আপনার জিজ্ঞাসা
হজে কোরবানির পর আবার দেশে কোরবানি দিতে হবে?
নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। শরীফ বায়জীদ মাহমুদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দর্শকের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম ড. মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ।
জুমাবারের বিশেষ আপনার জিজ্ঞাসার ৫৫১তম পর্বে হজে গেলে যে ওই দেশে কোরবানি করে, সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশেও আবার কোরবানি করতে হবে কি না, সে সম্পর্কে কাফরুল থেকে টেলিফোনে জানতে চেয়েছেন হারুন উর রশিদ। অনুলিখনে ছিলেন জহুরা সুলতানা।
প্রশ্ন : হজে গেলে যিনি ওই দেশে কোরবানি করেন, সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশে কি আবার কোরবানি করতে হবে? দেশে থাকলে তাঁর ওপর কোরবানি ওয়াজিব হতো এবং কোরবানি করতেন। সে ক্ষেত্রে ওই দেশে করলে কি তাঁর ওয়াজিব আদায় হয়ে যাবে নাকি বাংলাদেশে পুনরায় কোরবানি দিতে হবে?
উত্তর : হজে যে কোরবানি করা হয়ে থাকে, সেটি কোরবানি না। এটিকে বলা হয়ে থাকে হাদি, অর্থাৎ হাদি জবাই করা হয়ে থাকে। আমাদের একটু পার্থক্য বুঝতে হবে। হজের বিধানের কারণে যেই পশু জবাই করা হয়ে থাকে, তাকে বলা হয় হাদি। হাদিটা মূলত কোরবানি নয়।
যাঁরা হজে গিয়েছেন, তাঁরা যদি হজে তামাততু বা হজে কেরান করে থাকেন, তাহলে এই ব্যক্তিদের ওপর হাদি জবাই করা বাধ্যতামূলক। তিনি হাদি জবাই করবেন। এ ক্ষেত্রে তামাততু এবং কেরানকারী ব্যক্তির পক্ষ থেকে কোরবানি করার কোনো প্রয়োজন নেই, যেহেতু একই মৌসুমে তিনি আল্লাহর নামে জবাই করে দিয়েছেন। সুতরাং তাঁর জন্য কোরবানি করা বাধ্যতামূলক নয়। এটাই বিশুদ্ধ বক্তব্য।
তবে এ ক্ষেত্রে আলেমদের একটু দ্বিমত আছে। একদল ওলামায়ে কেরাম বলেছেন, যদি তাঁর আর্থিক সামর্থ্য থাকে, তাহলে সচ্ছলতার কারণে তিনি দেশেও কোরবানি করতে পারবেন। এটা তাঁর জন্য জায়েজ রয়েছে, নাজায়েজ কিছুই নয়।
কিন্তু যেহেতু তিনি একই মৌসুমে বা একই সময়ে মানে আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের জন্য একটা জবাই করেছেন, তাই কোরবানি ভিন্ন করে করার প্রয়োজন নেই। এটাই বিশুদ্ধ বক্তব্য।
হাদি এবং কোরবানির মধ্যে মৌলিক পার্থক্য হচ্ছে হাদির বিধান আসে শুধু হাজিদের ওপর। আর কোরবানি বা জবাইটা হয়ে থাকে শুধু জিলহজ মাসের ১০, ১১, ১২ ও ১৩ এই দিনগুলোতে।
কোরবানি করবে যাঁরা হজে যায়নি তাঁরা, যাঁদের ওপর কোরবানি করার সামর্থ্য রয়েছে তাঁরা। এ ছাড়া আরো অনেক পার্থক্য রয়েছে।