আপনার জিজ্ঞাসা
পক্ষাঘাতগ্রস্ত ব্যক্তিকে নামাজের কাফফারা দিতে হবে কি?
নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। জয়নুল আবেদীন আজাদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দর্শকের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম প্রোফেসর ড. আবু বকর মুহাম্মদ জাকারিয়া।
জুমাবারের বিশেষ আপনার জিজ্ঞাসার ৫৩৫তম পর্বে প্যারালাইজড (পক্ষাঘাতগ্রস্ত) অবস্থায় নামাজ আদায় করতে না পারলে কাফফারা দিতে হবে কি না, সে সম্পর্কে জানতে চেয়ে ঢাকার মোহাম্মদপুর থেকে টেলিফোন করেছেন মো. বেলাল হোসেন। অনুলিখনে ছিলেন জহুরা সুলতানা।
প্রশ্ন : আমার শ্বশুর প্রায় তিন বছর ধরে অসুস্থ ছিলেন। তিনি স্ট্রোক করেছিলেন। তারপর বিছানাগত ছিলেন এবং শেষ পর্যায়ে পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন। এই সময় তিনি নামাজ, রোজা কিছুই আদায় করতে পারতেন না। উনি কিছুদিন আগে মারা গেছেন। আমরা জানতে পেরেছি যে, নামাজ, রোজা আদায় না করতে পারলে কাফফারা দিতে হয়। উনার জন্য এখন আমরা কী করতে পারি- এই বিষয়টি সম্পর্কে একটু বলবেন?
উত্তর : আসলে আমরা একটি ভুল করি, যখন একটি সমস্যা তৈরি হয়, তখন জিজ্ঞাসা না করে সমস্যা শেষ হয়ে যাওয়ার পর জিজ্ঞাসা করি। আপনাদের উচিত ছিল আগেই আলেমদের কাছে জিজ্ঞাসা করে নেওয়া। এটি আপনাদের দায়িত্বের মধ্যে ছিল। মনে রাখবেন যতক্ষণ হুঁশ আছে ততক্ষণ নামাজ আছে, যে অবস্থাতেই হোক—শুয়ে, বসে এমনকি চোখের ইশারায় হলেও নামাজ আদায় করতে হবে। অজু করতে না পারলে আপনি তায়াম্মুম করিয়ে দেবেন। যদি তায়াম্মুম বা পানি কোনোটাই লাগাতে না পারে, তাহলেও তাঁকে নামাজ আদায় করতে হবে। নামাজের কোনো মাফ নাই।
আপনাদের একটি বিরাট ভুল হয়ে গেছে। এই কাজগুলো তাঁকে দিয়ে করাতে পারেননি, আপনারাও গুনাহগার হয়েছেন, তাঁকেও গুনাহগার বানিয়েছেন। আমরা দোয়া করি, আল্লাহতায়ালা তাঁকে ক্ষমা করুন। কিন্তু নামাজের কোনো কাফফারা হয় না। বেশি বেশি দান সাদকা করে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন। আল্লাহ যেন তাঁকে মাফ করে দেন, এটি চান। শুধু মনে রাখবেন আপনাদের বিরাট ভুল হয়েছে এবং এই ভুলটি তিনি কবরে নিয়ে চলে গেছেন। আপনাদের মাধ্যমে দর্শকদের বলছি, নামাজ কখনো ক্ষমা করা হয় না, নামাজ পড়তেই হবে, নামাজের কাফফারা হচ্ছে নামাজ আদায় করা। যেকোনো অবস্থাই হোক না কেন নামাজ আদায় করতে হবে।
তবে হুঁশ বা জ্ঞান না থাকলে সেটি আলাদা কথা, আল্লাহতায়ালা এটি আলাদা করে দিয়েছেন। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তাঁর হুঁশ নেই, সুতরাং তাঁর ওপর থেকে আল্লাহ নামাজ উঠিয়ে নিয়েছেন।’