ড্রয়ের ম্যাচেও দারুণ রোমাঞ্চ
ম্যাচ জয়ের জন্য শেষ দিনে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৭১ ওভারে ২৮৬ রানের লক্ষ্য দিয়েছিল ইংল্যান্ড। এই লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ৬৭ রানে চার উইকেট হারিয়ে ফেলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এই অবস্থায় জয়ের স্বপ্ন দেখছিল ইংল্যান্ড। তবে পঞ্চম উইকেট জুটির দৃঢ়তায় ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারের কবল থেকে রক্ষা করেন এনক্রুমার বোনার ও জেসন হোল্ডার। তাই তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্ট ড্রতে শেষ হয়।
অ্যান্টিগায় ব্যাটার জ্যাক ক্রলির সেঞ্চুরির সঙ্গে অধিনায়ক জো রুটের হাফসেঞ্চুরিতে চতুর্থ দিন শেষে নয় উইকেট হাতে নিয়ে ১৫৩ রানে এগিয়েছিল ইংল্যান্ড। তাদের স্কোর ছিল এক উইকেটে ২১৭ রান। ক্রলি ১১৭ ও রুট ৮৪ রানে অপরাজিত ছিলেন। সেঞ্চুরির অপেক্ষা নিয়ে চতুর্থ দিন শেষ করেছিলেন রুট।
শেষ দিনে ১১তম ওভারে ১১৫ ম্যাচের টেস্ট ক্যারিয়ারে ২৪তম সেঞ্চুরি তুলে নেন রুট। তিন অঙ্কে পা দিতে ১৮৮ বল খেলেন তিনি। রুটের সেঞ্চুরির আগেই প্যাভিলিয়নে ফিরেন ক্রলি ও ডেন লরেন্স। ১২১ রানে ক্রলিকে হোল্ডার ও লরেন্সকে ৩৭ রানে আউট করেন জোসেফ। রুটও থেমে যান ব্যক্তিগত ১০৯ রানে। জোসেফের দ্বিতীয় শিকার হন তিনি। রুট-ক্রলি দ্বিতীয় উইকেটে ২০১ রান যোগ করতে পেরেছিলেন।
রুটের আউটের পর বেন স্টোকস ১৩ ও উইকেটরক্ষক বেন ফোকস ১ রান করে আউট হন। তবে ৮৯তম ওভারে ৬ উইকেটে ৩৪৯ রানে ইনিংস ঘোষণা করে ইংল্যান্ড। জনি বেয়ারস্টো ১৫ ও ক্রিস ওকস ১৮ রানে অপরাজিত থাকেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের জোসেফ ৭৮ রানে তিনটি, রোচ ৫৩ রানে দুটি উইকেট নেন।
ইনিংস ঘোষণা করে দিনের শেষ দুই সেশনে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৭১ ওভারে ২৮৬ রানের জয়ের লক্ষ্য দেয় ইংল্যান্ড। ক্যারিবীয় দুই ওপেনার ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট ও জন ক্যাম্পবেল ৫৯ রানের শুরু এনে দেন। এরপরই মিনি ধস নামে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ইনিংসে। ৮ রানের ব্যবধানে ৪ উইকেট হারায় স্বাগতিকরা। এতে জয়ের স্বপ্ন দেখতে শুরু করে ইংল্যান্ড। কারণ তখনও দিনের প্রায় ৩৬ ওভার খেলা বাকি ছিল।
তবে ইংল্যান্ডের জয়ের স্বপ্নে পানি ঢেলে দেন প্রথম ইনিংসে লড়াকু সেঞ্চুরি করা বোনার ও হোল্ডার। প্রথম ইনিংসেও বোনার-হোল্ডারের ২১৫ বলে ৭৯ রানের জুটি ওয়েস্ট ইন্ডিজকে খেলায় ফিরিয়ে ছিল।
এবারও ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হার থেকে রক্ষা করতে ইংল্যান্ডের বোলারদের সামনে দাঁড়িয়ে যান বোনার ও হোল্ডার। এবারো অবিচ্ছিন্ন ২১৫ বল খেলে ইংল্যান্ডকে জয় বঞ্চিত করেন তারা। জুটিতে রান উঠেছিল ৮০। ৭০.১ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজ করতে পারে ৪ উইকেটে ১৪৭ রানন।
বোনার আটটি চার ১৩৮ বল খেলে ৩৮ রানে অপরাজিত থাকেন। তিনটি চারে ১০১ বলে ৩৭ রানে অপরাজিত থাকেন হোল্ডার। ইংল্যান্ডের জ্যাক লিচ ৫৭ রানে ৩ উইকেট নেন। প্রথম ইনিংসে ১২৩ রান করা বোনার হয়েছেন ম্যাচসেরা।
এই ড্রয়ের পর বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে ৫ ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ১১ ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট ইংল্যান্ডের। দুদলেই পয়েন্ট টেবিলের সর্বশেষ দুটি স্থানে আছে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
ইংল্যান্ড : ৩১১ ও ৩৪৯/৬ ডি. ৮৮.২ ওভার (ক্রলি ১২১, রুট ১০৯*, জোসেফ ৩/৭৮)।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ : ৩৭৫ ও ১৪৭/৪, ৭০.১ ওভার (বোনার ৩৮*, ব্র্যার্থওয়েট ৩৩, লিচ ৩/৫৭)।
ফল : ম্যাচ ড্র।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ : এনক্রুমার বোনার (ওয়েস্ট ইন্ডিজ)।