রানের পাহাড় গড়ে বাংলাদেশের ইনিংস ঘোষণা
দিনের শুরুটা ছিল মুমিনুল হকে। আর শেষটা রাঙালেন মুশফিকুর রহিম। একজন করেন সেঞ্চুরি, আরেকজন ডাবল সেঞ্চুরি। দুই অভিজ্ঞব্যাটসম্যানের সেঞ্চুরিময় দিনে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে ৫৬০ রানের বিশাল সংগ্রহ নিয়ে ইনিংস ঘোষণা করল বাংলাদেশ।
৫৬০ রানের সংগ্রহে ২৯৫ রানের বিশাল লিড পেয়েছে বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংস শেষে ২০৩ রানে অপরাজিত ছিলেন মুশফিক। তাঁর সঙ্গে ১৪ রানে অপরাজিত ছিলেন তাইজুল ইসলাম।
আজ ব্যাট করতে নেমে প্রথম সেশনেই সেঞ্চুরির দেখা পান মুমিনুল। ডোনাল্ড ট্রিপিয়ানোকে কাভার ড্রাইভে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে সেঞ্চুরিতে পৌঁছান তিনি। টেস্টে বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যানের এটি নবম সেঞ্চুরি। ২০৮ মিনিটে ১৫৬ বলে তিন অঙ্ক স্পর্শ করেন মুমিনুল, যাতে ছিল ১২টি বাউন্ডারি।
১৪ ইনিংস খেলার পর সেঞ্চুরি পেয়েছেন মুমিনুল। শেষ সেঞ্চুরি করেছেন ২০১৮ সালের নভেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে।
এরপর লাঞ্চ থেকে ফিরেই সেঞ্চুরির দেখা পান মুশফিক। অ্যানস্লের বলে বাউন্ডারি মেরে তিন অঙ্কের ঘরে যান এই উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান।
মুশফিকের টেস্ট ক্যারিয়ারের সপ্তম সেঞ্চুরি এটি। শতকের ঘরে যেতে মুশফিক খেলেন ১৬০ বল। ২১৩ মিনিটের ইনিংসে ছিল ১৮টি বাউন্ডারি। শেষ এই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মিরপুরেই সেঞ্চুরি করেছিলেন মুশফিক। ২০১৮ সালে সে ইনিংসে মুশফিক ২১৯ রানের ইনিংস খেলেছেন। দীর্ঘ ১০ ইনিংস পর আবারো সেঞ্চুরির দেখা পেলেন অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটার।
মুমিনুলের শতরানের ইনিংস থামে লাঞ্চের পর। লাঞ্চ থেকে ফিরে ১৩২ রানে সাজঘরে ফেরেন অধিনায়ক। ৩২৮ মিনিট ব্যাট করে মুমিনুল খেলেছেন ২৩৪ বল। যার মধ্যে আছে ১৪টি বাউন্ডারি। মুমিনুলের পর ব্যাট করতে নামা মিঠুন অবশ্য টিকতে পারেননি। ২৩ বল মোকাবিলা করে তিনি ফিরে যান ১৭ রান।
এরপর লিটনের সঙ্গে জুটি বাধেন মুশফিক । শেষ সেশনে ২৫৪ বলে ১০৫-এর ঘরে যান মুশফিক। এরপর ৩১৫ বলে ডাবল সেঞ্চুরি করেন মুশফিক। ৫৬০ রানের বিশাল সংগ্রহের পর ইনিংস ঘোষণা করে বাংলাদেশ।
এরআগে প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ২৬৫ রান সংগ্রহ করে জিম্বাবুয়ে। দ্বিতীয় দিন ব্যাট প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ২৪০ রানে দিন শেষ করে বাংলাদেশ। গতকাল প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। ইনিংসের চতুর্থ ওভারে হারায় ওপেনার সাইফ হাসানের উইকেট। অফস্টাম্পের বাইরের বলে সাইফের ব্যাটের কানা ছুঁয়ে বল চলে যায় চাকাভার গ্লাভসে। সাইফ ফেরেন ৮ রানে।
সাইফকে হারানোর ধাক্কা কাটিয়ে প্রতিরোধ গড়েন তামিম ইকবাল ও নাজমুল হোসেন শান্ত। এই জুটিতে দ্বিতীয় সেশনের অনেকটা সময় পার করে স্বাগতিকরা। কিন্তু আশা দেখিয়েও দলকে বেশি দূর নিতে পারেননি তামিম ইকবাল, ফিরে যান ৪১ রানে। এর মধ্যে ব্যক্তিগত ২৭ রানের মাথায় অনন্য রেকর্ড গড়েন তামিম। প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে প্রবেশ করেন ১৩ হাজার রানের ঘরে। তবে ইতিহাস গড়ার দিন বেশি দূর যেতে পারলেন না বাঁহাতি ওপেনার।
তামিম ফিরলেও উইকেটে থিতু হয়ে ছিলেন শান্ত। ১০৮ বলে তুলে নেন নিজের ব্যক্তিগত হাফসেঞ্চুরি। আস্থার সঙ্গে খেলতে থাকা শান্তর প্রতিরোধ ভাঙেন চার্লটন। ৪৯.৪তম ওভারে উইকেটকিপার চাকাভার হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে যান শান্ত। ফেরার আগে ১৩৯ বলে সাত বাউন্ডারিতে ৭১ রান করেন তিনি।
শান্ত-তামিমকে হারানোর পর জুটি বাঁধেন মুমিনুল হক ও মুশফিক। এই জুটিতে দিনের শেষ সেশন পার করে দেয় বাংলাদেশ।