জুয়াড়িদের মাধ্যমে আইপিএলে করোনা?
ভারতে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যেই মাঠে গড়িয়েছিল আইপিএলের ১৪তম আসর। জৈব-সুরক্ষা বলয়ের মধ্যে সবকিছু ঠিকঠাকই চলছিল। হঠাৎ কলকাতা শিবির থেকে প্রথমে এলো দুঃসংবাদ। জানা গেল, দলটির দুজন করোনায় আক্রান্ত। এরপর একে একে বাকি দলগুলো থেকেও এলো করোনার দুঃসংবাদ। যার জেরে শেষ পর্যন্ত স্থগিত হয়ে গেছে বিশ্বের সবচেয়ে জমজমাট এই ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট।
কিন্তু টুর্নামেন্ট বন্ধ হওয়ার পর প্রশ্ন উঠেছে কীভাবে জৈব সুরক্ষা বলয়ের মধ্যে ঢুকল করোনাভাইরাস? কেউ সুরক্ষা বলয় ভেঙেছেন- এমন তথ্যও নেই। তাহলে কীভাবে ঢুকল প্রাণঘাতী এই ভাইরাস।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার ও ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানাল চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা গেছে, গত ২ মে দিল্লিতে যে ম্যাচ হয়েছিল সেদিনই মাঠে দুজন অতিরিক্ত ক্লিনার ঢুকেছেন। যাদের না কি জুয়াড়িরাই পাঠিয়েছিলেন।
দিল্লি অ্যান্ড ডিস্ট্রিক্ট ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন (ডিডিসিএ) অরুণ জেটলি স্টেডিয়াম পরিষ্কার রাখার দায়িত্বে সেদিন ৪০ জন কর্মীকে রেখেছিল। মোট ৪০ জনের নামই নথিভুক্ত করা হয়েছিল। কিন্তু, মোট ৪২ জন সেদিন স্টেডিয়াম রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে ছিলেন। এই বাড়তি দুজন কীভাবে ঢুকলেন? কে তাঁদের ঢুকতে দিল? এই প্রশ্নগুলো এখন উঠছে।
জুয়াড়ি সন্দেহে দিল্লি পুলিশ ওই দুজনকে গ্রেপ্তার করেছেন। জানা গেছে, ওই দুজনও অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে কর্মী হিসেবেই ছিল। সুযোগ করে তারা পিচ সংক্রান্ত নানা তথ্য জুয়াড়িদের দিত। ফলে ম্যাচ গড়াপেটা নিয়ে সন্দেহ তো রয়েছে, এবার একইসঙ্গে প্রশ্ন উঠছে এই দুজনের থেকেই আইপিএলে করোনা ছড়িয়েছে কি না?
সংবাদসংস্থা পিটিআইকে গুজরাট পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেছেন, ‘একটি ম্যাচ চলার সময় স্টেডিয়ামের একটি নিরিবিলি জায়গায় দাঁড়িয়ে সম্প্রচার এবং লাইভ অ্যাকশন চলার মধ্যে গড়াপেটা করছিল ফোনে। সেই সময়েই দুর্নীতি দমন শাখার কর্মকর্তাদের নজরে পড়েন তিনি। কী করছেন, জিজ্ঞাসা করলে জবাব দেন, বান্ধবীর সঙ্গে ফোনে কথা বলছিলেন। এরপর ফোন কেড়ে নিয়ে বিষয়টি বুঝতে পারেন কর্মকর্তারা।’
এদিকে বিসিসিআই সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলীও বুঝতে পারছেন না কীভাবে সুরক্ষা-বলয়ে করোনা ঢুকেছেন। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমার মোটেও মনে হয় না (সুরক্ষা বলয়ে ফাঁক ছিল)। আমরা যতদূর জানতে পেরেছি, সুরক্ষা-বলয় ভাঙার কোনো ঘটনা ঘটেনি। কীভাবে এতজন আক্রান্ত হলো, বুঝতে পারছি না। পাশাপাশি, এই দেশে কীভাবে এত এত লোক আক্রান্ত হচ্ছে, সেটাও বলা কঠিন।’
সৌরভ আরও বলেন, ‘পেশাদাররাই এটা সামলেছে। কিন্তু দুনিয়াজুড়েই তো পেশাদাররা এটাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারছে না। ইংল্যান্ডে যখন এটা (দ্বিতীয় ঢেউ) হলো, ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগেও অনেকের কোভিড শনাক্ত হয়েছে। ম্যানচেস্টার সিটি, আর্সেনালের ফুটবলারেরা আক্রান্ত হয়েছেন। ম্যাচের সূচি পুনর্নির্ধারিত হয়েছে। তাদের মৌসুম ছয় মাস ধরে চলে, তাদের পক্ষে নতুন সূচি করা সম্ভব। কিন্তু আমাদের মৌসুম আঁটসাঁট। তা ছাড়া বিভিন্ন দেশের ক্রিকেটারদের জাতীয় দলের জন্য ছেড়ে দিতে হয়। তাই পুনরায় সূচি করা কঠিন।’