বিশ্ব সুন্দরী প্রতিযোগিতা
এগিয়ে বাংলাদেশের জেসিয়া
চীনে এবার বসেছে ‘মিস ওয়ার্ল্ড’-এর ৬৭তম আসর। অংশ নিচ্ছেন ১২০টি দেশের প্রতিযোগী। বর্তমানে প্রতিযোগিতার বিভিন্ন পর্ব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। মিস ওয়ার্ল্ড প্রতিযোগিতায় প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করছেন জেসিয়া ইসলাম।
তাই মিস ওয়ার্ল্ড-২০১৭ বাংলাদেশের জন্য একটু বেশিই গুরুত্ব বহন করছে। কিন্তু আমরা অনেকেই হয়তো জানি না, প্রথমবারের মতো মিস ওয়ার্ল্ড-২০১৭-এ অংশ নিয়েই বাজিমাত করেছে বাংলাদেশ। চলছে ‘হেড টু হেড’ প্রতিযোগিতা। কিন্তু কে হচ্ছে ২০১৭ সালের মিস ওয়ার্ল্ড, এই প্রশ্নের উত্তর মেলবে ১৮ নভেম্বর।
শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি যে, অনলাইন ভোটে বর্তমানে ভালো অবস্থানে রয়েছেন জেসিয়া। বিশ্ব সুন্দরীর এই প্রতিযোগিতায় এরই মধ্যে ১৫.১৫ শতাংশ ভোট পেয়ে নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করেছেন তিনি। ১৯.৮৮ শতাংশ ভোট নিয়ে শীর্ষে রয়েছেন নেপালের প্রতিযোগী নিকিতা চন্দ্রক। ভোটের শীর্ষ তিনজনের অন্যজন হলেন মঙ্গোলিয়ার এনখজিন। বর্তমানে তাঁর প্রাপ্ত ভোট ১১.১৬ শতাংশ। এ ছাড়া ৫.৯ শতাংশ ভোট পেয়ে চতুর্থ দেশ ভেনেজুয়েলা (৫.৯) ও পঞ্চম স্থানে আছে ব্রাজিল (৪.৮৮)। এই ভোটিং পদ্ধতির ফল মিস ওয়ার্ল্ড কর্তৃপক্ষ তাদের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে নিয়মিত প্রকাশ করছে।
‘দ্য গ্রেট প্যাগেন্ট কমিউনিটি ডট কম’ নামক একটি অনলাইন সংস্থা গণভোটের মাধমে এই জরিপ চালাচ্ছে। সম্প্রতি এ অনলাইন সংস্থাটি নিজেদের ওয়েবসাইটে লিখেছে, ‘মিস ওয়ার্ল্ড-২০১৭’তে কোন দেশের সুন্দরী বিজয়ী হওয়া উচিত? সঙ্গে সঙ্গেই সেই সাইটে ব্যাপক পরিমাণ ভোট পড়া শুরু হয় এবং দর্শকদের এ অনলাইন ভোটে শীর্ষস্থানে চলে আসে বাংলাদেশের জেসিয়া ইসলামের নাম। এই ওয়েবসাইটে বিশ্বের যেকোনো প্রান্ত থেকে যে কেউ অংশ নিয়ে নিজের পছন্দের সুন্দরীকে ভোট দিতে পারছেন। এই গণভোটে অংশগ্রহণ করতে পারবেন যে কেউ। চাইলে একজন ব্যক্তি একাধিক ভোট দিতে পারবে। এমনকি ভোট দেওয়া যাবে যত খুশি তত।
মূল প্রতিযোগিতা শুরুর আগেই অনলাইনে ভোটে জেসিয়ার এ শীর্ষস্থান অর্জনকে বিরাট সাফল্য হিসেবে দেখছেন অনেকেই। ‘মিস ওয়ার্ল্ড-২০১৭-এর চূড়ান্ত পর্বে ফল যা-ই আসুক না কেন, অনলাইন ভোটে জেসিয়ার এ এগিয়ে থাকাতে এই প্রতিযোগিতার অনুসারী বাংলাদেশের সবাই এখন খুবেই উচ্ছ্বসিত।
