মুমিনুলের ব্যাটে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ
তামিম-শান্তর ব্যাটে শুরুর ধাক্কা বেশ ভালোভাবেই কাটিয়ে ওঠে বাংলাদেশ। এই জুটিতে দ্বিতীয় সেশনের অনেকটা সময় পার করে স্বাগতিকরা। কিন্তু আশা দেখিয়েও দলকে বেশি দূর নিতে পারলেন না তামিম ইকবাল। ফিরে যান ৪১ রানে। বাঁহাতি ওপেনারের ফেরায় বাংলাদেশের হাল ধরেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। এরই মধ্যে ব্যক্তিগত হাফসেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন তিনি। তাঁর ব্যাটে ভর করে প্রথম ইনিংসে লড়ছে বাংলাদেশ।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বাংলাদেশের সংগ্রহ তিন উইকেটে ১৯৪ রান।
আজ রোববার দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। ইনিংসের চতুর্থ ওভারে হারায় ওপেনার সাইফ হাসানের উইকেট। অফস্টাম্পের বাইরের বলে সাইফের ব্যাটের কানা ছুঁয়ে বল চলে যায় চাকাভার গ্লাভসে। সাইফ ফেরেন ৮ রানে। সাইফকে হারানোর ধাক্কা সামলে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে লড়ছে বাংলাদেশ। তামিম ও শান্ত দ্বিতীয় উইকেটে তোলেন ৭৮ রান। এরপর ৪১ রানে আউট হন তামিম।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে আজ দ্বিতীয় দিন দারুণ শুরু করে বাংলাদেশ। দিনের প্রথম ঘণ্টাতেই চমক দেখান পেসার আবু জায়েদ রাহি। দ্রুত তুলে নেন দুই উইকেট। তাঁর সঙ্গে দুটি উইকেট পেলেন তাইজুল ইসলামও। ফলে দ্বিতীয় দিনের প্রথম দেড় ঘণ্টাতেই ২৬৫ রানেই অলআউট হয় জিম্বাবুয়ে।
গতকাল শনিবার প্রথম দিন দারুণ করেছে জিম্বাবুয়ে। খারাপ কাটেনি বাংলাদেশেরও। স্পোর্টিং উইকেটে বড় সংগ্রহ গড়তে যাওয়া জিম্বাবুয়ের ছন্দ ভেঙেছেন অফস্পিনার নাঈম হাসান। লম্বা স্পেলে বোলিংয়ে শেষ বিকেলে চমক দেখান নাঈম, ফেরান সেঞ্চুরিয়ান ক্রেইগ আরভিনকে। ফলে স্বস্তি নিয়ে মিরপুর টেস্টের প্রথম দিন শেষ করে বাংলাদেশ।
প্রথম দিন শেষে ৬ উইকেটে ২২৮ রান সংগ্রহ করে জিম্বাবুয়ে। দিন শেষে শূন্য রানে উইকেটে ছিলেন ট্রিপিয়ানো ও ৯ রানে অপরাজিত ছিলেন চাকাভা। ৫ উইকেট হাতে নিয়ে আজ রোববার দ্বিতীয় দিন শুরু করে জিম্বাবুয়ে। তবে দিনের শুরুতেই ট্রিপিয়ানোকে হারায় সফরকারীরা। তাঁকে ফেরান আবু জায়েদ রাহি। উইকেট হারালেও অতিথিদের লক্ষ্য ছিল ইনিংসটাকে লম্বা করার। অন্যদিকে, বাংলাদেশের লক্ষ্য ছিল জিম্বাবুয়েকে দ্রুত অলআউট করার। কিন্তু সেই দিক দিয়ে সফল বাংলাদেশ। দিনের শুরুতেই অতিথিদের অলআউট করেছে স্বাগতিকরা।
এর আগে গতকাল মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে টস জিতে বাংলাদেশকে বোলিংয়ে পাঠায় জিম্বাবুয়ে। আগে ব্যাট করার সুবিধা বেশ ভালোভাবেই কাজে লাগায় সফরকারীরা। উইকেটে কিছুটা ঘাস থাকায় প্রথম দিকে বেশ সুবিধা ছিল বাংলাদেশি পেসারদের জন্য। কিন্তু সেই সুবিধা নিতে পারেননি স্বাগতিকরা।
ইনিংসের শুরুটা বেশ সাবধানে করে জিম্বাবুয়ে। রানের দিকে না তাকিয়ে উইকেটে থিতু হতে চেয়েছেন দুই ওপেনার কেভিন কাসুজা ও প্রিন্স মাসভরে। প্রথম ছয় ওভারে তাঁরা নিয়েছেন কেবল এক রান। সেই রানটিও এসেছে ওয়াইড থেকে। অষ্টম ওভারে এসে প্রথম উইকেটের দেখা পায় বাংলাদেশ।
বাংলাদেশকে প্রথম সাফল্য এনে দেন আবু জায়েদ রাহি। অষ্টম ওভারে রাহির বলে নাঈম হাসানের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান কেভিন কাসুজা। ফেরার আগে ২৪ বলে ২ রান করেন তিনি।
অধিনায়ক ক্রেইগ আরভিন ও মাসভরের দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে দারুণভাবে এগিয়ে যায় জিম্বাবুয়ে। দ্বিতীয় জুটি ভাঙতে বেশ ধুঁকতে হয়েছে বাংলাদেশের বোলারদের। দুজন মিলে এ জুটিতে তোলেন ১১১ রান। শেষ পর্যন্ত অফস্পিনার নাঈম ভাঙেন শতরানের এই জুটি।
এরপর ব্যাটিং করতে নামা ব্রেন্ডন টেইলরকেও টিকতে দেননি নাঈম। ১০ রান করা টেইলরকে সরাসরি বোল্ড করেন তিনি। প্রথম সেশনে দাপট দেখানো জিম্বাবুয়ে শিবিরে জোড়া আঘাত আনেন তরুণ এই অফস্পিনার। টিকতে দেননি সিকান্দার রাজাকেও। নাঈমের বল কাট করতে গিয়ে উইকেটকিপারের হাতে ক্যাচ তুলে দেন সিকান্দার।
অবশ্য গুরুত্বপূর্ণ তিন উইকেট হারালেও অধিনায়ক আরভিন টেনেছেন জিম্বাবুয়েকে। আস্থার সঙ্গে খেলে তুলে নেন ক্যারিয়ারের তৃতীয় টেস্ট সেঞ্চুরি। তিন অঙ্কের ঘরে যেতে ২১৩ বল খেলেছেন জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক, যাতে ছিল ১৩টি বাউন্ডারি। ১০৭ রান করে নাঈমের বলে ফেরেন তিনি। অধিনায়কের ফেরার পর শেষ পর্যন্ত ২২৮ রানে প্রথম দিন শেষ করে জিম্বাবুয়ে।
বাংলাদেশের হয়ে বল হাতে চারটি উইকেট নেন নাঈম হাসান। আবু জায়েদ রাহি নেন দুটি উইকেট।
জিম্বাবুয়ে প্রথম ইনিংস : ২৬৫ (কেভিন ২, মাসাভরে ৬৪, আরভিন ১০৭, সিকান্দার ১৮, টেইলর ১০, মারুমা ৭, চাকাভা ৩০, ট্রিপিয়ানো ৮, চার্লটন ০, ভিক্টর ৬; এবাদত ১৭-৮-২৬-০, রাহি ২৪-৬-৭১-৪, নাঈম ৩৮-৯-৭০-৪, ২৭.৩-১-৯০-২)।