অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়ালেন লিটন-সঞ্চিতা
বিশ্বজুড়ে মহামারি আকার ধারণ করেছে করোনাভাইরাস। বেড়ে চলেছে আক্রান্তের সংখ্যা, বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনের বড় বড় তারকারা এগিয়ে আসছেন।
পিছিয়ে নেই বাংলাদেশের ক্রিকেটাররাও। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কিংবা আর্থিকভাবে সবাই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন। এবার জাতীয় দলের ক্রিকেটার লিটন দাস ও তাঁর স্ত্রীও অসহায়দের পাশে দাঁড়ালেন।
বিষয়টি ফেসবুকে প্রকাশ করেছেন লিটনের স্ত্রী সঞ্চিতা। পলিথিনের প্যাকেটে খাবারের স্তুপের ছবি পোস্ট করে তিনি লিখেছেন, ‘এ মুহূর্তে এর চেয়ে বেশি কিছু করার সামর্থ্য আমার নেই। সাহায্য করারও কেউ নেই। শেষ মুহূর্তে আমরা যতটুকু পেরেছি কেনার চেষ্টা করেছি। কাজটা ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। কারণ এখন ঘরে নিজেকে আটকে (কোয়ারেন্টিন) রাখার সময়। দয়া করে অন্যদের সাহায্য করতে যা যা সম্ভব করুন। আপনার এ সাহায্য বাকিদের জীবনে আশীর্বাদ বয়ে আনুক।’
সঞ্চিতা আরে লিখেছেন, ‘লিটন দাস, এই সংকটময় মুহূর্তে তুমি আমাকে যেভাবে সাহায্য করেছ, তা কখনো ভুলব না। ধন্যবাদ।’
এ দিকে নিজেদের মাসিক বেতনের ৫০ শতাংশ অর্থ দিয়ে তহবিল গঠন করছেন ক্রিকেটাররা। বাংলাদেশে ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) কেন্দ্রীয় চুক্তিতে থাকা ১৭ ক্রিকেটার চলতি মাসের বেতনের ৫০ শতাংশ দিয়ে দেবেন করোনা মোকাবিলার সাহায্যের তহবিলে। চুক্তির বাইরে যে ১০ ক্রিকেটার গত তিন মাসে নিয়মিত আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেছেন তাঁরাও তাঁদের বেতনের ৫০ শতাংশ দেবেন।
এ প্রসঙ্গে ফেসবুকে লিটন লিখেছেন, ‘আপনারা সবাই জানেন করোনাভাইরাসের সংক্রমণে চারদিকে ক্রমেই ছড়িয়ে পড়েছে কোভিড-১৯ রোগ। এই রোগ প্রতিরোধে কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে পুরো বিশ্ব। বাংলাদেশও ব্যতিক্রম নয়। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। এর অংশ হিসেবে আমরা ক্রিকেটাররা একটা উদ্যোগ নিতে যাচ্ছি, যেটি হয়তো অনুপ্রাণিত করতে পারে আপনাদেরও। আমরা এ মাসের বেতনের ৫০ শতাংশ দিয়ে একটা তহবিল গঠন করেছি। এ তহবিল ব্যয় হবে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এবং সাধারণ মানুষ যাদের গৃহবন্দি থাকা অবস্থায় জীবন চালিয়ে নিতে অনেক কষ্ট হয়।’
লিটন আরো লেখেন, ‘তহবিলে জমা পড়েছে প্রায় ৩০ লাখ টাকার মতো। কর কেটে থাকবে ২৬ লাখ টাকা। করোনার বিরুদ্ধে জিততে হলে আমাদের এ উদ্যোগ হয়তো যথেষ্ট নয়। কিন্তু যাঁদের সামর্থ্য আছে, সবাই যদি একসঙ্গে এগিয়ে আসেন কিংবা ১০ জনও যদিও এগিয়ে আসেন, এ লড়াইয়ে আমরা অনেক এগিয়ে যাব। হ্যাঁ, এরই মধ্যে করোনা মোকাবিলায় অনেকে এগিয়ে এসেছেন। তাদের অবশ্যই সাধুবাদ জানাই। কিন্তু বৃহৎ পরিসরে যদি আরো অনেকে এগিয়ে আসে, তাহলে আমরা এ লড়াইয়ে জিততে পারব ইনশা আল্লাহ। সে সহায়তা হতে পারে ১০০, ৫০০০ কিংবা এক লাখ টাকা দিয়ে। টাকা দিয়ে না হোক, হতে পারে দুস্থ মানুষকে খাবার কিনে দিয়ে। আসুন পুরো দেশকে আমরা একটা পরিবার ভেবে চিন্তা করি এবং এ বিপদে সবাই সবাইকে সহায়তা করি।’