‘আমি ওকে (আরাফাত সানি জুনিয়র) পেটাইনি। আমাদের মধ্যে যা হয়েছে, সেটা শুধু ভুল বোঝাবুঝি। তবে আমি ভুল করেছি। আমি ভুলের জন্য অনুতপ্ত,’ ক্রিকেট মাঠে সতীর্থকে পেটানোর অভিযোগে নিষেধাজ্ঞা পাওয়া পেসার শাহাদাত হোসেন রাজীব এনটিভি অনলাইনকে কথাগুলো বলেন।

গত রোববার জাতীয় ক্রিকেট লিগে খুলনা ও ঢাকা বিভাগের মধ্যকার ম্যাচে সতীর্থ আরাফাত সানি জুনিয়রের গায়ে হাত তোলেন পেসার শাহাদাত হোসেন রাজীব যার জন্য বড় রকমের নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়েছেন শাহাদাত।

সতীর্থের গায়ে হাত তোলার অভিযোগে পাঁচ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে শাহাদাতকে। অবশ্য এর মধ্যে দুই বছরের নিষেধাজ্ঞা স্থগিত। সঙ্গে তিন লাখ টাকা জরিমানাও করা হয় তাঁকে। এত বড় শাস্তির কথা শুনে হতভম্ব হয়ে গেছেন শাহাদাত।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে শাহাদাতের আশা অনেকদিন আগেই শেষ। ঘরোয়া লিগ খেলে যাচ্ছিলেন। বয়স ৩৩,  এই সময়ে এত বছর মাঠের বাইরে থাকা মানে ক্যারিয়ার শেষ। বিষয়টি নিয়ে বেশ হতাশ তিনি।

নিজের ভুল স্বীকার করে এনটিভি অনলাইনকে শাহাদাত বলেন, ‘বিশ্বাস করুন আমি ওকে (আরাফাত সানি) পেটাইনি। মাঠে আমাদের মধ্যে যা হয়েছে, সেটা শুধু ভুল বোঝাবুঝি। তবে হ্যাঁ, আমার দোষ ছিল, কারণ আমি মেজাজ ধরে রাখতে পারিনি। এটা করা আমার একদম উচিত হয়নি। এর জন্য আমি ভীষণ অনুতপ্ত।’

তবে এত বছর ক্রিকেটের বাইরে থাকা মেনে নিতে পারছেন না শাহাদাত। জানালেন আগামীকালের (বৃহস্পতিবার) মধ্যেই তিনি শাস্তির বিপক্ষে আপিল করবেন। শাহাদাতের কথায়, ‘ক্রিকেটে আমার সবকিছু। এত দিন বাইরে থাকলে আমার ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যাবে। আমি আগামীকালের মধ্যে আপিল করব। আমি আশা করি, তাঁরা আমাদের দিকটা দেখবেন। আমার ভবিষ্যৎ জীবনের কথা ভেবে আমি আশা করি, তারা আমার দিকগুলো বিবেচনা করবেন।’

শোনা যায়, শাহাদাতের সেই ঘটনার সূত্রপাত নাকি আরেক পেসার মোহাম্মদ শহীদকে দিয়ে। যে কারণে শহীদেরও ম্যাচ ফির ৫০ শতাংশ জরিমানা করা হয়। তিনি নাকি পেতে পারেন আরো বড় শাস্তি।

অবশ্য বল শাইন করা নিয়ে আরাফাত সানির সঙ্গে কথাকাটাকাটির শুরুটা করেছিলেন শহীদ। তিনিই শুরুতে এই অফস্পিনারকে ধাক্কা দেন। এরপর আরাফাতের ওপর চড়াও হন শাহাদাত। শুরু করেন চড়-থাপ্পড়। আম্পায়ার এসে সরিয়ে দেওয়ার পরও শাহাদাত আবার গিয়ে মারতে থাকেন আরাফাতকে।

পরে সতীর্থরা গিয়ে সানিকে সরিয়ে না নিলে ঘটনা আরো বড় হতে পারত। আম্পায়ার পরে শাহাদাতকে মাঠ থেকে বের করে দেন। সে ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ করা হয় তাঁকে। তাই ঢাকা ম্যাচে খেলছে ১০ জনের দল নিয়ে।

বেশ কিছুদিন আগে গৃহকর্মী নির্যাতনের দায়ে সব ধরনের ক্রিকেটে নিষিদ্ধ হয়েছিলেন শাহাদাত। যে কারণে তাঁকে জেলহাজতেও যেতে হয়েছিল। সেই কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত হয়ে দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চেয়েছিলেন তিনি। এবার আরো বড় শাস্তি পেলেন তিনি।

শহীদেরও রয়েছে শৃঙ্গলাভঙ্গের অতীত রেকর্ড। দুই বছর আগে স্ত্রীকে মারধর ও নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। অভিযোগ নিয়ে বিসিবির কাছেও গিয়েছিলেন তাঁর স্ত্রী।