ে ছিলেন শান্ত। ১০৮ বলে তুলে নেন নিজের ব্যক্তিগত হাফসেঞ্চুরি। আস্থার সঙ্গে খেলতে থাকা শান্তর প্রতিরোধ ভাঙেন চার্লটন। ৪৯.৪তম ওভারে উইকেটকিপার চাকাভার হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে যান শান্ত। ফেরার আগে ১৩৯ বলে সাত বাউন্ডারিতে ৭১ রান করেন তিনি।

শান্ত-তামিমকে হারানোর পর জুটি বাঁধেন মুমিনুল হক ও মুশফিক। এই জুটিতে দিনের শেষ সেশন পার করে দেয় বাংলাদেশ। এর মধ্যে ৭৮ বলে চার বাউন্ডারিতে ব্যক্তিগত হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। টেস্ট ক্রিকেটে সাত ইনিংস পর হাফসেঞ্চুরির দেখা পান তিনি। মুমিনুল-মুশফিকে ভর করে শেষ পর্যন্ত ৩ উইকেটে ২৪০ রানে দিন শেষ করে স্বাগতিকরা। দিন শেষে ৭৯ রানে অপরাজিত ছিলেন মুমিনুল ও ৩২ রানে অপরাজিত ছিলেন মুশফিক।