ঐতিহাসিক টেস্ট ড্র করল পাকিস্তান
শেষ দিনে তিন সেঞ্চুরির পর ড্রতে শেষ হলো দশ বছর পর দেশের মাটিতে ফেরা পাকিস্তানের ঐতিহাসিক টেস্ট। বৈরি আবহাওয়ার দাপটের কারণে পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কার দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্টের পাঁচদিনে খেলা হয়েছে মাত্র ১৬৭ ওভার।
শেষ দিনে সেঞ্চুরি করেন শ্রীলঙ্কার ধনঞ্জয়া ডি সিলভা। বৈরি আবহাওয়ার কারণে ম্যাচের দ্বিতীয় থেকে চতুর্থ দিন খুব বেশি ব্যাট করার সুযোগ পাননি ডি সিলভা। তাঁর ১০২ রানের কল্যাণে পঞ্চম দিনে ৯৭ ওভারে ৬ উইকেটে ৩০৮ রানে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে শ্রীলঙ্কা। আবিদ আলী ও বাবর আজমের জোড়া সেঞ্চুরিতে ৭০ ওভারে ২ উইকেটে ২৫২ রান করে পাকিস্তান। আবিদ ১০৯ ও বাবর ১০২ রানে অপরাজিত থাকেন। এরপরই ম্যাচটি ড্রতে শেষ হয়।
রাওয়ালপিন্ডিতে প্রথম দিন আলো স্বল্পতার কারণে ৬৮.১ ওভার খেলা হয়। দ্বিতীয় দিন আলো স্বল্পতা ও বৃষ্টির কারণে খেলা হয় ১১০ বল। তৃতীয় দিন আলো স্বল্পতা ও বৃষ্টির কারণে খেলা হয় মাত্র ৩২ বল। চতুর্থ দিন মাঠেই নামতে পারেনি দুদল। এ সময় ৯১ দশমিক ৫ ওভারে ৬ উইকেটে ২৮২ রান ছিল শ্রীলঙ্কার। ধনঞ্জয়া ডি সিলভা ১৫১ বলে অপরাজিত ৮৭, অধিনায়ক দিমুথ করুনারত্নে ৫৯, ওসাদা ফার্নান্দো ৪০ রান করেন।
পঞ্চম ও শেষ দিন প্রথম সেশনে টেস্ট ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ সেঞ্চুরি করেন ডি সিলভা। তাঁর সেঞ্চুরির পর ইনিংস ঘোষণা করে শ্রীলঙ্কা। ১৫টি চারে ১৬৬ বলে অপরাজিত ১০২ রান করেন তিনি। পাকিস্তানের হয়ে আফ্রিদি ও নাসিম দুটি করে উইকেট নেন।
শ্রীলঙ্কার ইনিংস ঘোষণার পর ব্যাট হাতে নেমে তৃতীয় ওভারেই ধাক্কা খায় পাকিস্তান। শূন্য রানে ফিরেন ওপেনার শান মাসুদ। এরপর ৮৭ রানের জুটি গড়েন আবিদ ও অধিনায়ক আজহার আলী। পাকিস্তান দলপতি ৩৬ রানের বেশি করতে পারেননি। ফলে ক্রিজে আবিদের সঙ্গী হন বাবর। তৃতীয় উইকেটে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুর্দান্ত ব্যাট করেছেন আবিদ-বাবর জুটি। ফলে সেঞ্চুরির স্বাদ নেন দুজনই।
প্রথম টেস্টেই সেঞ্চুরির দেখা পান আবিদ। ক্যারিয়ারের প্রথম ওয়ানডেতেও সেঞ্চুরি করেছিলেন তিনি। ফলে ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে বিশ্বরেকর্ডের মালিক হন আবিদ।
আবিদের পর টেস্ট ক্যারিয়ারে তৃতীয় সেঞ্চুরির স্বাদ নিয়েছেন বাবর আজম। দুজনের সেঞ্চুরির পর ম্যাচটি ড্র হয়। ১১ চারে ২০১ বলে আবিদ ও ১৪ চারে ১২৮ বলে বাবর ইনিংস সাজান। শ্রীলঙ্কার কাসুন রাজিথা-লাহিরু কুমারা একটি করে উইকেট নেন। ম্যাচসেরা হয়েছেন আবিদ। আগামী ১৯ ডিসেম্বর করাচিতে অনুষ্ঠিত হবে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট।
২০০৯ সালে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দলের উপর সন্ত্রাসী হামলা চালায় পাকিস্তানের জঙ্গিরা। এরপর থেকে পাকিস্তানের মাটিতে আন্তর্জাতিক ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়নি। গেল দুবছরে রঙ্গীন পোশাকে কয়েক ম্যাচ হলেও, দশ বছর পর টেস্ট ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয় পাকিস্তানে।