তারকার বিচ্ছেদ
অপু বিশ্বাস কি মেনে নেবেন শাকিবের সিদ্ধান্ত?
২০০৪ সালে আমজাদ হোসেনের পরিচালনায় ‘কাল সকালে’ দিয়ে শুরু, এরপর আর ফিরে তাকাতে হয়নি অপু বিশ্বাসকে। ২০০৬ সালে পরিচালক এফ আই মানিকের ‘কোটি টাকার কাবিন’ ছবিতে প্রথমবারের মতো শাকিব খানের সাথে জুটি বাঁধা, এরপর ২০০৬ থেকে এ পর্যন্ত ৭০টিরও বেশি ছবিতে জুটি বেঁধে সফলভাবে কাজ করে গেছে এই জুটি। অন্তত এই ক্ষুদ্র পরিসরের জরিপ থেকে হলেও স্পষ্ট বোঝা যায় কতটা সফল ও জনপ্রিয় ছিল এই জুটি। সালমান শাহ-শাবনুর বা রিয়াজ-পূর্ণিমার মতো জনপ্রিয় জুটির পর জুটি হিসেবে শক্ত স্থান করে নেয় অপু-শাকিব জুটি। আর তা শুধু রঙিন পর্দাতেই সীমাবদ্ধ থাকেনি, একে অপরের ব্যক্তিজীবনেও দিব্যি আভা ছড়িয়েছেন তাঁরা।
প্রেমের গুঞ্জন থেকে শুরু করে বিয়ে নিয়ে লুকোচুরির গল্প এবং একসময় তাঁরা প্রকাশ্যে নিজেদের যুগলবন্দির স্বীকারোক্তি দিয়েছেন বহুভাবে। কিন্তু বিয়ে করেছেন বা বিয়ে সংক্রান্ত সুস্পষ্ট কোনো স্বীকারোক্তি কখনোই প্রকাশ করেননি। মাঝখানে চলচ্চিত্র জগতে অপু বিশ্বাসের একটা আচমকা বিরতি। অতঃপর গত ১০ এপ্রিল একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে লাইভ সাক্ষাৎকারে এসে হাটে হাঁড়ি ভাঙেন অপু বিশ্বাস।
শাকিব খানের সাথে তার বিয়ে, ধর্মান্তর, দীর্ঘ ৯ বছরের সংসার, সন্তান এবং তাঁদের বিয়ে নিয়ে শাকিব খানের অনেক গোপন কথা নিয়েই কথা বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন অপু বিশ্বাস। এই থেকেই প্রকাশ্যে শাকিব-অপুর মনোমালিন্য, দ্বন্দ্বের সূত্রপাত। সম্পর্ক এই জোড়া লাগে, এই ভাঙে- এভাবেই কেটে যায় ছয়-সাতটা মাস। এরই মাঝে গুঞ্জন ওঠে সদ্য চলচ্চিত্রে আসা নতুন মুখ অভিনেত্রী শবনম বুবলীর সাথে প্রেমে মজেছেন শাকিব খান আর তাদের সখ্যতাকে কেন্দ্র করেই মিডিয়ার সামনে হুট করে এসে অপু বিশ্বাসের এমন সহজ স্বীকারোক্তি। কিন্তু অপু বুদ্ধি করেই হোক বা ভালোবেসেই হোক বুবলী-শাকিবের বিষয়টি নিয়ে মিডিয়াতে সরাসরি কোনো কথা বলেননি। তিনি যে বরাবরই স্বামী-সংসারটা আকড়ে ধরে রাখতে চেয়েছেন তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু তিনি যতবারই সেই চেষ্টার প্রতিফলন ঘটিয়েছেন ঠিক ততবারই শাকিব উলটো পথে হেঁটেছেন।
শাকিব শুরু থেকেই দোষারোপ করে আসছেন অপু বিশ্বাসকে, নানা বিষয় নিয়ে! শাকিব যে সম্পর্কটি থেকে মুক্তি চাচ্ছেন ঘটনার শুরু থেকেই, তা সুস্পষ্ট। সন্তানের জন্য কখন কবে কী পরিমাণ টাকা খরচ করছেন সেটা জানিয়ে নিজেকে আদর্শ বাবা হিসেবে উপস্থাপনের চেষ্টা যতটা প্রবল ছিল, ঠিক তেমনই একজন স্বামী হিসেবে তিনি কতটা ব্যর্থ সেই কথারও প্রমাণ দিয়ে যাচ্ছিলেন।
অন্যদিকে, শাকিব পত্নীকে নিয়ে বুবলি কী মন্তব্য করছেন, তৃতীয় ব্যক্তি হিসেবে আদৌ সেটা কতখানি তাঁর অধিকারের মধ্যে পড়ে তা নিয়ে বিন্দুমাত্র ভ্রুক্ষেপ ছিল না শাকিবের। সবকিছু মিলিয়ে দৃশ্যপট অনেকটাই সুস্পষ্ট হয়ে উঠছে। ‘আসছে বছরের ফেব্রুয়ারিতে বুবলীকে বিয়ে করে ঘরে তুলছেন শাকিব’ গুজবটি সময় এলেই নিশচয়ই সত্যতা পাবে এবং তখন তালাকের পুরো বিষয়টাও আরো স্বচ্ছতা পাবে আশা করা যায়।
আপাতত মুখ্য বিষয় হলো, শাকিব বিবাহ বিচ্ছেদের কাগজ পাঠিয়েছেন অপুর কাছে। শাকিব খান এরই মধ্যে নিশ্চিত করেছেন যে, তিনি তালাকনামায় স্বাক্ষর সম্পন্ন করেই ভারতের হায়দরাবাদে তাঁর পরবর্তী ছবির শুটিংয়ের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেছেন। কিন্তু অপু বিশ্বাসের সাথে কোনোভাবে যোগাযোগ করা বা এই ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না। এমনকি তিনি বাসায় নেই এবং তালাকনামাটি তাঁর বাড়ির সদর দরজা থেকে এসে ফিরে গেছে- এমনটাও শোনা যাচ্ছে। যা থেকে আঁচ করতে একটুও বেগ পেতে হচ্ছে না যে, অপু বিশ্বাস কোনোভাবেই ডিভোর্স চাচ্ছেন না। এমনকি তিনি কিছুদিন আগের একটি সাক্ষাৎকারে সুস্পষ্ট বলেছিলেন যে, তিনি স্বামী-সংসার নিয়ে ব্যস্ত থাকতে চান।
একজন নারী হিসেবে অপু বিশ্বাস ভুলের মালা গেঁথে রেখেছিলেন একদম শুরুতেই। এখন এই কাগজ প্রাপ্তির পর অপুর প্রতিক্রিয়া আর ভাষ্য শোনার অপেক্ষায় আছেন তাঁর ভক্তরা।
লেখক : শিক্ষার্থী