ভালো থাকুন ভালোবেসে
পৃথিবীটা নাকি ছোট হতে হতে হাতের মুঠোয় এসে গেছে। আমার কাছে বরং উল্টো মনে হয়। মনে হয় মানুষগুলো বড্ড বেশি ছোট হয়ে গেছে। উচ্চতায় নয়। মননশীলতায়। আচ্ছা আপনিই বলুন না একেবারে অকারণে যদি কেও আপনার পেছনে লেগে থাকে তাকে কি ‘ছোটলোক’ বলেন না আপনি। চোখ বন্ধ করে দেখুন ঠিক পেয়ে যাবেন কে এখন সবচেয়ে বেশি লেগে আছে আপনার পেছনে এবং তার জন্য কি আপনার মুখ থেকে এই কথাটাই বের হয় না ‘ছোটলোক’!
গায়ে গায়ে লেগে থাপ্পর মারলেই কি আঘাত করা হয়? বলুন হয়? না কি এখন এই বিংশ শতাব্দিতে এসে তা করা যায়? আঘাতের ধরন এখন পাল্টে গেছে । আঘাত এখন শারীরিক নয়। মানসিক।
আপনাকে যে পেইনটা দিচ্ছে সে ওই মানসিকই। আপনার সম্পর্কে না জেনেই বলে চলছে নানা কথা। আপনাকে কোনো এক কালে দেখেছে কি শুনেছে অমনি নিজের দখলে নিয়ে নিছে। বলে বেড়াচ্ছে আপনি এই না সেই। সেই না এই। আপনার কত গোপন কথাও তারা জানে যা আপনি নিজেই জানেন না। যেমন এই আপনিই আমার কথা বলে বেড়াচ্ছেন অমন করেই। আচ্ছা বলুন তো, সত্যি কী আপনি আমাকে চেনেন? জানেন?
যদি প্রশ্ন করি আপনাকে
আচ্ছা আপনি কি আমাকে চেনেন?
হ্যা।
কতটুকু?
এই তো যতটা চেনা যায়?
কতটা চেনা যায়?
মানে!
মানে আমি কি করি? খাই? পরি? কার সসঙ্গে মিশি। কী আমার অভ্যাস! অভিরুচি জানেন?
না তা কি জানা যায়।
তাহলে বললেন যে চিনি?
এত গভীরে নয় তবে চিনি।
কী চেনেন বলবেন?
না দেখেছি তো আপনাকে।
একদিন দুইদিন দেখেই চিনে ফেললেন?
না তা চেনা যায় না।
তাহলে আমার সম্পর্কে কথা বলেন কেন?
খারাপ কিছু তো বলি না।
আপনার আর আমার কথোপকথন যদি এই রকম হয় তবে আপনাকেই বলছি
নিজের খেয়ে পরের বলে বেড়াচ্ছেন? থামেন।
আচ্ছা সেদিন আড্ডায় কোনো কিছু না ভেবেই আপনি যে আমার কথা বলে দিলেন আমি এই না সেই, সেই না হেই। কেন?
কেন এমন করেন? নিজেকে জাহির করতে? নাকি হীনম্মন্যতায়? ভেবেছেন কখনো আপনার সমস্যা কোথায়?
একটু আগে আপনি যে আপনার বন্ধুর বন্ধুকে নিয়ে বলে এলেন, আরে ও কেমনে এত সফল আমি জানি। কোনখানে কোনপথে চলে জানা আছে। নিজের যোগ্যতায় তো আর ওঠেনি। বাঁকা পথে। মনে আর মুখে এত বৈপরীত কেন আপনি?
আচ্ছা বলুন তো, আপনি যখন সবই জানেন তখন সে পথে কেন হাঁটেন না? কারণ হলো আপনি যোগ্য নন। দক্ষ নন। বাংলায় প্রবাদ আছে যত বড় মুখ নয় তত বড় কথা। ওটা আপনার জন্যই বুঝলেন। নইলে নিজে যা পারেন না, তা নিয়ে কথা বলেন কেন?
বলি কি শুধু শুধু অন্যের পিছু না চলে নিজের দিকে তাকান। স্রেফ কথার কথা বলার জন্য নিজেকে আর সবজান্তা করবেন না। যা আপনি নন তা ছোট করে দেখবেন না। তাতে আপনিই কেবল ছোট হন।
অন্য কে নিয়ে মাতামাতি বন্ধ করেন। নিজেকে ভালোবাসেন। নিজের দিকে তাকান। মানুষ হোন। মানুষ হয়েও যদি কুকুর বিড়ালের জীবন কাটাতে হয় তবে ভীষণ বেদনার। সব পরচর্চা বন্ধ করুন। নিজের কাছে, মনের কাছে মাথা উঁচু করে বাঁচুন। জানেন তো, প্রশিক্ষণ দিলে পশু পাখি আজকাল দু পায়ে চলতে পারে। আপনার আমার মতোই। তাই গৌরব করে চলুন। নিজের স্বকীয়তা জানান দিন। ভালো থাকুন। ভালোবেসে।