সাফল্যের রহস্য জানালেন বাংলাদেশ অধিনায়ক
বল হাতে নিঃসন্দেহে দারুণ করেছে বাংলাদেশ। ব্যাটিংয়ের শুরুটাও হয়েছে দুর্দান্ত। কিন্তু ব্যাটিংয়ের মাঝপথে হঠাৎ ছন্দপতন। ১০২ রানে ছয় উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ স্বপ্ন প্রায় ভাঙার পথে। ঠিক সে সময় ঢাল হয়ে উঠলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক আকবর আলী। চাপে ভেঙে না পড়ে, শক্তহাতে হাল ধরলেন যুব অধিনায়ক। জুটি গড়লেন পারভেজের সঙ্গে। সেই জুটিতেই বিশ্বজয়ের পথে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল।
ম্যাচ শেষে অধিনায়ক জানালেন, বিপর্যয়ের মুখে কেমন পরিকল্পনা করেছিলেন তিনি। চরম বিপদে সতীর্থকে শুধু উইকেট টিকিয়ে রাখার পরামর্শই ছিল অধিনায়কের।
আকবর বলেন, “আমি এমন একজন মানুষ, যে সবকিছুই সহজভাবে নেয়। টুর্নামেন্টের শুরুর দিকে ব্যাট করার খুব একটা সুযোগ পাইনি। সুযোগের অপেক্ষায় ছিলাম। ব্যাটিংয়ে যখন নামি, একটা জুটির প্রয়োজন ছিল। আমার সঙ্গীকে বলেছিলাম, ‘আমাদের একটা জুটি গড়তে হবে, উইকেট হারানো যাবে না।’ সহজ পরিকল্পনা ছিল। তাতে সফল হয়েছি।”
যুব বিশ্বকাপে সবচেয়ে শক্তিশালী দল ভারত। ১৩ বারের বিশ্বকাপে সাতবারই ফাইনাল খেলা দলটি যে বাংলাদেশকে ছাড় দেবে না, সেটা আগেই বুঝতে পেরেছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। তবে চ্যালেঞ্জ নেওয়ার জন্য প্রস্তুত ছিলেন আকবর নিজেও, ‘আমরা জানতাম, ভারত এত সহজে ছেড়ে দেবে না। তারা খুবই চ্যালেঞ্জিং দল। রান কম হলেও আমরা জানতাম তাড়া করা কঠিন হবে।’
এই জয় গর্বের। এই জয় অহংকারের। চ্যাম্পিয়ন দল ভারতকে হারিয়ে নতুন চ্যাম্পিয়ন হল লাল-সবুজের বাংলাদেশ। এই জয়ে অবদান ছিল দলের সবার। বল হাতে ঝড় তুলেছিল বোলাররা। শেষ দিকে ক্যাপ্টেনের মহাকাব্যিক ইনিংসে রচিত হল ইতিহাস। সেই জয়ে দলের সবাইকে কৃতিত্ব দিলেন অধিনায়ক আকবর আলী।
দলের খেলোয়াড়দের পাশাপাশি আকবর কৃতিত্ব দিলেন মাঠে আসা দর্শকদেরও। মাঠে এসে টাইগারদেরকে সমর্থন দেওয়ায় পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে আকবর আলী দর্শকদেরকে বাংলাদেশ দলের দ্বাদশ খেলোয়াড় হিসেবে আখ্যা দেন। তিনি বলেন, ‘আপনারা আমাদের টুয়েলভথ ম্যান।’
লক্ষ্যটা খুব একটা বড় ছিল না। বিশ্বকাপ জিততে বাংলাদেশের দরকাল ছিল ১৭৮ রান। এই লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে লাল-সবুজের দলের যুবারা বেশ আত্মবিশ্বাসী শুরু করে। মাঝখানে দ্রুত উইকেট হারিয়ে বেশ চাপে পড়ে গেলেও ইমন ও আকবরের চমৎকার ব্যাটিং দৃঢ়তায় তিন উইকেটের দারুণ জয় ঘরে তোলে বাংলাদেশ। জিতে নেয় স্বপ্নের বিশ্বকাপ।
যা পারেননি সাকিব, তামিম, মুশফিক ও মিরাজরা, তা করে দেখালেন ইমন, শাহাদাত ও জয়রা। বৈশ্বিক কোনো আসরে শুধু ফাইনালেই উঠেনি, ইতিহাস গড়েছে বাংলাদেশের যুবারা।
চার বছর আগে ঘরের মাঠে সেমিফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হেরে চোখের জলে মাঠ ছেড়েছিলেন লাল-সবুজের দলের যুবারা। চার বছর পর দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে সাফল্যে উদ্ভাসিত হলেন যুবারা।