ম্যারাডোনাকে নিয়ে পেলের আবেগঘন স্ট্যাটাস
ফুটবল যাঁরা ভালোবাসেন তাঁদের আবেগে ভাসিয়ে দিয়েছে পেলের এই আকুতি। দিয়েগো ম্যারাডোনার মৃত্যুর এক সপ্তাহ পার হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে আরেকটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন এই ব্রাজিলীয় কিংবদন্তি। এই আবেগঘন স্ট্যাটাসে আর্জেন্টাইন কিংবদন্তির প্রতি তাঁর প্রগাঢ় ভালোবাসা প্রকাশ পেয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পেলে লিখেছেন, ‘তুমি চলে গেলে সাত দিন হয়ে গেল। অনেক মানুষ আমাদের সঙ্গে সারা জীবন তুলনা করতে ভালোবাসে। তুমি একজন প্রতিভাধর, যে পৃথিবীকে মুগ্ধ করেছিলে। তুমি একজন সত্যিকারের কিংবদন্তি। কিন্তু তুমি সবসময় একজন বড় বন্ধু হয়ে থাকবে, একজন বড় হৃদয়ের অধিকারী। আজ জানলাম পৃথিবী অনেক ভালো হতো, যদি আমরা একে অপরের সঙ্গে কম তুলনা করে একে অপরকে বেশি প্রশংসা করতে পারতাম। তুমি অতুলনীয়। আর তোমার এই ব্যক্তিগত পথ দিয়ে শিখিয়ে দিয়েছ, যে আমাদের ভালোবাসতে হবে এবং বলতে হবে ‘আমি তোমাকে ভালোবাসি’ অনেক বেশি। তোমার দ্রুত চলে যাওয়া আমাকে বলতে দেবে না, তাই আমি শুধু লিখি : আমি তোমাকে ভালোবাসি দিয়েগো। আমার মহান বন্ধু, আমাদের সমস্ত যাত্রার জন্য তোমাকে অনেক ধন্যবাদ। একদিন স্বর্গে আমরা একই দলে একসাথে খেলব। প্রথমবারের মতো আমি কোনো গোল উদযাপন ছাড়াই বাতাসে ঘুষি মারতে পারব, কারণ আমি তোমাকে আরেকবার আলিঙ্গন করতে পারি।’
এর আগে ম্যারাডোনার মৃত্যুর খবর পেয়ে শোকস্তব্ধ পেলে সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছিলেন, ‘আকাশের উপরে আমরা দুজন অবশ্যই একদিন ফুটবলে শট নেব।’
শ্রেষ্ঠত্ব বিষয়ে পেলে ও ম্যারাডোনাকে নিয়ে অনেক তর্ক হলেও ব্যক্তিগত জীবনে একে-অপরকে বন্ধু বলেই সম্বোধন করতেন তাঁরা। খেলা ছাড়ার পর থেকে অনেক অনুষ্ঠানেই পেলে ও ম্যারাডোনাকে দেখা গেছে একসঙ্গে। দুই কিংবদন্তির মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ছিল অগাধ।
হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে গত ২৫ নভেম্বর মারা গেছেন ম্যারাডোনা। আর্জেন্টিনার তিগ্রেতে নিজ বাসায় মারা যান এই আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি।
কিছুদিন আগে মস্তিষ্কে সফল অস্ত্রোপচার হয়েছিল ম্যারাডোনার। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি গিয়েছিলেন অতিরিক্ত অ্যালকোহল আসক্তি থেকে সেরে ওঠার নিরাময় কেন্দ্রে। এরপর বাসায় ফিরেছিলেন। সেখানেই মারা যান তিনি।
১৯৮৬ বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনাকে বিশ্বকাপ জেতান তিনি প্রায় একাই। ১৯৬০ সালের ৩০ অক্টোবর আর্জেন্টিনার বুয়েনস আইরেস প্রদেশের লানুস শহরে জন্মগ্রহণ করেন ম্যারাডোনা। দক্ষিণ প্রান্তের শহর ভিয়া ফিওরিতোতে তাঁর বেড়ে ওঠা। তিন কন্যা সন্তানের পর তিনিই ছিলেন মা-বাবার প্রথম পুত্র সন্তান।