পাই হয়তো আমাদের দেশে এখনো অতটা জনপ্রিয় হয়ে ওঠেনি; কিন্তু পাশ্চাত্যে এটা নিত্যদিনের খাবার। পাইয়ের দুটি অংশ থাকে। বাইরে থাকে পাই ক্রাস্ট, যা সব পাইতেই মোটামুটি একইভাবে তৈরি করা হয়। আর ভেতরে থাকে পাই ফিলিং, যা সবাই ইচ্ছামতো তৈরি করতে পারে। তবে কিছু প্রচলিত পাই রয়েছে, যেমন : বিফ পাই, পাম্পকিন পাই ইত্যাদি। আজকে এখানে ফিশ পাইয়ের একটা রেসিপি দেওয়া হলো। আর এর সঙ্গে যোগ করা হয়েছে মাশরুম।

উপকরণ

১. পাই ক্রাস্টের জন্য

•              এক কাপ গমের আটা (রিফাইন্ড করা ও ফাইবার ছাড়া)

•              ১/২ চা চামচ লবণ

•              এক টেবিল চামচ চিনি

•              ১/৪ কাপ মাখন

•              এক টেবিল চামচ মিল্ক ক্রিম

•              বরফ পানি কয়েক টেবিল চামচ

২. ফিলিংয়ের জন্য

•              মাশরুম কুচি সাত-আটটি

•              পেঁয়াজ কুচি এক কাপ

•              কাঁচামরিচ কুচি তিনটি

•              টুনা মাছ এক ক্যান বা এক কাপ টুকরা করা

•              পার্সলি এক চা চামচ

•              লবণ পরিমাণমতো

•              হলুদ ১/২ চা চামচ

•              গোলমরিচ গুঁড়া এক চা চামচ

•              রসুন দুই চা চামচ

•              এলাচ গুঁড়া ১/২ চা চামচ

•              মিল্ক ক্রিম ১/৪ কাপ

•              দুধ এক কাপ

•              অলিভ অয়েল, ভাজার জন্য পরিমাণমতো

প্রস্তুত প্রণালি

১. ফিলিং তৈরি

প্রথমে কড়াইয়ে তেল দিয়ে দুই চা চামচ রসুন বাদামি রং করে তাতিয়ে তাতে মাশরুম ও ক্যান থেকে বের করা টুনা মাছ ছেড়ে দিতে হবে (টুনা মাছের পরিবর্তে অন্য কোনো তেলবিহীন বড় মাছ ব্যবহার করা যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে লবণ পানিতে মাছ সিদ্ধ করে ছোট ছোট টুকরা করে নিতে হবে)। একটু ভাজা ভাজা হয়ে এলে পেঁয়াজ দিতে হবে। তারপর স্বাদমতো লবণ, হলুদ, কাঁচামরিচ, গোলমরিচ, এলাচ গুঁড়া ও পার্সলি পাতার গুঁড়া দিতে হবে (ফ্রেস পার্সলি পাতা দিলে আরো ভালো হবে)। ক্রিম দিয়ে নাড়তে হবে। ভালোভাবে মিশে গেলে দুধ দিতে হবে। জ্বাল দিয়ে দুধ কমে এলে একটু মাখা মাখা থাকতে নামাতে হবে (বেশি শুকানো যাবে না, কেননা পরে এটা ওভেনে আরো বেক্ড হবে।)

২. ক্রাস্ট ও পাই তৈরি

ক্রাস্ট তৈরির জন্য প্রথমে একটি বাটিতে আটা নিতে হবে। ফ্রিজে জমানো মাখন কিউব করে ছোট টুকরা করে কাটতে হবে। তারপর আটার সঙ্গে মেশাতে হবে। চিনি, লবণ ও ক্রিম (ক্রিমও ঠান্ডা থাকবে) দিয়ে আবার মেশাতে হবে। এবার এক চামচ করে বরফপানি আটার সঙ্গে মেশাতে হবে এবং ডো বা মণ্ড তৈরি করতে হবে। সাবধানে মাখাতে হবে, যেন হাতের তাপে মাখন গলে না যায়। ডো ঠান্ডা থাকতে থাকতেই ফ্রিজে রেখে দিতে হবে রেস্টিংয়ের জন্য। আধা ঘণ্টা পরে ডো বের করে চার ভাগ করে নিতে হবে। অর্থাৎ একেকটি পাইয়ের জন্য দুই ভাগ। এবার একটি পাই ট্রে বা সিরামিক বাটি নিয়ে তাতে মাখন বা তেল লাগিয়ে নিতে হবে যেন পাই লেগে না যায়। এবার পাইয়ের একটি অংশ গোল করে বেলে পাইয়ের বাটির নিচে চেপে চেপে লাগাতে হবে। অপর বাটিতে একইভাবে পাইয়ের ডো লাগাতে এবে। এবার বাটি দুটি  ২০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা ৪০০ ডিগ্রি ফারেনহাইটে প্রিহিট করা ওভেনে দিয়ে ১৫ মিনিট বেক করতে হবে। নিচের ক্রাস্ট টা হয়ে এলে ওভেন থেকে বের করে একটু ঠান্ডা করতে হবে। পাইয়ের বাটিগুলো পুরোটা পাই ফিলিং দিয়ে ভরতে হবে এমনভাবে যেন ওপরে কিছুদূর পর্যন্ত ফিলিং পূর্ণ হয়ে থাকে। অর্থাৎ যেন গম্বুজ আকার ধারণ করে। এবার আরেকটি পাইয়ের অংশ একইভাবে বেলে ফিলিংয়ের ওপরে ছড়িয়ে দিয়ে ধার দিয়ে পাইয়ের নিচের অংশের সঙ্গে চাপ দিয়ে লাগাতে হবে। এবার পাইয়ের ওপরে বাষ্প বের হওয়ার জন্য চাকু দিয়ে একটু কেটে দিতে হবে। চাইলে পছন্দের ডিজাইনও করতে পারেন। একটি ডিম ভেঙে ফেটে নিয়ে পেস্ট্রি ব্রাশ দিয়ে এগওয়াশ দিতে হবে। এবার ওভেনে আগের তাপমাত্রায় ২০ থেকে ২৫ মিনিট বেক করতে হবে। ব্যস, তৈরি হয়ে গেল মজাদার ফিশ মাশরুম পাই।