আপনার জিজ্ঞাসা
এশরাক ও চাশতের নামাজ আদায়ের নিয়ম কী?
নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। জয়নুল আবেদীন আজাদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দর্শকের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম ড. মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ।
জুমাবারের বিশেষ আপনার জিজ্ঞাসার ৫৩১তম পর্বে একই দিনে এশরাক ও চাশতের নামাজ আদায় করা যাবে কি না, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে গাজীপুর থেকে টেলিফোন করেছেন মমতা খাতুন। অনুলিখনে ছিলেন জহুরা সুলতানা।
প্রশ্ন : একই দিনে এশরাক ও চাশতের নামাজ আদায় করা যাবে কি? এই নামাজ কি নিয়মিত পড়তে হবে নাকি মাঝেমধ্যে পড়লেও হবে?
উত্তর : প্রথম কথা হচ্ছে, এশরাক ও চাশত দুটি একই নামাজ। সূর্য ওঠার পর একটু দেরি করে পড়লে সেটাকে চাশতের নামাজ বলবেন এবং একটু আগে পড়লে সেটাকে এশরাকের নামাজ বলবেন। অর্থাৎ সূর্য উদয়ের পরপরই যদি আপনি নফল নামাজ পড়ে থাকেন, তাহলে সেটা এশরাকের নামাজ এবং সূর্য উদয়ের কিছুটা সময় পরে যদি আপনি আদায় করেন, যখন নাশতার সময় হয়ে যায় অথবা সূর্য একটু উত্তপ্ত হয়ে যায়, তখন সেই নামাজ চাশতের নামাজ হয়ে যাবে। আবার কোনো কোনো হাদিসের মধ্যে এসেছে, রাসুল (সা.) একে আউয়াবিনের নামাজ বলেছেন। সব নামাজ একই। একই বক্তব্য, একই কথা, শুধু সময়ের পার্থক্যের কারণে নামের মধ্যে পার্থক্য হয়েছে।
আবার ওয়াক্তের কারণে দুটির ফজিলতের মধ্যেও পার্থক্য রয়েছে। ফজিলতের বিষয়েও ভিন্ন বক্তব্য রয়েছে। আবার এশরাকের নামাজ পড়লেই যথেষ্ট, আপনাকে আর চাশতের নামাজ আদায় করতে হবে না। তবে আপনি চাইলে এশরাক ও চাশত দুই নামাজ দুই ওয়াক্তে আদায় করতে পারবেন, এটি জায়েজ রয়েছে।
তার পরের মাসআলাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেটি হলো, নফল বা অন্য অতিরিক্ত ইবাদত যেগুলো আছে, সেগুলোর ক্ষেত্রে উত্তম হচ্ছে নিয়মিত আদায় করা। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে সবচেয়ে প্রিয় আমল হচ্ছে যে আমলটি নিয়মিত করা হয়ে থাকে, সেটি যদিও কম হয়।’ তাই আপনি যদি এটি নিয়মিত করেন, তাহলে আপনার এই আমলটুকু আল্লাহ সুবহানাহুতায়ালার কাছে অত্যন্ত প্রিয় আমলে পরিণত হবে। এই জন্য নফল আমল বা অতিরিক্ত আমল কম করে হলেও আমরা নিয়মিত আদায়ের চেষ্টা করব, এটি হচ্ছে রাসুলের (সা.) সুন্নাহ। আল্লাহর নবী (সা.) কোনো নফল আমল শুরু করেন, কোনো কারণবশত হলেও মৃত্যুর আগপর্যন্ত সেই আমলকে তিনি ছেড়ে দেননি, বরং নিয়মিত সেই আমল করেছেন। এতেই প্রমাণিত হয়, নবী (সা.) মূলত নফল ইবাদতের ক্ষেত্রে ধারাবাহিকতা বজায় রাখতেন, এটি সুন্নাহর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। তবে কেউ যদি কোনোভাবে এই নফল আমলটুকুর মধ্যে ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে ব্যর্থ হন, তাহলে তিনি গুনাহগার হবেন না। নফল ইবাদতের ক্ষেত্রে গুনাহর মাস’আলাই আসবে না।