নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। জয়নুল আবেদীন আজাদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দ‍র্শকের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম ড. মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ।

আপনার জিজ্ঞাসার ২১৮৭তম পর্বে সন্তানদের বিয়ের জন্য স্বর্ণালংকার রেখে দিলে সেটি গচ্ছিত সম্পদ হিসেবে গণ্য হবে কি  না, সে সম্পর্কে চিঠিতে জানতে চেয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দর্শক। অনুলিখন করেছেন জহুরা সুলতানা।

প্রশ্ন : আপনার জিজ্ঞাসা দেখে দেখে এখন মনে হয় পর্দাটাই মেয়েদের অলংকার। এখন আর স্বর্ণ ব্যবহার করি না। হয়তো আমার কাছে নেসাব পরিমাণ স্বর্ণের চেয়ে কিছু বেশি আছে। এগুলো রেখেছি ইনশা আল্লাহ সন্তানদের বিয়েতে দেব বলে। এই স্বর্ণ কি গচ্ছিত সম্পদ হিসেবে গণ্য হবে?

উত্তর : আপনি বলেছেন যে, এখন আপনার কাছে সবচেয়ে সুন্দর অলংকার হচ্ছে পর্দা করা, ইসলামের অনুশাসনগুলো মেনে চলা। এটি খুবই ভালো বলেছেন। আল্লাহর বান্দা সেই অলংকারই গ্রহণ করবে যার মাধ্যমে সে সত্যিকার পুরস্কার লাভ করবে। যেই অলংকার তাকে দুনিয়াসহ আখিরাতেও সৌন্দর্যমণ্ডিত করবে, সম্মানিত করবে। তাই আপনার এই কাজটি আমার কাছে খুব প্রশংসনীয় মনে হয়েছে।

কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে, যাদের আল্লাহ তায়ালা কোনো হালাল বিষয়ে অনুমোদন দিয়েছেন অথবা সৌন্দর্য গ্রহণের অনুমতি দিয়েছেন তারা সেগুলোকে বর্জন করবে বা ছেড়ে দেবে। এই সৌন্দর্য ত্যাগ করা কিন্তু খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় না।

আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা কোরআনে কারিমের মধ্যে বলেছেন, ‘আপনি বলুন কে সে যে হারাম ঘোষণা করতে পারে আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের অনুমোদিত সৌন্দর্যকে।’ যেই সৌন্দর্য আল্লাহ তায়ালা অনুমোদন দিয়েছেন সেটি উপেক্ষা করা কিন্তু ইসলামের নির্দেশনার সঙ্গে একটু সাংঘর্ষিক।

অলংকার যদি অন্যদের প্রদর্শনের জন্য পরে বাইরে বের হন তাহলে সেই কাজটি হারাম। মহিলাদের মাঝে বা পরিবারের অন্যদের উপস্থিতিতে আপনি অলংকার ব্যবহার করে যদি সৌন্দর্যের বহিঃপ্রকাশ করেন- এটি আল্লাহ তায়ালার নেয়ামতের প্রকাশ হিসেবে গণ্য হবে।

অপরদিকে, নেসাব পরিমাণ সম্পদ যদি কেউ গচ্ছিত রাখে, তাহলে তাকে জাকাত দিতে হবে। কিন্তু যদি তা ব্যবহার করেন তাহলে আর জাকাত আসবে না। যেহেতু তিনি ব্যবহার করছেন না গচ্ছিত রেখে দিয়েছেন, সেক্ষেত্রে অবশ্যই তাকে জাকাত দিতে হবে। এক বছরও যদি গচ্ছিত রাখেন তাহলেও এই স্বার্ণের ওপর জাকাত আসবে।