দর্শকশূন্য মাঠে খেলতে মনোবিদের দ্বারস্থ হলেন ব্রড
করোনার পরিস্থিতিতে ধীরে ধীরে সচল হতে যাচ্ছে ক্রিকেট বিশ্ব। তবে ক্রিকেট মাঠে ফেরার মূল শর্ত দর্শক শূন্য স্টেডিয়াম। যার সঙ্গে পরিচিত নন ক্রিকেটাররা। মাঠভর্তি দর্শকদের সামনে খেলতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন তাঁরা। তাই তো এবার নতুন পরিবেশে খেলার জন্য তৈরি হতে হচ্ছেন স্টুয়ার্ট ব্রড। যার জন্য মনোবিদের দারস্ত হয়েছেন ইংল্যান্ডের এই অভিজ্ঞ পেসার।
করোনার পরিস্থিতিতে সবার আগে ক্রিকেট ফিরছে ইংল্যান্ডে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট দিয়ে মাঠে ফিরছে ইংলিশরা। এই পরিস্থিতিতে খেলাটা ক্রিকেটারদের জন্য বড় পরীক্ষা বলে মনে করেন ব্রড। ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তেমনটাই জানালেন এই ইংলিশ তারকা।
ব্রড বলেন, ‘ফুটবল বা রাগবির চেয়ে ক্রিকেট একটু আলাদা। ঘরোয়া ক্রিকেটে যখন লাল বলের ম্যাচ খেলি আমরা, অনেক সময়ই খুব কম দর্শকের সামনে খেলতে হয়। কাজেই শুধু দর্শকের উৎসাহই যে আমাদের ধাবিত করে বা ওই আবহের ওপর সব নির্ভর করে, তা নয়। তবে দর্শক ছাড়া খেলাটাকে অবশ্যই ভিন্ন কিছু মনে হবে। এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট নিশ্চিতভাবেই হবে মানসিক পরীক্ষা, প্রতিটি ক্রিকেটারকে এই লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। সেটি নিয়ে আমি খুবই সচেতন। এর মধ্যেই আমাদের ক্রীড়া মনোবিদের সঙ্গে কথা বলেছি যেন নিজের সেরাটা দেওয়ার মতো মানসিক অবস্থায় থাকতে পারি।’
ব্রড আরো বলেন, ‘আমাকে অ্যাশেজের কোনো ম্যাচ খেলতে বলুন আর কোনো প্রাক-মৌসুম প্রীতি ম্যাচ, আমি জানি কোন ম্যাচে বেশি ভালো পারফর্ম করব। তাই টেস্ট ম্যাচের জন্য যে মানসিকতা থাকা উচিত, তা নিশ্চিত করতে হবে আমাকে এবং জুনের শুরুতে থেকেই এটি নিয়ে কাজ করছি।’
খেলার মধ্যে আনন্দ খুঁজে নিতে মায়ের কাছ থেকেও পরামর্শ নিচ্ছেন অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটার, “এখানে আসার আগে মা আমাকে বলেছেন, ‘১২ বছর বয়সে ফিরে যাও, যখন যে কোনো জায়গায় ক্রিকেট খেলতে চাইতে।’ সেই মানসিকতা ফিরে পাওয়ার চেষ্টা করছি। অবশ্যই আমরা এখন ইংল্যান্ডের হয়ে টেস্ট ম্যাচ খেলছি। কিন্তু ১২ বছর বয়সে যে ব্যাপারটি ছিল, যেকোনো মূল্যে শুধু খেলতে চাইতাম। ছুটির দিন সকালে জানালার পর্দাটা সরিয়ে যদি দেখতাম বাইরে বৃষ্টি হচ্ছে, মনটাই খারাপ হয়ে যেত। ক্রিকেটের সেই রোমাঞ্চ ও আনন্দ খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করছি। এভাবে ভাবলে ভেতরে প্রাণশক্তি অনুভব করা যায়।’
মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে ইংলিশ তারকা আরো বলেন, “এমন একটি মানসিকতা আমার গড়ে তুলতে হবে, যেন মনে না হয় যে ‘কিছুই হচ্ছে না এখানে, কাউকে দেখতে পাচ্ছি না।’ আমার মস্তিষ্ককে টেস্ট ম্যাচের আবহে নিয়ে আসতে হবে। এটা বলছি না যে এখনই তা পুরোপুরি হয়ে গেছে, এখনো অনুশীলনে এটা নিয়ে কাজ করছি। তবে অনুশীলনের সময় তো এমনিতেও দর্শক থাকে না, এভাবেই সবসময় অনুশীলন করে আসছি। তবে ম্যাচের সময় অদ্ভূত লাগতে পারে দর্শক ছাড়া। এজন্য তিন দিনের প্রস্তুতি ম্যাচে নিজেদের মন ও শরীরকে ম্যাচের মতো করে তৈরি করতে হবে, যেন ৮ জুলাই মাঠে নামার পর অস্বস্তি না থাকে।’