ঘরবন্দি রুবেলের সময় কাটছে যেভাবে
করোনারভাইরাসের কবলে সারা বিশ্বে খেলাধুলা বন্ধ। ঠিক কবে আবার ক্রীড়াঙ্গনে প্রাণ ফিরবে সেটাও বলা যাচ্ছে না। খেলোয়াড়রা এখন ঘরে বসেই বেকার সময় কাটাচ্ছেন। এ সময়ে অবশ্য অনেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সচেতনতামূলক বার্তা দিচ্ছেন বা দুস্থদের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। অনেকে আবার গৃহবন্দি হয়ে নানা কাজ করছেন, সেটা শেয়ার করছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
বাংলাদেশ দলের পেসার রুবেল হোসেনও এর ব্যতিক্রম নন। ঘরবন্দি রুবেলের সময় কাটানোর সঙ্গী এখন একমাত্র ছেলে আয়ান। নিজের জায়গা থেকে সচেতনতামূলক বার্তা এবং অসহায়দের পাশে দাঁড়ানোর পাশাপাশি আয়ানকে নিয়েই ঢাকায় ঘরবন্দি রুবেল। এনটিভি অনলাইনের সঙ্গে আজ মঙ্গলবার আলাপে করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত না হয়ে সবাইকে ঘরে থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন এ পেস বোলার।
পরিস্থিতি খারাপ হলেও ছেলের সঙ্গে রুবেলের সময়টা খারাপ যাচ্ছে না। রুবেলের ভাষায়, ‘এ সময়টায় বাসায় থাকা ছাড়া উপায় নেই। বাসায় আমার বাচ্চার সঙ্গেই সময় কাটাচ্ছি। ওকে নিয়ে ভালোই আছি। পরিবারকে সময় দিচ্ছি। সবাইকে আতঙ্কিত না হওয়ার জন্য বলছি। করোনা থেকে বাঁচতে যেসব শিষ্টাচার মেনে চলা উচিত, সেগুলো পালন করার জন্য বলছি।’
আপাতত ঢাকায় ছেলে, স্ত্রী ও মাকে নিয়ে আছেন রুবেল। বাগেরহাটে তাঁর ভাইয়ের সঙ্গে আছেন রুবেলের বাবা। দূরে থেকে ফোনের মাধ্যমে চেষ্টা করছেন বাবা-ভাইকেও সচেতন রাখার, ‘পরিবার থেকে কেউ এখনো ভীত নয়। বাগেরহাটে আমার বাবা-বড়ভাই থাকেন। এখানে আমার সঙ্গে ঢাকায় মা আছেন, আমার ভাগনিরা আছে। ফোনে কথা বলে আমি চেষ্টা করি তাঁদেরও সচেতন রাখার। নিজেও সবকিছু মেনে চলছি। এলাকায়ও ফোন করে বলি, যেন সবাই সচেতন থাকে। আমার পক্ষে যতটুকু সম্ভব সাধ্যমতো চেষ্টা করছি।’
খেলা নেই, অনুশীলনও নেই, এমন পরিস্থিতিতে খেলোয়াড়দের ফিটনেস ধরে রাখাটা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। বাসায় থাকা রুবেল চেষ্টা করছেন, যতটা সম্ভব বাসায় বসে ব্যয়াম করার। তিনি বলেন, ‘ফিটনেস নিয়ে টুকটাক এখন বাসার মধ্যেই কাজ করি। আমরা তো পেশাদার ক্রিকেটার, জানি কীভাবে কী করতে হয়। সেগুলোই করার চেষ্টা করছি। যতটুকু বাসায় করা সম্ভব হচ্ছে ততটুকু করছি। এ ছাড়া বিসিবি (বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড) থেকেও ফিটনেস নিয়ে কাজ করার কিছু টিপস দিয়েছে। যেটা আমাদের খেলোয়াড়দের খুব কাজে দেবে। বাসায় অনেক কিছুই করা যায়। কোমরের ব্যায়াম বলেন, রাবার দিয়েও অনেক কিছু করা যায়, সেগুলোই চেষ্টা করছি।’
অসহায়দের পাশে থাকা প্রসঙ্গে রুবেল বলেন, ‘আমি নিজের দায়িত্ব অনুযায়ী, যতটুকু করার সম্ভব, আমি সেটা করছি। আমাদের দেশের অনেক মানুষই দিন আনে দিন খায়। তাদের সে আয় এখন বন্ধ। ওই অসহায় মানুষগুলোর পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছি।’
এ ছাড়া করোনা থেকে বাঁচতে রুবেল সবাইকে ঘরে থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন, ‘করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সবাই সতর্ক থাকার কথা বলছেন। আমি বলব, এই মুহূর্তে বাসায় থাকাটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আর এখন তো বাসায় থাকা ছাড়া উপায়ও নেই। এটা না করলে বিপদ আরো বাড়তে পারে। কারণ আমরা জানি না, সামনে পরিস্থিতি কী হতে চলছে। এটা কেউ বলতে পারবে না। অনলাইন নিউজ বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আমরা যা দেখি, সেগুলোর ওপর নির্ভর করে আছি। আমাদের হাতে কিছু নেই। আমাদের একমাত্র কাজ বাসায় থাকা। নিজে সতর্ক থেকে যে যার জায়গা থেকে যতটুকু পারি যেন দুস্থদের সাহায্য করি।’
‘বাংলাদেশের কিংবা সারা বিশ্বে এমন দুর্যোগ আমাদের যুগের মানুষ দেখেনি। তাই সবাই একটু আতঙ্কিত। তা ছাড়া আমরা একটুতেই আবেগী হয়ে যাই। আবার অনেকে বিষয়গুলো মানিও না। জানি না সামনে কী অপেক্ষা করছে। এখন আল্লাহর কাছে সবার ক্ষমা যাওয়া উচিত, যাতে তিনি আমাদের ও সারা বিশ্বকে এই দুর্যোগ থেকে রক্ষা করেন,’ যোগ করেন রুবেল।