গ্যাং কালচার
নিহত কিশোর আদনানকে কি ভুলে যাব?
উত্তরায় কিশোরদের গ্যাং হঠাৎ করেই সবার নজরে আসে। নজরে আসার কারণ দুই গ্যাংয়ের সংঘাতে একজনের মৃত্যু। নিহত কিশোরের নাম আদনান কবির। এক সময় আলোচনার শীর্ষে থাকা ঘটনাটি আর দশটি ঘটনার মতোই ধীরে ধীরে চাপা পড়ে যাচ্ছে নতুন ঘটনার আড়ালে। তবে এখনো ধরা ছোঁয়ার বাইরে প্রধান আসামি নাইমুর রহমান অনিক ওরফে ডিসকো অনিক। শুধু অনিক নয় আরো চার আসামির হদিস পায়নি পুলিশ। পুলিশের বক্তব্যও এখানে আর দশটি ঘটনার মতো একই ‘নিয়মিত গোয়েন্দা তৎপরতার পাশাপাশি সম্ভাব্য স্থানে অভিযান চালানো হচ্ছে।’
গত ৬ জানুয়ারি সন্ধ্যায় উত্তরার ১৩ নম্বর সেক্টরের ১৭ নম্বর রোডে ট্রাস্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র আদনান কবিরকে কুপিয়ে হত্যা করে তার প্রতিপক্ষ গ্যাংয়ের কিশোররা।
দিন যত গড়াচ্ছে, পাশ্চাত্য সংস্কৃতি আমাদের মধ্যে ঢুকে পড়ছে। পাশ্চাত্য সংস্কৃতি আর দেশি সংস্কৃতির মিশেলে গড়ে ওঠা সংস্কৃতিতে রয়েছে কিছু অন্ধকারময় দিক। কিশোর গ্যাং মূলত তারই অংশ। কখনো মারামারি কিংবা কখনো বাইক নিয়ে শোডাউন, আবার কখনো দেয়ালে গ্রাফিতি করে নিজেদের আধিপত্য জানান দেয় এই গ্যাংগুলো।
শুধু উত্তরা কিংবা ঢাকা নয়, পুরো বাংলাদেশের শহরে কিংবা মফস্বলেও গড়ে উঠেছে এমন গ্যাং। আজ উত্তরার আদনান খুন হয়েছে, কাল হয়তো চিটাগংয়ের আদনান! আমাদের সবার চোখের সামনেই গড়ে উঠছে গ্যাংগুলো। হয়তো কেউ আমরা খেয়াল করছি না, আবার কেউ খেয়াল করেও না দেখার ভান করছি। দেয়ালে গ্রাফিতি করছে, করুক! মারামারি করছে, করুক! উঠতি বয়সে একটু-আধটু করে থাকে, এমন ভেবেই অনেকে উড়িয়ে দিচ্ছেন বিষয়গুলো। কিন্তু এটুকু প্রশ্রয় দেওয়ার কারণে এই কিশোররা যে কতটা ভয়ংকর হয়ে উঠছে, তা আপনার কল্পনার বাইরে। আজই আপনার ঘরের সন্তানের খবর নিন। সে কী করছে, কোথায় যাচ্ছে, কাদের সঙ্গে মিশছে। এর পরের আদনান যেন আপনার ঘরের কেউ না হয়!
লেখক: শিক্ষার্থী, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।