স্ত্রীকে রান্নায় সাহায্য করে সময় কাটছে সাব্বিরের
বাসায় থাকুন, নিরাপদ থাকুন— এই মুহূর্তে গোটা বিশ্বে এ কথাটাই সবচেয়ে বেশি উচ্চারিত হচ্ছে। করোনাভাইরাস সংক্রমণ থেকে নিজেকে রক্ষা করার জন্য এখন ঘরে থাকাই একমাত্র উপায়। এই মুহূর্তে সবার মতো ঘরবন্দি বিশ্বের সব খেলোয়াড়রাও।
অবশ্য ঘরে একদমই অলস সময় কাটছে না ক্রীড়াবিদদের। ঘরেই নানা কাজ করে সময়টাকে উপভোগ্য করে তুলছেন তাঁরা। যেমনটা করছেন ক্রিকেটার সাব্বির রহমানও। খেলা না থাকায় লম্বা ছুটিতে গ্রামের বাড়ি রাজশাহীতে আছেন তিনি। সেখানেই স্ত্রী অর্পার সঙ্গে বাসার বিভিন্ন কাজ করে সময় চলে যাচ্ছে তাঁর।
আজ মঙ্গলবার এনটিভি অনলাইনের সঙ্গে আলাপে জানান, পরিবারকে সময় দেওয়ার পাশাপাশি নিজ এলাকার দুস্থদের সাধ্যমতো সাহায্য করে যাচ্ছেন এই ক্রিকেটার।
সাব্বির বলেন, ‘বাসায় জিম করি, রানিং করি এ ছাড়া পরিবারের সঙ্গেই সময়টা কাটছে। মা-বাবা লম্বা সময়ের জন্য পেয়ে খুশিই আছেন। তবে বাসায় আমি সবাইকে সচেতন করছি। একটু পরপর সবাইকে হাত ধুতে বলি। মা-বাবাকে বাসার নিচে যেতে দিচ্ছি না।’
স্ত্রী অর্পাকে ঘরের সব কাজে সাহায্য করেছেন সাব্বির, ‘বাসায় এখন আমরা দুজনে মিলে রান্না করি। একদিন বউ রান্না করে, আমি তাঁকে সাহায্য করি। আবার আমি রান্না করি সে সাহায্য করে। একবার সে চা বানায়, আরেকবার আমি বানাই। এভাবেই মিলে মিশে কাজ করি।’
করোনা মোকাবিলায় এগিয়ে আসছেন বিশ্বের বিভিন্ন ক্রীড়াবিদরা। বসে নেই সাব্বিরও। নিজ এলাকায় ৩০০ পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন তিনি, ‘এলাকাতে আমি যে মসজিদে নামাজ পড়াতাম সেই মসজিদে ৫০০ মাস্ক দিয়েছি। পুরো এলাকায় ৩০০ পরিবারকে চাল, ডাল, আলু, তেল, সাবান দিয়েছি। বাড়ির সামনে সাধারণ মানুষদের জন্য একটা বেসিন লাগিয়েছি। যাতে কেউ হাত ধুতে পারে। এ ছাড়া বাড়ির আশপাশে যেখানেই ফান্ড আছে সেখাই অনুদান দিচ্ছি। এখন পর্যন্ত অনেকগুলোতে সামর্থ্য অনুযায়ী দিয়েছি। ফোনে আত্মীয়স্বজনের খবর নিচ্ছি। সবাইকে করোনার ভয়াবহতা নিয়ে সতর্ক করছি।’
ক্রিকেটে সময়টা ভালো যাচ্ছে না সাব্বিরের। বিপিএলে খেলতে নেমেও কাজে লাগাতে পারেননি। তাকিয়ে ছিলেন ঘরের মাঠে ডিপিএলের দিকে। কিন্তু করোনার কারণে সেটাও আর হলো না। সব মিলিয়ে সময়টা হতাশায় কাটছে কি না, জানতে চাইলে সাব্বির বলেন, ‘খেলা বন্ধ হয়ে যাওয়া আমাদের সবার জন্য অবশ্যই হতাশার। একজন কর্মী কাজ না করতে পারলে যেমন হয় আমাদের ক্ষেত্রেও তাই। আমার মনে হয় এই অবস্থায়, পুরো সবদিক দিয়ে পুরো বিশ্ব এক-দেড় বছর পিছিয়ে গেল। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ হওয়া নিয়েও এখন শঙ্কা রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বিশ্বকাপ না হওয়ারই সম্ভবনা বেশি। তবে হতাশা না, বিপিএল ভালো খেলতে পারি নাই। ভেবেছি ডিপিএলে ভালো করে চেষ্টা করব। অপেক্ষাটা লম্বা হলো। তবে ভেঙ্গে পড়ছি না। যদি বেঁচে থাকি চেষ্টা করব নতুন করে ফেরার।’
করোনা সতর্কতায় সবার উদ্দেশে সাব্বির বলেন, ‘করোনা অনেক ভয়াবহ হচ্ছে। আপনারা দেখছেন কীভাবে আমেরিকা-ইতালির, স্পেন, ফ্রান্সের মানুষগুলা মারা যাচ্ছে। সেই হিসেবে আপনারদের কাছে অনুরোধ আপনারা সচেতন হোন। আপনাদের নিরাপত্তা আপনাদের কাছে। একটু বাসায় থাকুন, পরিবারের জন্য হলেও বাসায় থাকুন। আল্লাহকে ডাকুন, নামাজ পড়ুন যাতে তিনি আমাদের এই দুর্যোগ থেকে রক্ষা করেন। সবাই সচেতন থাকলে আশা করি সব ঠিক হয়ে যাবে।’