নেপালকে হারিয়ে এসএ গেমসের ফাইনালে বাংলাদেশ
সাউথ এশিয়ান (এসএ) গেমসে ক্রিকেট ইভেন্টে নেপালের বিপক্ষে ৪৪ রানের জয় পেয়ে ফাইনালে উঠে গেছে বাংলাদেশ। আজ শনিবার সকালে নেপালের কির্তিপুরে ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয়। ফাইনালে এবার বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা।
নেপালের বিপক্ষে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ছয় উইকেট হারিয়ে ১৫৫ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ২০ ওভারে নয় উইকেট হারিয়ে নেপালের সংগ্রহ ১১১। ফলে ম্যাচ শেষে ৪৪ রানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে লাল সবুজের দল।
এর আগে ব্যাট করতে নেমে সাত রানেই প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। নেপালের বোলার খাদকার বলে আউট হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম। রানের খাতায় যোগ করেন মাত্র ছয়। মাঠে নামেন নাজমুল হোসেন শান্ত।
এরই মধ্যে ১৬ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এবারও উইকেট তুলে নেন খাদকা। তাঁর শিকার সৌম্য সরকার। রানের খাতায় তিনিও যোগ করেন মাত্র ছয়। দুই ওপেনারকে হারিয়ে ক্রিজে নামেন সাইফ হাসান। তিনিও খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি। খাদকার বলে শূন্য রানেই মাঠ ছাড়েন সাইফ।
এরপর শান্তর সঙ্গে জুটি বাঁধতে মাঠে নামেন ইয়াসির আলি। দলীয় ৫৯ রানে বোহারার বলে মাল্লার হাতে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। রান করেন ১৪।
পরে আফিফ হোসেন মাঠে নামলে শান্তর সঙ্গে ভালো একটি জুটি গড়েন তিনি। মূলত তাঁদের জুটির ওপর ভর করেই প্রতিযোগিতামূলক একটি স্কোর দাঁড় করায় বাংলাদেশ। তাঁদের মধ্যে শান্ত করেন ৬০ বলে অপরাজিত ৭৫ রান এবং আফিফ করেন ২৮ বলে ৫২ রান। তবে ম্যাচের শেষ পর্যায়ে দলীয় ১৫৩ রানে আইরির বলে আউট হয়ে মাঠ ছাড়তে হয় আফিফকে। শেষ পর্যন্ত ছয় উইকেটে ১৫৫ রান তুলতে সক্ষম হয় বাংলাদেশ।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি নেপাল। দলীয় ১১ রানেই তানভীর ইসলামের বলে হাসান মাহমুদের হাতে ক্যাচ তুলে দেন ওপেনার খাদকা। মাত্র নয় রানেই আউট হন তিনি।
এরপর মাঠে নেমেই তানভীর ইসলামের শিকার হন সারাফ। তানভীরের বলে নাইমের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে শূন্য রানেই প্যাভিলিয়নে ফিরে যান তিনি।
এরপর ব্যাট করতে নামেন আরিফ শেখ। কিন্তু তিনিও শূন্য রানেই উইকেট বিলিয়ে দেন বাংলাদেশের বোলারদের হাতে। সুমন খানের বলে নাইমের হাতে বিসর্জন দেন উইকেট।
এরপর মাঠে নামেন আইরি। মাঠে নেমে মাল্লার সঙ্গে ধীরে সুস্থে এগোনোর চেষ্টা চালান তিনি। তবে দলীয় ৪৬ রানে সৌম্য সরকারের শিকার হন তিনি। ক্যাচ তুলে দেন ইয়াসির আলির হাতে। রানের খাতায় যোগ করেন ১৬।
মাঠে নামেন রহিত পাওড়েল। তবে তিনিও খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি। দলীয় ৬৬ রানে আট রান যোগ করে ফিরে যান তিনি। তাঁর উইকেট নেন মেহেদী হাসান।
ম্যাঠে কেবল টিকে ছিলেন মাল্লা। তাঁকে রেখেই একের পর এক উইকেট বিসর্জন দেন নেপালের ব্যাটসম্যানরা। রহিতের উইকেটের পর মাঠে নামেন বান্দারি। তিনিও ধরেন সতীর্থদের পথ। তিন রান করে মেহেদী হাসানের বলে ক্যাচ তুলে দেন তানভীর ইসলামের হাতে। তখন নেপালের দলীয় রান ছয় উইকেটে ৭৫।
এরপর একে একে মাঠে নামেন কারান, ভারি ও বোহারা। তাঁদের মধ্যে এক রানেই সুমন খানের বলে আউট হন কারান। আর সৌম্যর থ্রোতে রান আউটের শিকার হন ভারি।
প্রায় সবশেষ পর্যন্ত টিকে থাকলেও সৌম্যর বলে মাহিদুল ইসলামের হাতে ক্যাচ তুলে দেন মাল্লা। অন্যদের তুলনায় তিনি যা একটু এগিয়ে নিয়েছিলেন নেপালকে। তাঁর সংগ্রহ ৪৩ বলে ৪৩ রান।
এরপর বোহারা ও রাজবানশি নট আউট থেকে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষ করেন। শেষ পর্যন্ত নেপালের রান গিয়ে দাঁড়ায় নয় উইকেটে ১১১। ৪৪ রানের জয় পায় বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের জয়ের নায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ম্যাচ সেরার পুরস্কার পান। এই জয়ের ফলে তিন ম্যাচে তিন জয় নিয়ে ছয় পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। অন্যদিকে সমান তিন ম্যাচের তিনটিতেই জয় পেয়ে ছয় পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে শ্রীলঙ্কা। ফলে শ্রীলঙ্কার সঙ্গেই ফাইনালের টিকেট পেয়েছে বাংলাদেশ।
অন্যদিকে চার ম্যাচে দুই জয় ও দুই হারে ৪ পয়েন্ট নিয়ে ৩ নম্বরে নেপাল। আর মালদ্বীপ ও ভুটান তিন ম্যাচের একটিও না জিতে অবস্থান করছে তলানিতে।