জ্যোতিষের দৃষ্টিতে
আসছে বছরে কেমন থাকবে বাংলাদেশ?
বছরের শুরুতে অপ্রত্যাশিত ঘটনাবলির কারকগ্রহ ইউরেনাস অগ্নিরাশি মেষে অবস্থান করছে। রাহু ও কেতু যথাক্রমে জলজ রাশি কর্কটে ও মৃত্তিকারাশি মকরে থাকবে। চন্দ্র ও শুক্র রয়েছে বায়ু রাশি তুলায়। বুধ ও বৃহস্পতি রয়েছে জলজ রাশি বৃশ্চিকে। প্লুটো, শনি ও রবি আছে অগ্নিরাশি ধনুতে। নেপচুন বায়ু রাশি কুম্ভে এবং মঙ্গল রয়েছে জলজ রাশি মীনে।
উপরোক্ত গ্রহাবস্থানের ফলে বছরটি বাংলাদেশের জন্য সামগ্রিকভাবে শুভাশুভ মিশ্র সম্ভাবনাময়। মেষ রাশিতে ইউরেনাসের অবস্থানের জন্য অগ্নিকাণ্ড ও যানবাহন দুর্ঘটনায় জানমালের প্রচুর ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। প্রাকৃতিক প্রতিকূলতা সত্ত্বেও খাদ্যোৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। দেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড জোরদার হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় বহাল থাকবে। ফলে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাও বজায় থাকবে। মন্ত্রিমণ্ডলে কিছুটা রদবলের সম্ভাবনা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর শরীর-স্বাস্থ্য ভালো থাকতে পারে।
প্রধান বিরোধী দল বিএনপির জন্য ২০১৯ সাল খুব একটা শুভ ফলদায়ক নাও হতে পারে। বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার শরীর-স্বাস্থ্য তেমন একটা ভালো যাবে না। আসন্ন নির্বাচনে কাঙ্ক্ষিত ফল লাভের তেমন একটা সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। দলটির দ্বিতীয় প্রধান নেতা তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। তবে সরকারের সঙ্গে কোনো ধরেনের গোপন সমঝোতার সম্ভাবনা একেবারে নাকচ করে দেওয়া যায় না। প্রথম সারির একাধিক নেতার দলবদলের সম্ভাবনা রয়েছে। দলটির বর্তমান প্রধান মুখপাত্র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর একাধিকবার অসুস্থ হতে পারেন। তাঁর শরীর-স্বাস্থ্য সম্পর্কে সতর্কতা অবলম্বন করলে ভালো করবেন।
সরকারের উদার ও প্রগতিশীল নীতির ফলে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে প্রশংসিত হবে। প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় থাকবে। রপ্তানি বাণিজ্য বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। চীন, রাশিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পরাশক্তিগুলোর সঙ্গেও সম্পর্ক ভালো থাকবে। এ বছর দুই বা ততোধিক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, চার বা ততোধিক বরেণ্য সাংবাদিক, সাহিত্যিক ও বুদ্ধিজীবীর জীবনাবসান ঘটতে পারে।
অভ্যন্তরীণ রাজনীতি
সামগ্রিকভাবে দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। সরকারবিরোধীদের নানাবিক অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্রমূলক তৎপরতা সত্ত্বেও রাজনৈতিক পরিবেশ তেমন একটা উত্তপ্ত হওয়ার আশঙ্কা নেই। সরকারের চলমান উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর বেশির ভাগই সাফল্যজনকভাবে পরিসমাপ্ত হবে। নির্মাণাধীন পায়রা সমুদ্রবন্দর, পদ্মা সেতু ও মেট্রোরেল প্রকল্প অন্যান্য মেগাপ্রকল্পের পরিসমাপ্তি বা উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির সম্ভাবনা আছে। সে ক্ষেত্রে সামগ্রিক যোগাযোগ ব্যবস্থায় ব্যাপক উন্নতি সাধিত হতে পারে। নির্বাচনোত্তর নবগঠিত মন্ত্রিসভায় বেশ কিছু নতুন মুখ দেখা যেতে পারে।
পররাষ্ট্রনীতি
কূটনৈতিক ক্ষেত্রে সরকারের দূরদর্শিতা ও প্রগতিশীল দৃষ্টিভঙ্গির জন্য পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য সাফল্যের সম্ভাবনা আছে। মধ্যপ্রাচ্যসহ মুসলিমপ্রধান দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় থাকবে। বিশেষত, ভারত নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো থাকবে। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ইস্যুতে মিয়ানমারের সঙ্গে ফলপ্রসূ কোনো আলোচনার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীন, রাশিয়াসহ পরাশক্তিগুলোর সঙ্গেও সুসম্পর্ক বিদ্যমান থাকবে।
অর্থনীতি
সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এ বছর ভালো থাকবে। প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স ও বাণিজ্য বৃদ্ধির ফলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ তুলনামূলক বৃদ্ধির সম্ভাবনা আছে। কৃষিজ উৎপাদন বৃদ্ধির যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে খাদ্য ঘাটতির তেমন কোনো আশঙ্কা নেই বললেই চলে। মানুষের গড় আয় বৃদ্ধি পাবে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি অব্যাহত থাকবে। শেয়ারবাজারের পরিস্থিতি তুলনামূলকভাবে বছরের দ্বিতীয়ার্ধে ভালো যাবে আশা করা যায়। তবে এ ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীদের সতর্ক থাকতে হবে। গত বছরের তুলনায় এ বছর জনশক্তি রপ্তানি বৃদ্ধির সম্ভাবনা আছে।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি
সামগ্রিকভাবে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো যাবে। তবে তারুণ্যের অবক্ষয়জনিত কারণে কিশোর ও যুবকদের ভেতর অপরাধপ্রবণতা বৃদ্ধি পেতে পারে। প্রজাতন্ত্রের কোনো গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তা-কর্মচারী বা রাজনৈতিক ব্যক্তিদের দুর্নীতি-দুষ্কর্মের চাঞ্চল্যকর তথ্য ফাঁস হয়ে যেতে পারে। মৌলবাদী নৈরাজ্যসৃষ্টিকারী জঙ্গিদের গোপন ও প্রকাশ্য ধ্বংসাত্মক তৎপরতা বৃদ্ধি পেতে পারে। বছরের শুরু থেকে সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।
প্রাকৃতিক দিক
প্রকৃতি এ বছর নানাবিধ রহস্যময় আচারণ করতে পারে। ঝড়, জলোচ্ছ্বাস, বন্যা প্রভৃতি অনভিপ্রেত প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে জনজীবন একাধিকবার বিপর্যস্ত হতে পারে। ছোট ও মাঝারি ধরনের ভূমিকম্পের আশঙ্কা একেবারেই উড়িয়ে দেওয়া যায় না। তবে প্রকৃতির প্রতিকূলতা সত্ত্বেও খাদ্যোৎপাদন বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা যায়।