বিপদে পড়লে আগে মাশরাফীর কাছেই যাবেন তামিম
খেলার মাঠে তাঁরা সতীর্থ। মাঠের বাইরেও দুজনের সম্পর্ক বেশ ঘনিষ্ঠ। এবার আরেকটি জায়গায় মিলে গেলেন দুজন। মাশরাফী বিন মোর্ত্তজার পর এবার বাংলাদেশ ওয়ানডে দলের নেতৃত্ব পেলেন তামিম ইকবাল।
কদিন আগে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে নেতৃত্বকে বিদায় জানালেন মাশরাফী। সেই পথ ধরে অধিনায়ক হলেন তামিম। তবে মাশরাফী দায়িত্বে না থাকলেও নতুন অধিনায়কের পথ প্রদর্শক হয়ে থাকবেন ঠিকই। তামিম নিজেই জানালেন বিপদে পড়লে সবার আগে মাশরাফীকেই ফোন করবেন।
নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান তামিম। তবে লম্বা ক্যারিয়ারে সাফল্যের সঙ্গে মুদ্রার উল্টা পিঠও দেখেছেন তিনি। সেই খারাপ সময়ে তাঁকে আগলে রেখেছেন মাশরাফী। এবার মাশরাফী নন, অধিনায়কের ভূমিকায় তামিম নিজে। তবুও বিপদে পড়লে ছুটে যাবেন মাশরাফীর কাছে।
তামিমের কথায়, ‘একদিক থেকে আমি খুব ভাগ্যবান, ওনার (মাশরাফীর) সঙ্গে আমার খুব ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। কাছ থেকে অনেক কিছু দেখেছি। একসঙ্গে অনেক ম্যাচ খেলেছি। তার চিন্তা, ধরন এসব একটু হলেও জানি। আমি চেষ্টা করব যতটা সম্ভব তাঁর কাছ থেকে নেওয়া যায়। তাঁর মতো নেতৃত্ব দেওয়া খুব কঠিন। তবে আমি যদি কখন বিপদে পড়ি, প্রথমেই তাকে ফোন করব। তাঁর কাছ থেকে পরামর্শ নেওয়ার চেষ্টা করব।’
এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল অধিনায়ক মাশরাফী। নেতৃত্বের শেষ ম্যাচেও অধিনায়ক হিসেবে পেয়েছেন ৫০তম জয়। এই ছন্দ ধরে রাখা নতুন অধিনায়কের জন্য বেশ চ্যালেঞ্জের। তামিম নিজেও মানছেন মাশরাফীকে ছোঁয়া কঠিন, তবুও নিজের সেরাটা দিয়ে চেষ্টা করবেন তিনি,‘তাঁকে (মাশরাফী) স্পর্শ করা হবে খুব কঠিন। এখনই যদি আমার কাছে আশা করেন যে ওই লেভেলে চলে যেতে হবে, তাহলে সেটি আমার প্রতি আনফেয়ার হবে। আমি চেষ্টা করব। বলছি না যে আমি পারব না বা এই দল পারবে না। তবে সময় লাগবে। এটি এমন ব্যাপার যে রাতারাতি বদলানো যায় না। পৃথিবীর সব জায়গায় দেখতে পারেন। আশা করব, যত কম সময় আমার লাগবে, তত ভালো হবে আমার জন্য, দলের জন্যও।’
তামিম আরো বলেন, ‘আমার যদি ১০টি ভালো গুণ থাকে, কিন্তু দল ভালো না করে, ওই ১০ ভালো গুণ কখন সামনে আসবে না। নেতিবাচকগুলোই সামনে আসবে। মাশরাফী ভাইয়ের ২০টি ভালো গুণ ছিল। সবকিছু সামনে কেন এসেছে? কারণ তার দল ভালো করেছে। নিজেও ভালো করেছেন। যখন দল ভালো করে, অধিনায়ক নিজে ভালো করেন, তখন তার সব ভালো গুণ সামনে চলে আসে।’
এতদিন ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স খারাপ হলে সমালোচনার মুখে পড়তেন। এবার পুরো দলের দায়িত্ব তাঁর উপর। কঠিন চ্যালেঞ্জ নেওয়ার আগে তামিম জানালেন, কিছুটা সময় চাই তাঁর,‘সমালোচনা হবেই। এত দিন সমালোচনা হয়েছে আমার ব্যাটিং নিয়ে। এখন সমালোচনা হলে হবে দুটি দিক নিয়ে। আমি এই কথাটিই বারবার বলছি যে ব্যাটিং নিয়ে সমালোচনা হতেই পারে। সেটি আলাদা ব্যাপার। কিন্তু অধিনায়কত্বের বেলায় আমাকে সময় দিতে হবে। এমন নয় যে আমি বছরের পর বছর (অধিনায়কত্ব) করে আসছি। এখানে আমাকে সময় দেওয়া উচিত। দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার সেরা উপায় হলো সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়া, পারফরম্যান্স দিয়ে। দল ভালো করছে, কিন্তু আমি করছি না, এমন হলে সেই অধিনায়কের এগিয়ে যাওয়া কঠিন। আমি চেষ্টা করব। চেষ্টাই কেবল করতে পারি। ফল তো অনেক সময় হাতে থাকে না।’