ভাবতে পারেন, কীভাবে আপনি ভোট দেবেন জেসিয়াকে? জেসিয়াকে ভোট দিতে চাইলে প্রথমেই আপনাকে যেতে হবে ‘মিস ওয়ার্ল্ড’-এর ওয়েবসাইটে www.missworld.com। ভোট দেওয়ার জন্য প্রথমে এই ওয়েবসাইটে নিবন্ধন করতে হবে। নিবন্ধনের জন্য ওয়েবসাইটের স্ক্রিনের ডান দিকের log in আইকনে ক্লিক করতে হবে। sign up অপশনে ক্লিক করে নিজের নাম, ই-মেইল ঠিকানা ও পাসওয়ার্ড দিয়ে নিবন্ধন করতে হবে। আর আগে থেকেই নিবন্ধন করা থাকলে sign in অপশনে গিয়ে শুধু নিবন্ধিত নাম ও ই-মেইল ঠিকানা দিয়েই ভোট করতে পারবেন।
নিবন্ধনের পর ওয়েবসাইটের vote অপশনে গিয়ে জেসিয়ার পেজে ঢুকতে হবে। পেজের নিচে বাঁ দিকে vote for সব লেখা অপশনে ক্লিক করলেই জেসিয়া পাবেন একটি ভোট।
‘হেড টু হেড চ্যালেঞ্জ’ পর্বের জন্য বাংলাদেশসহ ১২০ দেশের প্রতিযোগীকে ভাগ করা হয়েছে ২০টি দলে। প্রতি গ্রুপে আছেন ছয়জন। এর মধ্যে ছয় নম্বর গ্রুপে আছেন জেসিয়া। এই গ্রুপে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিল, দক্ষিণ আফ্রিকা, কানাডা, ইথিওপিয়া ও বতসোয়ানার সুন্দরীরা। কোন দেশের সুন্দরীরা কোন গ্রুপে থাকবেন, ড্রয়ের মাধ্যমে তা নির্ধারিত হয়েছে। গত ৩১ অক্টোবর ওভারসিস চায়নিজ টাউন ইস্ট শেনজেনে ‘হেড টু হেড চ্যালেঞ্জ’-এর ড্র অনুষ্ঠিত হয়। এবারই প্রথম বিশ্বসুন্দরী প্রতিযোগিতায় যুক্ত হয়েছে এই বিভাগ।
ভোটের আয়োজনকারী সাইটটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পছন্দের প্রতিযোগীকে ১৭ নভেম্বর পর্যন্ত ভোট দেওয়া যাবে। এ রাউন্ডের ফল থেকেই চূড়ান্ত হবে শীর্ষ ৪০ প্রতিযোগী। তাদের বলা হবে ‘ফাইনাল ফোরটি’। আর বিজয়ীর জন্য থাকবে বিশেষ উপহার।
‘মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ’ জেসিয়া ইসলামের জন্ম ও বেড়ে ওঠা পুরান ঢাকায়। তার বাবার নাম মনিরুল ইসলাম, পেশায় ব্যবসায়ী। মা রাজিয়া সুলতানা গৃহিণী। ১৮ বছর বয়সী জেসিয়ার উচ্চতা ৫ ফুট ৮ ইঞ্চি। জেসিয়া লেখাপড়া করেছেন সাউথপয়েন্ট একাডেমিতে। সেখান থেকে ও-লেভেল সম্পন্ন করে রাজধানীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিষয়ে পড়ছেন।
‘মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ’-এ অংশগ্রহণের আগেও গ্ল্যামার ওয়ার্ল্ডে নিজের উপস্থিতি জানান দিয়েছিলেন জেসিয়া। ফ্যাশন হাউস এক্সটেসির মডেল হিসেবে কাজ করেছেন।
লেখক : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও প্রতিনিধি, বাংলাদেশ প্রতিদিন।