সানাকে রাজনীতিতে জড়াবেন না : সৌরভ
প্রখ্যাত লেখক খুশবন্ত সিংয়ের ‘দি এন্ড অব ইন্ডিয়া’ গ্রন্থের একটি অংশ নিজের ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করেন সাবেক ক্রিকেটার ও ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলীর মেয়ে সানা গাঙ্গুলী। এরই মধ্যে সানার পোস্টটি বেশ ঝড় তুলেছে ইন্টারনেট দুনিয়ায়। পোস্টটি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে গণমাধ্যমেও। সানার পোস্টটিকে অনেকেই ভারতে সদ্য পাস হওয়া নাগরিক সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে করা মন্তব্য বলে ব্যাখ্যা করেন।
এমন পরিস্থিতিতে মেয়ের পোস্ট নিয়ে টুইট করেছেন সৌরভ গাঙ্গুলী। তাঁর দাবি, সানার ইনস্টাগ্রামের পোস্টটি ভারতের বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে নয়। ১৮ বছর বয়সী সানাকে রাজনীতির সঙ্গে না জড়ানোরও অনুরোধ করেছেন দেশটির সাবেক ক্রিকেটার।
এক টুইট বার্তায় ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি লিখেছেন, ‘দয়া করে সানাকে এ ধরনের ইস্যুর সঙ্গে জড়াবেন না। তাঁর পোস্ট সম্পর্কে যেমনটা বলা হচ্ছে, তা সত্য নয়। রাজনীতি সম্পর্কে কিছু জানার বয়স তাঁর হয়নি।’
ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপির করা নাগরিকত্ব আইন নিয়ে দেশটিতে শুরু হয়েছে বিক্ষোভ। দেশটির রাজধানী দিল্লিসহ বিভিন্ন শহরে শুরু হয়েছে বিক্ষোভ ও সংঘর্ষ। দিল্লির জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হয়েছে পুলিশের হামলা। ওই প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সুর মিলিয়েছেন দেশটির একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব।
এর মধ্যেই প্রখ্যাত লেখক খুশবন্ত সিংয়ের ‘দি এন্ড অব ইন্ডিয়া’ গ্রন্থের একটি অংশ নিজের ইনস্টাগ্রামে তুলে ধরেছেন সানা। আর সৌরভকন্যার ওই পোস্ট নিয়ে রীতিমত হৈচৈ পড়ে গেছে। সংবাদমাধ্যম ‘দি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’ ও ‘আনন্দবাজার’ ওই তথ্য দিয়েছে।
সানার দেওয়া খুশবন্ত সিংয়ের লেখার ওই অংশটুকু ইংরেজিতে। যার বাংলা হচ্ছে, ‘প্রতিটা ফ্যাসিস্ট সরকারের একটা দল বা গোষ্ঠীর প্রয়োজন হয়। নিজেদের বেড়ে ওঠার জন্য তারা ওই দল বা গোষ্ঠীগুলোকে ব্যবহার করতে তাদের শয়তানেও পরিণত করে। দু-একটা দল দিয়ে এটা শুরু হয়। কিন্তু সেটা কখনোই সেখানে শেষ হয় না। ঘৃণার ওপর নির্ভর করে যে আন্দোলন, সেই আন্দোলন নিজেকে ধরে রাখতে পারে অবিরাম একটা ভয় বা দ্বন্দ্বের বাতাবরণ তৈরি করে।’
উদ্ধৃত অংশে আরো আছে, ‘আজ যারা আমরা নিজেদের নিরাপদ মনে করছি, ভাবছি আমরা তো মুসলমান বা খ্রিস্টান নই, তারা মূর্খের স্বর্গে বাস করছি। সংঘ এরই মধ্যে বামপন্থী ইতিহাসবিদ এবং পশ্চিমা সংস্কৃতিতে বিশ্বাসী যুবসমাজকে টার্গেট করেছে। কাল তাদের ঘৃণা গিয়ে পড়বে স্কার্ট পরিহিত মহিলা, যাঁরা মাংস খান, মদ্যপান করেন, বিদেশি সিনেমা দেখেন, বছর বছর তীর্থে যান না, দাঁতনের পরিবর্তে টুথপেস্ট ব্যবহার করেন, আয়ুর্বেদিকের বদলে অ্যালোপ্যাথি ওষুধ পছন্দ করেন, দেখা হলে জয় শ্রী রাম বলার বদলে হাত মেলান বা চুম্বন করেন, তাঁদের ওপর। কেউ নিরাপদ নয়। ভারতকে বাঁচাতে হলে এগুলো আমাদের ভীষণভাবে অনুধাবন করতে হবে।’