২০১৮
বাংলাদেশের কেমন যাবে
২০১৮ বাংলাদেশের জন্য মোটামুটিভাবে শুভ সম্ভাবনাময়। খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। সামগ্রিক অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো যেতে পারে। বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশিদের প্রেরিত রেমিট্যান্স বৃদ্ধির ফলে সামগ্রিক অর্থনৈতিক অগ্রগতি অব্যাহত থাকবে। এ বছর জনশক্তি রফতানি আরো বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ-দুর্বিপাক, বিশেষ করে ঝড়, জলোচ্ছ্বাস, বন্যা প্রভৃতিজনিত কারণে খাদ্যোৎপাদন কিছুটা ব্যাহত হলেও সামগ্রিকভাবে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হবে। ফলে খাদ্য আমদানি হ্রাস পাওয়ার আশঙ্কা আছে। দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি মোটামুটি স্থিতিশীল থাকবে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অক্ষুণ্ণ থাকবে বলে আশা করা যায়। অপশক্তিগুলো সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি নষ্টের অপতৎপরতা চালাতে পারে। তবে সে ক্ষেত্রে তাদের সাফল্যের সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। অগ্নিরাশি মেষে ইউরেনাস অবস্থান করার ফলে দেশে এ বছর অগ্নিকাণ্ডে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কিছুটা বৃদ্ধি পেতে পারে। অপ্রত্যাশিত প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও দুর্ঘটনাজনিত কারণে হতাহতের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে পারে। বায়ুরাশি কুম্ভে রহস্যজনক গ্রহণ নেপচুন অবস্থান করছে। ফলে প্রকৃতি সারা বছরই রহস্যজনক আচরণ করতে পারে। ছোট বা মাঝারি ধরনের ভূমিকম্পের আশঙ্কা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শরীর-স্বাস্থ্য মোটামুটি ভালো যাবে। মন্ত্রীমণ্ডলে সামান্য রদবদলের সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা মোটামুটি স্থিতিশীল থাকবে। আগামী নির্বাচন সামনে রেখে সরকারবিরোধী আন্দোলন ও তৎপরতা বৃদ্ধির চেষ্টা করলেও সে ক্ষেত্রে সাফল্যের সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। সংসদীয় বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদের শরীর স্বাস্থ্য মোটামুটি ভালো থাকবে। তবে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এবং সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বার্ধক্যজনিত কারণে বিবিধ ধরনের শারীরিক সমস্যায় ভুগতে পারেন। ২০১৮ সালে তিন বা ততোধিক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের জীবনাবসান হতে পারে। দেশ এ বছর শিক্ষা, শিল্প, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের তথা পাঁচ বা ততোধিক বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বকে হারাতে পারে।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি অব্যাহত থাকবে। ফলে জনজীবনে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হতে পারে। কতিপয় রাজনীতিবিদ ও বিশিষ্ট আমলার চাঞ্চল্যকর কোনো দুর্নীতি-দুষ্কর্মের তথ্য ফাঁস হয়ে যেতে পারে। আগামী বছরের জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনীতির মাঠ উত্তপ্ত থাকবে এবং সংঘাত সহিংসতা বৃদ্ধি পেতে পারে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্ব ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হওয়ার সম্ভাবনা আছে। প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক বিদ্যমান থাকলেও রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি ঘটতে পারে। মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপ থাকা সত্ত্বেও রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তনের বিষয়ে খুব একটা অগ্রগতির সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
দেশের সামগ্রিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থতি মোটামুটি ভালো যাবে। তবে সন্ত্রাসবাদী জঙ্গি তৎপরতা, রাজনৈতিক সহিংসতা, শাসকদলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের ফলে ছাত্র ও যুবসমাজের ভেতরে সন্ত্রাস সহিংসতার মাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে। হত্যা, গুম, খুন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তথাকথিত ক্রসফায়ার চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই প্রভৃতি অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড তুলনামূলকভাবে বৃদ্ধি পেতে পারে। যানবাহন দুর্ঘটনার পরিমাণ আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পেতে পারে। আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সাম্প্রদায়িক মৌলবাদী গোষ্ঠী ঐক্যবদ্ধ হওয়ার চেষ্টা করবে এবং সন্ত্রাস-সহিংসতা নৈরাজ্যিক পরিবেশ সৃষ্টি করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের প্রয়াস পেতে পারে। নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও দেশের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডগুলো অব্যাহত থাকবে বলে আশা করা যায়।