আপনার জিজ্ঞাসা
কোরবানির গোশত বিতরণের সঠিক সুন্নাহ কী?
নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। জয়নুল আবেদীন আজাদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দর্শকের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম ড. মুহাম্মাদ সাইফুল্লাহ।
আপনার জিজ্ঞাসার ২৩০৪তম পর্বে কোরবানির গোশত বিতরণের সঠিক সুন্নাহ কী, সে বিষয়ে মেইলে জানতে চেয়েছেন জিল্লুর রহমান। অনুলিখন করেছেন জান্নাত আরা পাপিয়া।
প্রশ্ন : কোরবানির গোশত বিতরণের সঠিক সুন্নাহ কী? বিতরণের আগে সামান্য পরিমাণে বাসায় নেওয়া জায়েজ হবে কি? যা বণ্টনের সময় সমন্বয় করা হবে?
উত্তর : কোরবানির গোশত বণ্টনের বিষয়টি মূলত ফরজ বা ওয়াজিব নয়, এটি নবী কারিম (সা.)-এর নির্দেশনা। নবী কারিম (সা.) এভাবে পছন্দ করেছেন, সেটি হলো—একভাগ নিজের জন্য রাখবেন, আরেক ভাগ আত্মীয়স্বজনকে হাদিয়া হিসাবে উপঢৌকন দেবেন, অন্য আরেক ভাগ ফকির-মিসকিনদের বণ্টন করবেন।
যেহেতু আমরা কোরবানি করছি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য। আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য জবাই করার পরে, আল্লাহ অনুমোদন দেওয়ার কারণে আমরা খেতে পারছি। যদি আল্লাহ বলতেন, আমার জন্য জবাই করেছ, এখন পুরোটাই বিতরণ করে দাও, তাহলে আমরা পুরোটাই বিতরণ করতাম। তাই কোরবানি গোশতের ক্ষেত্রে বিতরণের এই প্রক্রিয়ায় নবী কারিম (সা.) যে নির্দেশনা দিয়েছেন, সেটা অনুসরণ করা নবী কারিম (সা.)-এর সুন্নাহ।
এটা বাধ্যতামূলক বিষয় নয়। যদি কোনো কারণে কমবেশি হয়, তাহলে তিনি গুনাহগার হবেন না এবং তার যে কোরবানি হবে না, ব্যাপারটা এমন নয়। আপনি প্রয়োজন মনে করে খাওয়ার জন্য আগে কিছু গোশত নিয়ে গেলেন তারপর সেটাকে সমন্বয় করলেন, এটা জায়েজ রয়েছে, নাজায়েজ নয়।
আর সমন্বয় করা বাধ্যতামূলক নয়। সে ক্ষেত্রে আপনি কমবেশি করতে পারেন। যেমন, অনেক সময় দেখা যায়, কোরবানির গোশত তিন ভাগ করার পর দুই ভাগ ফকির-মিসকিন ও আত্মীয়দের দেওয়ার পর যে এক ভাগ আছে তা পরিবারের লোকসংখ্যা অনেক বেশি হওয়ার কারণে সামান্য হয়ে গেছে। সে ক্ষেত্রে আপনি কমবেশি করতে পারেন। এটা নাজায়েজ নয় বা হারাম বিষয় নয়। তবে ফকির-মিসকিনদের একটা অংশ যেন কোনোভাবেই বাদ না পড়ে। কোরবানির যে ত্যাগের মহিমা, সেটা মূলত এখানেই নিহিত আছে।