ফুটবলারদের পাশে দাঁড়িয়ে ফিফপ্রোর কড়া বার্তা
ইউরোপিয়ান ফুটবলে টালমাটাল অবস্থা শুরু হয়েছে। অনেকটা বিপ্লব ঘটিয়েই আসতে যাচ্ছে ইউরোপীয় সুপার লিগ। যাতে নাম লিখিয়েছে বড় বড় ক্লাবগুলো। এমন পরিস্থিতি নিয়ে শক্ত অবস্থানে দাঁড়িয়েছে ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও ইউরোপীয় ফুটবল নিয়ন্ত্রক সংস্থা (উয়েফা)।
দুই পক্ষ থেকে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, ইউরোপীয় সুপার লিগে যে ক্লাবগুলো অংশ নেবে, তাদের উয়েফার সব ধরনের প্রতিযোগিতা থেকে নিষিদ্ধ করা হবে। এমনকি ওইসব দলের ফুটবলারদের জাতীয় দল থেকেও নিষিদ্ধ করার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। এমন পরিস্থিতি নিয়ে মুখ খুলেছে পেশাদার ফুটবলারদের আন্তর্জাতিক সংগঠন ফিফপ্রো। মূলত খেলোয়াড়দের কোনো অধিকার নিয়ে বাধা এলে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি।
মোট ২০টি দল অংশ নেবে সুপার লিগে। তবে এখন পর্যন্ত ১২টি ক্লাবটি সুপার লিগে অংশ নেওয়ার জন্য সম্মতি জানিয়েছে। এর মধ্যে ছয়টি ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব। তিনটি লা লিগার ও তিনটি ক্লাব সিরি এ-র। দলগুলো হলো : রিয়াল মাদ্রিদ, বার্সেলোনা, অ্যাথলেটিকো মাদ্রিদ, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, চেলসি, টটেনহ্যাম, আর্সেনাল, এসি মিলান, ইন্টার মিলান, জুভেন্টাস, লিভারপুল, ম্যানচেস্টার সিটি। অবশ্য তালিকায় নেই জার্মানি ও ফ্রান্সের কোনো ক্লাব।
এমন পরিস্থিতি নিয়ে খেলোয়াড়দের পক্ষে দাঁড়িয়ে ফিফপ্রো এক বিবৃতিতে লিখেছে, ‘এই (সুপার লিগের) সিদ্ধান্ত কেবল ফুটবলের কাঠামোতে ও সাংস্কৃতিক পরিচয়ে নয়, খেলোয়াড়দের ক্যারিয়ারের ওপর ব্যবহারিকভাবে কেমন প্রভাব ফেলবে, তা নিয়ে খেলোয়াড় এবং তাদের সংগঠনগুলোর মধ্যে অনেক উদ্বেগ ও প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। ফুটবল তার নিজস্ব সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের উপর দাঁড়িয়ে আছে। এটা কেবল সমর্থকদের সঙ্গে ফুটবলের অতুলনীয় সম্পর্কই তৈরি করে দেয়নি, অন্য যেকোনো খেলাধুলার চেয়ে পেশাদার এই খেলাটির বিস্তারের চালিকাশক্তিও তৈরি করেছে। এটা টিকিয়ে রাখতে হলে ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতাগুলোর মধ্যে একটি স্বাস্থ্যকর ও সংহতিপূর্ণ সহযোগিতা জরুরি। তা অগ্রাহ্য করে নতুন কোনো প্রতিযোগিতা আয়োজনে হতে পারে অপূরণীয় ক্ষতি। এটি লক্ষ করা গুরুত্বপূর্ণ যে, ইউরোপিয়ান ফুটবলের সম্ভাব্য ভাঙনের এই বিন্দুতে উপস্থিত হওয়া এমন একটি শাসন পদ্ধতির প্রতিচ্ছবি, যেখানে কিছু লোকেরা অসামঞ্জস্যপূর্ণ ক্ষমতা উপভোগ করছে এবং যারা কিনা খেলাটির কেন্দ্রবিন্দুতে আছে, সেই খেলোয়াড়রা ও ভক্তরাসহ বেশিরভাগই অবহেলিত হচ্ছে।’
ফিফপ্রো আরও লিখেছে, ‘বরাবরই আলাপ-আলোচনার ক্ষেত্রে খেলোয়াড়দের সম্পদ ও উদ্দেশ্য পূরণের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে আসছে। ফিফপ্রো, খেলোয়াড়দের ৬৪টি জাতীয় অ্যাসোসিয়েশন ও যে ৬০ হাজার খেলোয়াড়ের প্রতিনিধি আমরা, সবার কাছে এটি অগ্রহণযোগ্য। যেকোনো পক্ষের নেওয়া খেলোয়াড়দের স্বার্থবিরোধী পদক্ষেপ, যেমন- জাতীয় দল থেকে তাদের বাদ দেওয়ার মতো সিদ্ধান্তের কঠোর বিরোধিতা করব আমরা।’