আপনার জিজ্ঞাসা
বাবা মেয়েকে জাকাত দিতে পারবে?
নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। শরীফ বায়জীদ মাহমুদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দর্শকের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম ড. মুহাম্মদ মতিউল ইসলাম।
বিশেষ আপনার জিজ্ঞাসার ২৬তম পর্বে বাবা মেয়েকে জাকাত দিতে পারবে কি না, সে সম্পর্কে আবুধাবি থেকে টেলিফোনে জানতে চেয়েছেন একজন দর্শক। অনুলিখন করেছেন জহুরা সুলতানা।
প্রশ্ন : মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি। কিন্তু তার সংসারের আর্থিক অবস্থা খারাপ হয়ে যাওয়ায় আমি মেয়েকে সাহায্য করছি। কিন্তু তাতেও অবস্থার তেমন উন্নতি হচ্ছে না। এ ক্ষেত্রে বাবা কি মেয়েকে জাকাত দিতে পারবে?
উত্তর : যেহেতু আপনি মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন, আপনার যতটুকু ফরজ কাজ ছিল, আপনি সেটি আদায় করেছেন।
কিন্তু তারপর দেখলেন, মেয়ের সংসারের আর্থিক অবস্থা খারাপ, আপনার মেয়ে গরিব বা মিসকিন, এ অবস্থায় আপনি আপনার মেয়েকে জাকাত দিতে পারবেন।
জাকাতের যে আটটি খাত রয়েছে, তার মধ্যে প্রথম দুটিই হচ্ছে ফকির ও মিসকিন। এই খাতের আওতায় যদি পড়ে যায়, তাহলে ছেলে হোক বা মেয়ে, আপনি জাকাত দিতে পারবেন।
তবে কোনো অবস্থাতেই এর উল্টোটা করা যাবে না, অর্থাৎ সন্তানরা বাবাকে জাকাত দিতে পারবে না। কারণ বাবা-মাকে দেখাশোনা করা হচ্ছে সন্তানের জন্য ফরজ এবং সেটি সব সময়ের জন্যই ফরজ, একদম মৃত্যু পর্যন্ত। এ ক্ষেত্রে বাবা-মাকে জাকাত দেওয়া মানে হচ্ছে নিজেকেই নিজে জাকাত দেওয়া।
বাবা সন্তানদের জাকাত দিতে পারবে, এতে কোনো অসুবিধা হবে না ইনশাআল্লাহ। আপনি আপনার মেয়েকে জাকাত দিতে পারবেন।
যিনি জাকাত পাবেন, তাঁকে জানিয়ে জাকাত দেওয়া যাবে কি না এটি নিয়ে ওলামায়ে কেরামদের মধ্যে দ্বিমত আছে। একদল ইসলামিক স্কলার বলছেন, যেহেতু ফরজ কাজ আদায় হচ্ছে, কেউ যেন নফল মনে না করে, এই জন্য বলে দেওয়াটাই উত্তম।
এইভাবে বলে জাকাত দিলে কোনোভাবে কষ্ট পাওয়া যাবে না। আমাদের ইসলামিক মানসিকতার হতে হবে। যেহেতু উনি ফরজ কাজ আদায় করছেন, এটিকে নফল ভাবার সুযোগ নেই। সৌন্দর্যতার মাঝে বিষয়টি সমাধান করাই হবে উত্তম কাজ।