ঘটনাবহুল ম্যাচে বাংলাদেশের ভরাডুবি
গোলাপি রঙের আভায় সাজানো পুরো ইডেন গার্ডেনস। উদ্বোধন করতে প্রধান অতিথির আসনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছিলেন বর্তমান-সাবেক অনেক রথী-মহারথী। এর মধ্যেই গোলাপি বলের ক্রিকেটে পা দিয়েছে বাংলাদেশ-ভারত।
এখানেই শেষ নয়, ঐতিহাসিক এই ম্যাচকে ঘিরে উৎসবের নগরীতে রূপ নিয়েছে কলকাতা। ম্যাচজুড়ে রয়েছে নানা আয়োজন। কিন্তু রঙিন ম্যাচের আলোতে নিজেদের রাঙাতে পারেনি বাংলাদেশ। ভারতীয় বোলারদের দুর্দান্ত বোলিংয়ের সামনে ইডেন টেস্টের প্রথম ইনিংসে ১০৬ রানেই অলআউট হয় বাংলাদেশ।
আজ শুক্রবার বিশেষ কয়েনের টসে জিতে ম্যাচটিতে আগে ব্যাট করার সাহসী সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মুমিনুল হক। কিন্তু ব্যাটিংয়ে নেমে চরম ব্যর্থতার প্রমাণ দিলেন বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানরা।
ভারতীয় বোলারদের সামনে রীতিমতো অসহায় হয়ে পড়ে বাংলাদেশ। ইনিংসের শুরুতেই ইমরুল কায়েসকে হারায় বাংলাদেশ। সপ্তম ওভারের প্রথম বলে ইমরুল কায়েসকে এলবির ফাঁদে ফেলার জোরালো আবেদন করলেন ইশান্ত শর্মা। স্বাগতিক পেসারের আবেদনে সাড়াও দেন আম্পায়ার। রিভিউ নিয়ে সেই যাত্রায় বেঁচে যান এই বাংলাদেশি ওপেনার। কিন্তু একই ওভারের ৩ নম্বর বলে আর নিজেকে রক্ষা করতে পারলেন না তিনি। ইশান্তর বলে সেই এলবির ফাঁদে পড়েই উইকেট বিলিয়ে দিলেন ইমরুল। এর আগের ম্যাচেও দুই ইনিংস মিলিয়ে মাত্র ১২ রান করেছিলেন তিনি।
দলকে ভালো কিছু উপহার দিতে পারলেন না অধিনায়ক মুমিনুল হকও। স্লিপে রোহিত শর্মার অসাধারণ ক্যাচে শূন্য রানে ফিরলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। তিনে ব্যাট করতে নেমে মোহাম্মদ মিঠুনও ফিরলেন শূন্য রানে। তিন বলের মধ্যে দুই উইকেট নেন উমেশ যাদব।
ব্যাটিংয়ের মূল আস্থা মুশফিকুর রহিমও হাল ধরতে পারেননি। ইন্দোরে বাংলাদেশের মান রাখা মুশফিক ঐতিহাসিক টেস্টে ফিরলেন শূন্য রানে। এরপরে একে একে ফিরলেন সাদমান ইসলাম ও মাহমুদউল্লাহ । ৬০ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে উইকেটে ভীষণ চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ।
এর মধ্যে সাবলীল ব্যাট করছিলেন লিটন দাস। সতীর্থদের ব্যর্থতার মাঝে ৫ বাউন্ডারিতে ২৪ রানে ব্যাট করছিলেন। তখনই মোহাম্মদ শামির বলে আহত হয়ে সাজঘরে ফিরতে হয় লিটনকে। মাথায় আঘাত পাওয়া লিটনকে পরীক্ষা করার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
লিটনের পরিবর্তনে ‘কানকাসন’ পদ্ধতিতে বদলি ব্যাটসম্যান নামানোর সুযোগ পায় বাংলাদেশ। কিন্তু শঙ্কার কথা হলো, বাংলাদেশের স্কোয়াডে একজনও বিশেষজ্ঞ ব্যাটসম্যান নেই। যাঁরা আছেন, তাঁরা সবাই বোলার। শেষ পর্যন্ত এঁদের মধ্যে থেকে বদলি খেলোয়াড় হিসেবে নামানো হয় মিরাজকে। এই স্পিনারই এখন বাংলাদেশের প্রথম বদলি ক্রিকেটার।
কিন্তু বদলি খেলোয়াড় মিরাজও তেমন ভালো করতে পারেননি। ইশান্ত শর্মার বলে ৮ রানে ফেরেন তিনি। টিকলেন না বাকিরাও। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত দ্বিতীয় সেশনেই ১০৬ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ।
ভারতের হয়ে বল হাতে ২২ রানের বিনিময়ে ৫ উইকেট নেন ইশান্ত শর্মা। ২৯ রান দিয়ে ৩ উইকেট সংগ্রহ করেন উমেশ যাদব। দুটি উইকেট নেন মোহাম্মদ শামি।