শেষ বিকেলে এক উইকেট নিয়েই স্যালুট!
ইন্দোর টেস্টের উইকেট যে পেসবান্ধব হবে, সেটার আভাস আগে থেকেই ছিল। যার কারণে তিন পেসার নিয়ে একাদশ সাজায় ভারত। তবে বাংলাদেশ সে পথে হাঁটেনি। ঘাসের ছোঁয়া থাকায় উইকেটে পেসারদের সুবিধা থাকবে জানার পরও দুই পেসার নিয়ে একাদশ সাজায় বাংলাদেশ।
তাতে ফলাফলও এসেছে তেমন। ভারতীয় পেস আক্রমণে দিশেহারা বাংলাদেশ আটকে যায় মাত্র ১৫০ রানে। সেখানে দুই পেসার দিয়ে তেমন সুবিধায় নেই বাংলাদেশ। সে ক্ষেত্রে আবু জায়েদ রাহি সফল ছিলেন। তুলে নিয়েছেন চারটি উইকেট। কিন্তু আরেক পেসার এবাদত হোসেন উইকেটে সুবিধা করতে পারেননি। গতকাল শেষ বিকেল থেকে আজ পর্যন্ত ৩১ ওভার ব্যাট করে ১১৫ রান দিয়েছেন। বিনিময়ে আজ দিনের শেষভাগে উইকেট পেয়েছেন একটি। ১২ রানে আউট করেছেন ঋদ্ধিমান সাহাকে। তবে মজার ব্যাপার হলো, ঋদ্ধিমানকে ফিরিয়েই উল্লাসের ভঙ্গিতে স্যালুট করেন তিনি। এত ব্যর্থতার মাঝে এমন উদযাপন হাসির কারণ হতে পারে বটে।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বেশিদিন হয়নি এবাদত হোসেনের। এর আগে দেশের জার্সিতে দুই ম্যাচ খেলে মাত্র একটি উইকেট পেয়েছেন তিনি।
এদিকে ইন্দোর টেস্টে হতাশার প্রথম দিনের পর দ্বিতীয় দিনের শুরুতে চমক দেখিয়েছেন আবু জায়েদ রাহি। প্রথম সেশনেই তুলে নিয়েছেন চেতেশ্বর পুজারা ও বিরাট কোহলির গুরুত্বপূর্ণ উইকেট। কিন্তু চতুর্থ উইকেটে মায়াঙ্ক আগারওয়াল ও অজিঙ্কা রাহানের ব্যাটে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় ভারত। বিকেলের সেশনে সেই জুটি ভাঙলেও লাভ হয়নি বাংলাদেশের। ততক্ষণে ইন্দোর টেস্ট নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নিয়েছে বিরাট কোহলির দল।
শেষ পর্যন্ত ৬ উইকেটে ৪৯৩ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিন শেষ করে ভারত। উইকেটে ৫০ রানে অপরাজিত ছিলেন জাদেজা। তাঁর সঙ্গে ২৪ রানে ছিলেন উমেশ যাদব। ৩৪৩ রানের লিড নিয়ে আগামীকাল শনিবার তৃতীয় দিন শুরু করবে স্বাগতিকরা।
আজ শুক্রবার দিনের শুরুতে চমক দেখিয়েছেন বাংলাদেশি পেসার আবু জায়েদ চৌধুরী। সকালের শুরুতে ফিরিয়েছেন চেতেশ্বর পুজারাকে। এরপর উইকেটে আসা কোহলিকে এক রানও করতে দিলেন না রাহি। অফ স্টাম্পের বাইরের বল কোহলি হয়তো ভাবতে পারেননি এতটা ভেতরে ঢুকবে। কোহলি ডিফেন্স করতে চাইলেন। কিন্তু বল কোহলিকে ফাঁকি দিয়ে লাগে পেছনের পায়ে। সঙ্গে সঙ্গে জোরালো আবেদন করে বাংলাদেশ। তাতে সাড়া দেননি আম্পায়ার। পরে রিভিউ নিলে ফলাফল আসে বাংলাদেশের পক্ষে। শূন্য রানে আউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন কোহলি।
পরের দুই সেশন বাংলাদেশি বোলারদের যথেষ্ট ভোগান আগারওয়াল মায়াঙ্ক ও অজিঙ্কা রাহানের জুটি। চতুর্থ উইকেটে মায়াঙ্কের সঙ্গে ১৯০ রানের জুটি গড়েন রাহানে। দুই ব্যাটসম্যানে ভর করে বড় লিডের পথে এগোচ্ছিল ভারত। উইকেট পাওয়া তো দূরের কথা, দুই ব্যাটসম্যানকে কোনো পরীক্ষায়ই ফেলতে পারছিলেন না বাংলাদেশের বোলাররা। সে মুহূর্তে অজিঙ্কা রাহানেকে আউট করলেন রাহি। চা বিরতির পর তাইজুলের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। এ নিয়ে চারটি উইকেট শিকার করলেন এই বাংলাদেশি পেসার।
এর মধ্যে ডাবল সেঞ্চুরি করেন মায়াঙ্ক। ডাবল সেঞ্চুরির পর আরো ভয়ংকর হয়ে ওঠেন তিনি। শেষ সেশনে মায়াঙ্ক ঝড় থামান মেহেদী হাসান মিরাজ। এরপর উইকেটের দেখা পান এবাদত। কিন্তু শেষ সেশনে উইকেট নিয়ে তেমন লাভ হয়নি বাংলাদেশের। কারণ চতুর্থ উইকেটেই বড় সংগ্রহের ভিত গড়ে নেয় স্বাগতিকরা।