আপনার জিজ্ঞাসা
চাঁদ রাতের আমল কী?
নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তরের অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। জয়নুল আবেদীন আজাদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দর্শকের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম ড. মনজুর ইলাহী।
রমজান মাসের বিশেষ আপনার জিজ্ঞাসা অনুষ্ঠানের ২৯তম পর্বে চাঁদ রাতের আমল সম্পর্কে টেলিফোনে চট্টগ্রাম থেকে জানতে চেয়েছেন আরিফ। অনুলিখনে ছিলেন জহুরা সুলতানা।
প্রশ্ন : চাঁদ রাতের আমল কী?
উত্তর : যদি ঈদের চাঁদ দেখার সৌভাগ্য হয় তাহলে চাঁদের দোয়া (আল্লাহুম্মা আহিল্লাহু আলাইনা বিল আমনি ওয়াল ঈমান...) পড়তে হয়। এর পাশাপাশি রসুল (স.)-এর কাছ থেকে তাকবির দেওয়ার একটি সুন্নাহ এসেছে। এটি হাদিস দ্বারা সাব্যস্ত হয়েছে। যেমন : আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) এবং আরো একাধিক সাহাবি, শেষ রোজার পর সন্ধ্যায় যখন ঈদের চাঁদ উঠত তারপর তাঁরা রাস্তায়, ঘরে, বাজারে সব জায়গায় তাকবির দিতেন। তাঁদের দেখাদেখি অন্যান্য মানুষও তাকবির দিতেন। চারদিকে একটি সুন্দর আলোকিত গুঞ্জরণের সৃষ্টি হতো। এটি হচ্ছে ঈদের একটি আবহ।
এই তাকবিরটি পরের দিন ঈদের সালাতের আগে পর্যন্ত ক্ষণে ক্ষণে চলতে থাকবে। বিশেষ করে যখন সকাল বেলা ঈদের সালাতের জন্য ঈদগাহে যাওয়া হয় তখন তাকবির পড়তে হয় এবং যদি আমরা ঈদগাহে বসে থাকি তাহলে ঈদের সালাতের আগ পর্যন্ত এই তাকবির চলতে থাকবে। যেটা মসজিদে নববী ও হারামাইনের মধ্যে আমরা দেখি।
এই তাকবিরের ভাষাটিও হাদিসের মধ্যে এসেছে। এটি হলো—‘আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার ওয়ালিল্লাহিল হামদ’। খুবই চমৎকার কথা এই তাকবিরের মাধ্যমে আমরা বলছি। এখানে আল্লাহর মহত্ব, আল্লাহর একত্ব সবকিছু প্রতিভাত হয়েছে এবং এ ব্যাপারে সূরা আল বাকারার-১৮৫ নাম্বর আয়াতেও উল্লেখ রয়েছে। এই তাকবিরটিই হচ্ছে ‘মাসনুন ইবাদাহ’।
এ ছাড়া ঈদের রাতের বিশেষ কোনো ইবাদত নেই। কেউ যদি স্বাভাবিক ইবাদত, ফরজ নামাজ, নফল নামাজ পড়েন এবং রাতে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়েন তাহলে কোনো অসুবিধা নেই। তবে এই রাতের জন্য আর বিশেষ কোনো ইবাদত নেই। পরের দিন যেহেতু অনেক বড় একটি উপলক্ষ, ঈদুল ফিতর, ঈদের সালাত ইত্যাদির প্রস্তুতি আছে। অতএব এই রাতে কেউ বিশ্রাম করতে পারেন। বিশেষ করে যারা ইতিকাফ থেকে ফিরেছেন বা নানা কারণে যারা কর্মক্লান্ত আথবা এক মাস সিয়ামের জন্য ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন, তাঁরা এই রাতে বিশ্রাম নিতে পারেন।