ইএসএল থেকে সরে দাঁড়াল ‘বিগ সিক্স’ ইংলিশ ক্লাব
প্রিমিয়ার লিগের সঙ্গে যুক্ত ছয়টি ইংলিশ ফুটবল ক্লাবই ‘ইউরোপিয়ান সুপার লিগ’ বা ইএসএল থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নিয়েছে। সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
ইংলিশ ক্লাবগুলোর মধ্যে ম্যানচেস্টার সিটি প্রথম ক্লাব হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে ইএসএলের খাতা থেকে নিজেদের নাম সরিয়ে ফেলার উদ্যোগ নেয়। ম্যানচেস্টার সিটিকে অনুসরণ করে চেলসিও এই নতুন লিগ থেকে নিজেদের নাম সরিয়ে নিতে কাগজপত্র প্রস্তুত করে।
এরপর একে একে আর্সেনাল, লিভারপুল, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও টটেনহ্যাম হটসপারও ইউরোপিয়ান সুপার লিগ থেকে নাম সরিয়ে নেয়।
এর আগে গত রোববার ইউরোপের ১২ ক্লাব মিলে ইউরোপিয়ান সুপার লিগ তৈরির ঘোষণা দেয়। এতে বিশ্বব্যাপী ফুটবল কোচ, খেলোয়াড়, ভক্ত ও বিশ্লেষকদের সমালোচনার মুখে পড়ে।
ম্যানচেস্টার সিটি নিশ্চিত করেছে যে, একটি আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তারা সুপার লিগ থেকে সরে এসেছে।
আর, লিভারপুল বিবৃতিতে জানিয়েছে সুপার লিগের সঙ্গে তাদের যাত্রা এ পর্যন্তই।
আরেক ইংলিশ ক্লাব আর্সেনাল ভক্তদের উদ্দেশে একটি খোলা চিঠিতে বলেছে— তাদের ভুল হয়ে গেছে এবং বৃহত্তর ফুটবল কমিউনিটির কথা শুনেই তারা সুপার লিগ থেকে নাম সরিয়ে নিয়েছে।
অন্যদিকে, টটেনহ্যাম হটসপারের চেয়ারম্যান ডেনিয়েল লেভি দুঃখ প্রকাশ করে বলেছেন—এই প্রস্তাবের ফলে যে শঙ্কা তৈরি হয়েছে তা ক্লাবের জন্য হতাশাজনক।
ইউরোপীয় ফুটবল নিয়ন্ত্রক সংস্থা উয়েফার প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার কেফেরিন ইংলিশ ক্লাবগুলোর সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ইউরোপীয় ফুটবলকে এখনও অনেক দেওয়ার আছে এই ক্লাবগুলোর। তিনি বলেন, ‘এখন আমাদের এগিয়ে যাওয়ার পালা।’
ইংল্যান্ডের এই ‘বিগ সিক্স’ ছাড়াও সুপার লিগে যুক্ত হয় স্প্যানিশ ক্লাব বার্সেলোনা, রেয়াল মাদ্রিদ, অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদ, ইতালির এসি মিলান, ইন্টার মিলান ও জুভেন্টাস।
ফুটবল ভক্তরা, ফুটবল সংশ্লিষ্টেরা, যুক্তরাজ্যের মন্ত্রীরা পর্যন্ত এই সুপার লিগের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলেন। ব্রাইটনের বিপক্ষে চেলসির ম্যাচের আগে কমপক্ষে এক হাজার ভক্ত জমায়েত হয়ে বিক্ষোভ করেন।
চেলসির কিংবদন্তি গোলরক্ষক পিতর চেক নিজে এসে ভক্তদের বোঝান যাতে তাঁরা সরে যায়।
ওদিকে এই ঘটনার পর ম্যানচেস্টার ইউনাইডের নির্বাহী ভাইস চেয়ারম্যান এড উডওয়ার্ড ২০২১ সালের শেষে নিজের পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। তবে এই ঘটনায় বেশ কয়েকটি ক্লাবের কোচ ও শীর্ষ ফুটবলারেরা নিজেদের অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
লিভারপুল কোচ য়ুর্গেন ক্লপ সরাসরি বলেছেন এই সুপার লিগ ফুটবলের জন্যই হতাশাজনক। ক্লাবটির অধিনায়ক জর্ডান হেন্ডারসন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন যে, সমষ্টিগতভাবেই লিভারপুলের ফুটবলারেরা চান না সুপার লিগ হোক।
ম্যানচেস্টার সিটি আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়ার পর ক্লাবটির ফুটবলার রাহিম স্টারলিং, ‘ওকে বাই’ লিখে একটি টুইট করেন।
ওদিকে রিয়াল মাদ্রিদ প্রেসিডেন্ট ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ গতকাল বলেন, ফুটবল বাঁচাতেই নিয়ে আসা হয়েছে এই সুপার লিগ। পেরেজ এই সুপার লিগের চেয়ারম্যান।
তবে, ইংলিশ ক্লাবগুলো সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিলেও স্প্যানিশ বা ইতালিয়ান ক্লাবগুলো এখনও কোনো বিবৃতি দেয়নি।