সিলেটে দুপুরে মাঠে নামছে বাংলাদেশ
মিরপুরে শেরেবাংলায় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সাদা পোশাকের লড়াই শেষ। ইনিংস ব্যবধানে জয়ের স্বস্তি নিয়ে বাংলাদেশ দলের গন্তব্য এখন সিলেটে। চায়ের শহরে সফরকারীদের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ জাতীয় দল।
সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে আজ রোববার সফরকারীদের মুখোমুখি হবে মাশরাফি বিন মুর্তজার দল। সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় দুপুর ১টায়।
দীর্ঘদিন পর ওয়ানডে হওয়ায় জিম্বাবুয়ের অন্যরকম এক পরীক্ষার সামনেই পড়তে যাচ্ছে বাংলাদেশ। কিন্তু সে হিসেবে সিরিজ শুরুর আগের দিনও নেই খেলার কোনো আলোচনা, নেই প্রতিপক্ষ নিয়ে কোনো বাড়তি চিন্তা। সিরিজের আগ মুহূর্তে যত উত্তাপ, শুধু অধিনায়ক মাশরাফির অবসর নিয়ে। সেই উত্তাপ ছড়াল গতকাল ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনেও।
এ সিরিজ দিয়ে দীর্ঘদিন পর ক্রিকেটে ফিরছেন মাশরাফি। দেশের হয়ে সর্বশেষ বিশ্বকাপে খেলেছেন তিনি। গত বছরের ৫ জুলাই পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচের পর আর দেখা যায়নি তাঁকে। এ ছাড়া দেশের মাটিতে ১৫ মাস আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে খেলেছেন ওয়ানডে অধিনায়ক। সাত মাসের লম্বা বিরতি দিয়ে অধিনায়কের ফেরাটা স্বস্তির বটে। কিন্তু নানা বিতর্কে সেটা অনেকটা অস্বস্তির হয়েই দাঁড়িয়েছে। কারণ, কদিন আগেই বিসিবি সভাপতি জানিয়েছিলেন, এটিই হতে যাচ্ছে অধিনায়ক হিসেবে মাশরাফির শেষ সিরিজ। তা নিয়েই যত আলোচনা। তবে মাশরাফি জানিয়েছেন, নিজের অবসর ভাবনা নিয়ে কিছুই বলতে চান না তিনি।
মাশরাফি বলেন, ‘সব তো বোর্ড সভাপতি বলেছেনই। আমার সঙ্গে কী কী কথা হয়েছে বোর্ড সভাপতির, আমার মনে হয় না সেটা আপনাদের বলার প্রয়োজন আছে। ক্রিকেট বোর্ড যেটা বলেছে, আপনারা তো জানেনই। অতটুকুই তো যথেষ্ট। আমার মুখ থেকে আবার শুনতে হবে কেন? এটা আমার শেষ কি না, সেটা জানি না। এটা নিয়ে বলার কিছু নেই। যদি থাকত বলার, অবশ্যই বলতাম। বোর্ড সভাপতি যেটা বলেছেন, আপনারা তো সেটা জেনেছেনই। আমার মুখ থেকে শোনার আর কী দরকার।’
ক্রিকেটের লড়াইয়ে জিম্বাবুয়ের চেয়ে অনেকটাই এগিয়ে বাংলাদেশ। গত সাত বছরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১৩টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলে কোনোটিতেই হারেনি লাল-সবুজের দল। তবে মাঠের লড়াইয়ে নামার আগে বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা জানালেন, কোনোভাবেই জিম্বাবুয়েকে ছোট করে দেখছেন না তিনি। বরং ছোট ফরম্যাটে জিম্বাবুয়েকে বেশ শক্তিশালী মানছেন স্বাগতিক অধিনায়ক।
গতকাল শনিবার ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে মাশরাফি বলেন, ‘ছোট ফরম্যাটে জিম্বাবুয়ে বেশ শক্তিশালী। এই ফরম্যাটে তারা অনেক অভিজ্ঞ। অবশ্যই আমরা ম্যাচ বাই ম্যাচ এগোতে চাই। আমরা প্রথম ওয়ানডে দিয়ে শুরু করছি। এরপর দ্বিতীয় ও তৃতীয় ম্যাচে খেলব। এটা বলা মুশকিল যে, আমরা তিন ম্যাচেই জয় পাব। তবে জয় দিয়ে শুরু করাটাই গুরুত্বপূর্ণ।’
সতীর্থদের সতর্ক করে মাশরাফি আরো বলেন, ‘জিম্বাবুয়ের কাছে আমরা হারতেও পারি। এমন তো না যে, আমরা জিম্বাবুয়ের কাছে আগে হারিনি। যে ম্যাচগুলো আমরা জিতেছি, এর মধ্যে কিন্তু দু-তিনটি ছিল যে আমরা প্রায় হারা ম্যাচ জিতে গেছি। তার মানে, তারা আমাদের হারাতে পারে। সুতরাং অতটুকু নিশ্চিত হয়েই আমাদের ক্রিকেট খেলতে হবে।’
অবশ্য প্রতিপক্ষ হিসেবে দুর্বল হলেও ভাবছে না জিম্বাবুয়ে। বাংলাদেশের স্পিন শক্তির বিপক্ষে লড়তে প্রস্তুত সফরকারীরা। দলটির অধিনায়ক চামু চিবাবা বলেন, ‘বাংলাদেশ দল থেকে কী প্রত্যাশা করতে পারি, সেটা নিয়ে আমরা নিজেরা আলোচনা করেছি। এটা স্পষ্ট, যখনই আমরা এখানে এসেছি, প্রচুর স্পিনের মুখোমুখি হয়েছি। বাংলাদেশের স্পিন মোকাবিলা করতে অনেক কাজ করেছি। আমরা নিজেদের দক্ষতার উন্নতিও করছি। সব মিলিয়ে আমরা তৈরি।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ম্যাচ নিয়ে আশাবাদী বাংলাদেশ। আশা ছাড়ছে না সফরকারীরাও। তবে শেষ পর্যন্ত জয়ের হাসি কে হাসে, সেটা সময় বলে দেবে। আপাতত চায়ের শহরে মাশরাফির নতুন ফেরাকে স্বাগত জানানোর অপেক্ষায় ভক্তরা।
দুই দলের স্কোয়াড
বাংলাদেশ ওয়ানডে দল : মাশরাফি বিন মুর্তজা (অধিনায়ক), তামিম ইকবাল, নাজমুল হোসেন শান্ত, মাহমুদউল্লাহ, মুশফিকুর রহিম, মোহাম্মদ মিঠুন, লিটন দাস, তাইজুল ইসলাম, আফিফ হোসেন, মোহাম্মদ নাঈম, আল-আমিন হোসেন, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, শফিউল ইসলাম, মেহেদী হাসান মিরাজ ও মুস্তাফিজুর রহমান।
জিম্বাবুয়ের ওয়ানডে দল : চামু চিবাবা (অধিনায়ক), তিমিসেন মারুমা, সিকান্দার রাজা, ক্রেইগ আরভিন, তিনাশে কামুনহুকামওয়ি, ওয়েসলি মাদভেরে, ক্রিস্টোফার এমপফু, টিনোতেন্দা মুতুমবোজি, কার্ল মুম্বা, রিচমন্ড মুতুম্বামি (উইকেটরক্ষক), আইনসলে এনদোভু, ব্রেন্ডন টেলর, ডোনাল্ড টিরিপানো, চার্লটন টিসুমা ও শন উইলিয়ামস।