দুবাইয়ে বেতন না পেয়ে ১৬৮ বাংলাদেশি শ্রমিক আটকা

Looks like you've blocked notifications!

দুবাইয়ের একটি কারখানার বাংলাদেশি শ্রমিকরা কয়েক মাস ধরে বেতন না পাওয়ায় নিয়োগকারীর বিরুদ্ধে মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তাঁরা অর্থ ও খাদ্যহীন অবস্থায় আটকা পড়া ৩০০ শ্রমিকের একটি দলে রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে অনেকের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় অবৈধ হয়ে পড়েছেন এবং কোম্পানি তা নবায়নের কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।

বাংলাদেশ কনস্যুলেটের প্রথম সচিব (শ্রম) ফকির মুহাম্মদ মনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আটকা পড়া শ্রমিকদের মধ্যে ১৬৮ জন বাংলাদেশি। আমরা তাঁদের সাথে যোগাযোগ রাখছি।’

একজন শ্রমিক খালিজ টাইমসকে জানান, তাঁদের কাছে কোনো টাকা এবং খাবার নেই। ‘আমাদের ভিসার মেয়াদ শেষ এবং পাসপোর্ট এখনো নিয়োগকারীর কাছে। আমাদের কাগজ না থাকায় অন্য জায়গায় কাজ করতে পারছি না’

দাতব্য প্রতিষ্ঠান দার আল বের সোসাইটি এক ভারতীয় প্রবাসীর কাছ থেকে পরিস্থিতি জানতে পেরে বুধবার শ্রমিকদের আবাসস্থলে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ এবং একটি চিকিৎসা শিবির স্থাপন করেছে।

মনোয়ার হোসেন জানান, এসব শ্রমিক একটি ‘খ্যাতনামা ভারতীয় নির্মাণ কোম্পানিতে’ নিয়োজিত ছিলেন। কোম্পানিটি সম্প্রতি দেউলিয়া হয়ে যাওয়ায় কিছু শ্রমিক ছয় বা আরো বেশি মাস ধরে বেতন পাননি। বেশির ভাগ শ্রমিকের বেতন ৭০০ থেকে দেড় হাজার দিরহামের (প্রায় ১৬ থেকে সাড়ে ৩৪ হাজার টাকা) মধ্যে।

নাম প্রকাশ না করা নিয়োগকারী অতিদ্রুত বকেয়া পরিশোধের অঙ্গীকার করেছে বলে খালিজ টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

মধ্যপ্রাচ্যে বাংলাদেশি শ্রমিকদের অন্যতম পছন্দের গন্তব্য সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই)। গত বছর সেখান থেকে ২ হাজার ৪২৫ দশমিক ৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বা মোট রেমিটেন্সের ১৫ দশমিক ৬ শতাংশ এসেছে।

মনোয়ার হোসেন বলেন, তাঁরা শ্রমিকদের আইনি সহায়তা ও খাদ্য দিয়েছেন। কিন্তু স্থানীয় আইনে এ সমস্যার সমাধান কিছুটা জটিল হবে। তিনি একটি বিকল্প ব্যবস্থারও কথা বলেন। যদি তারা দাবি ছেড়ে দেন তাহলে জামানতের অর্থ নিয়ে ফিরে যেতে পারবেন।’

কিন্তু বাংলাদেশি শ্রমিকরা তাকে জানিয়েছেন যে তারা আদালতে যাবেন। ‘এ প্রক্রিয়া প্রায় সাত মাস সময় নিতে পারে,’ উল্লেখ করে প্রথম সচিব বলেন, ‘মামলা করতে আগ্রহী যে কাউকে আমরা সহযোগিতা দেব এবং যারা ফিরে যেতে চান তাদের সাহায্য করব।’

মনোয়ার হোসেন বলেন, বাংলাদেশি শ্রমিকরা যে সমস্যার মুখোমুখি তা বিরল নয়। ‘নিয়মিতভাবে অনেক কোম্পানি বন্ধ হয়ে যায় এবং আমাদের শ্রমিকদের সাহায্যে যা করা যায় তা করছি।’

তবে পরিস্থিতি শ্রমিকদের জন্য নির্মম হয়ে উঠেছে। একজন সংবাদপত্রকে জানান যে তাদের খাবারের জন্য পথচারী ও পাশের দোকানের দয়ার ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। ‘খাবার ভিক্ষা চাওয়া খুব লজ্জার। আমরা সম্মানের সাথে কাজ করতে এখানে এসেছিলাম....ভিক্ষা করতে বা অবৈধ বাসিন্দা হতে নয়।’